ফারহানা পল্লবের ‘এক পরীর গল্প’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

গত ২৬ জুন ফারহানা পল্লবের লেখা ‘এক পরীর গল্প’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয় স্কারবরোর সিডারব্রে লাইব্রেরীর মিলনায়তনে। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ওন্টারিও বেঙ্গলী কালচারাল সোসাইটি (ওবিসিএস)।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ড. মোহাম্মদ হোসেন টিপু ওবিসিএসের কার্যক্রম সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেন উপস্থিত সুধীজনদের। এরপর তিনি উল্লেখ করেন ফারহানা পল্লবের বইয়ের বিক্রয়লব্ধ টাকা বাংলাদেশে দুজন গরীব মেধাবী ছাত্রীর পড়ালেখার জন্য প্রেরণ করা হবে৷

ফারহানা পল্লবের ‘এক পরীর গল্প’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করছেন কবি আসাদ চৌধুরী

এরপর ড. টিপু ওবিসিএস এর সভাপতি জনাব জসিম উদ্দিনকে মঞ্চে আহবান করলে- তিনি মোড়ক অনুষ্ঠানে আগত সুধীজন ও শ্রোতাদর্শকদের স্বাগত জানান। জনাব জসিম উদ্দিনের স্বাগত বক্তব্যের পর শুরু হয় ‘এক পরীর গল্প’ বইটি নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান।

এই পর্বটি সঞ্চালনা করার জন্য দেলওয়ার এলাহীকে অনুরোধ জানান ড. মোহাম্মদ হোসেন টিপু। দেলওয়ার এলাহীর সঞ্চালনায় শুরু হয় এক পরীর গল্প নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান। এই পর্বে আলোচনা করেন সুমন রহমান, সালমা বাণী, ফরিদা রহমান ও প্রধান অতিথি কবি আসাদ চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য জানান আকতার হোসেন, হাসিনা আখতার জানু, মুন্নি সোবহানী, জিয়া আনসারী। 

এক পরীর গল্প থেকে পাঠ করেন তাসমিনা হায়াত খান। ফারহানা পল্লবের পরী তার কন্যা পরমা শর্মা উপস্থিত শ্রোতাদর্শকদের মোহিত করে তার মায়ের কথা বলেন, নানি কথাসাহিত্যিক ফরিদা রহমানের কথা উল্লেখ করেন৷ পরমা তার কোল আলো করে আসা দু’মাসের কন্যা প্রকৃতিকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

‘এক পরীর গল্প’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে লেখক ফারহানা পল্লব, তার দুই সন্তান ও মা ফরিদা রহমান

চমৎকার বইটি একটি নারীর জীবনের -সংগ্রাম, আর নাড়ীর টানের কথা বলে। একটি পরিবার, বাবা-মা-সন্তান আর সামগ্রীকভাবে নারী সমাজের চরম সত্য, বাস্তব সমাজের কঠিন চিত্র তুলে ধরে। একজন একা মায়ের সংগ্রামী জীবন, দায়িত্ববোধ, আত্মত্যাগ, সন্তান পালনের  কঠোর ও সফল প্রচেস্টা, আর সত্য কিছু চড়াই-উতড়াই এর কথা বলে। লেখিকা যদিও বইটি লিখেছেন, তাঁর নিজের জীবনের কিছু স্মৃতিচারন করে, কন্যা পরমাকে ইংগিত করেছেন ‘পরী’ চরিত্রটি দিয়ে। কিন্তু সাহিত্যিক নানী ও মায়ের সুযোগ্য উত্তরসূরি, পরমার সরল স্বীকারাক্তি, “এই পরী হতে পারি আমি, হতে পারেন আপনি, আপনার কন্যা, আপনার প্রতিবেশী, যে কোন নারী।”

লেখিকা পল্লব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন সার্বজনীন এক নারী চরিত্র, যিনি একাধারে একজন জল-জলতরংগ, ফাহমিদা, কিংবা আজকের ফারহানা পল্লব। বইটিতে তিনি শব্দ বুনেছেন একটি নারীর জন্ম থেকে শুরু করে মধ্যবয়স পর্যন্ত নানা-মুখী প্রতিকূলতার বর্ননা দিয়ে। বইটি সকল নারীকে প্রেরনা যোগাবে নি:সন্দেহে।

আলোচনা পর্বের পর বক্তব্য রাখেন এক পরীর গল্পের লেখক ফারহানা পল্লব। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন – মায়ের প্রবল ইচ্ছায় লেখালেখি করলেও এখনো তিনি শিক্ষানবিশ। লিখতে চেষ্টা করলেও ভুল ত্রুটিগুলোও সনাক্ত করতে চেষ্টা করছেন। তার লেখায় ভুল ত্রুটিগুলো সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এই অনুরোধ জানান তিনি সবার প্রতি।

ফারহানা পল্লবের বক্তব্যের পর আনন্দঘন পরিবেশে ‘এক পরীর গল্প’-র মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি কবি আসাদ চৌধুরী। এই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আলোচকবৃন্দসহ অন্যান্য সুধীজন।

আলোচনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর গান পরিবেশন করেন সুমি বর্মণ, গোলাম মহিউদ্দিন, সায়িদা রুখসানা ও তাসমিনা হায়াত খান। উপস্থিত সবাইকে মধ্যাহ্ন ভোজ পরিবেশন করে এক পরীর গল্প বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়৷ – সংবাদ বিজ্ঞপ্তি