৬ষ্ঠ টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৩ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৮ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর

আগামী ১৮ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ৬ষ্ঠ টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৩ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চার দিনব্যাপী এই চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হবে স্ক্যারবরোর ২২ লেভেবিক এভিনিউ’র সিনেপ্লেক্স ওডেন এবং ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র মাল্টিকালচারাল ফিল্ম স্ক্রীনিং সেন্টারে। এবারের উৎসবে ২৪টি দেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মোট ৫২টি পূর্ণ দৈর্ঘ্য ও স্বল্প দৈর্ঘ্য কাহিনি চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। গত ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার  ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউতে অবস্থিত মাল্টিকালচারাল ফিল্ম স্ক্রিনিং সেন্টারে টরন্টো ফিল্ম ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও ৬ষ্ঠ টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৩ এর সমন্বয়ক মনিস রফিক। তিনি জানান,  ২০১৭ সাল থেকে টরন্টো ফিল্ম ফোরাম ‘টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ এর আয়োজন করে আসছে। এই আয়োজনের অন্যতম মূল লক্ষ্য হচ্ছে, বিভিন্ন ভাষা এবং সংস্কৃতির স্বাধীন ও বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী। টরন্টোর ফিল্ম ফোরামের সদস্যরা মনে করে, বর্তমান বিশ্বে চলচ্চিত্র অন্যতম প্রধান এক শক্তিশালী মাধ্যম। এর মাধ্যমে আমাদের এই সমাজকে যথোপযুক্তভাবে তুলে ধরা সম্ভব। যেহেতু চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রদর্শন প্রক্রিয়াটা কঠিন, ব্যয়বহুল এবং জটিল, সেহেতু বেশীরভাগ সৃষ্টিশীল এবং প্রতিভাবান চলচ্চিত্র নির্মাতা পূর্ণ দৈর্ঘের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে ব্যর্থ হন। তাছাড়া প্রচলিত প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের যে ব্যবস্থা বিদ্যমান, সেটা সব নির্মাতার পক্ষে মেনে নেওয়া এবং গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। ফলে অধিকাংশ নির্মাতার নির্মিত চলচ্চিত্র সাধারণ দর্শকরা দেখতে পারেন না। ফলে টরন্টো ফিল্ম ফোরাম ২০১৪ সাল থেকে এমন সব চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একটা প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করে আসছে।

লিখিত বার্তায় মনিস রফিক আরো বলেন,  টরন্টো ফিল্ম ফোরাম এর সদস্যরা মনে করে, একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ বহুজাতিক সমাজ আমাদের সুন্দরভাবে বসবাস করার পথ তৈরি করে দিতে পারে। কানাডার বহুজাতিক সমাজ ব্যবস্থার সৌন্দর্য ও পারস্পারিক সৌহার্দ্যতা বাংলাদেশ থেকে আমরা যারা এই দেশে এসেছি, তাদের নিঃসন্দেহে মুগ্ধ করে। ফলে ২০১৭ সালে কানাডার পথ চলার ১৫০ বছরকে আমাদের পক্ষ থেকে স্মরণীয় করার জন্য আমরা সেই বছরই প্রথম টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করি। তারপর করোনা অতিমারীর জন্য ২০২০ সাল ছাড়া প্রতি বছর আমরা এই চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে আসছি। ইতোমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর জন্য পাঠাচ্ছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এর প্রদর্শিত চলচ্চিত্রসমূহ আমাদের সবাইকে বিভিন্ন সংস্কৃতিকে ভালোভাবে জানার সুযোগ করে দেবার সাথে সাথে বিভিন্ন দেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সাথে আমাদের পরিচিয় করিয়ে দিচ্ছে। এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে পৃথিবীর প্রায় ১০০টি দেশ থেকে প্রায় ৪০০০টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছে, সেখান থেকে ২৪টি দেশের মোট ৫২টি চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় এবারে বাংলাদেশ বিমান আয়োজকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ থেকে চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অভিনেত্রীর এই উৎসবে যোগ দেবার জন্য বাংলাদেশ বিমান  ৪টি টিকিট স্পন্সর করেছে। আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান, মোহাম্মদ কাইউম এবং চলচ্চিত্র অভিনেত্রী জয়া আহসান এর এই উৎসবে উপস্থিত থাকবেন।

সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য উপস্থাপনের পর চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সভাপতি ও ৬ষ্ঠ টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৩ এর উৎসব পরিচালক এনায়েত করিম বাবুল, টরন্টো ফিল্ম ফোরামের অনুষ্ঠান সম্পাদক সোলায়মান তালুত রবিন ও অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সাহিদুল আলম টুকু।  

৬ষ্ঠ টরন্টোর মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৩ আয়োজনে স্পন্সর করছেন রিয়েল স্টেট ব্রোকার শেখ হাসিব হোসেন, ব্যারিস্টার চয়নিকা দত্ত, ব্যারিস্টার ওমর হাসান আল জাহিদ, ব্যারিস্টার আরিফ হোসেন, ব্যারিস্টার রিজুয়ান রহমান, রিয়েল স্টেট এজেন্ট গৌতম পাল, রিয়েল স্টেট এজেন্ট রাইয়ান চৌধুরী, ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট মণীষ পাল প্রমুখ। ৬ষ্ঠ টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৩ এর চলচ্চিত্র প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত প্রদর্শিত হবে। প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।