কানাডার ভ্যাংকুভারে বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের প্রাণবন্ত উৎসব ২০২৩

গত সোমবার ৪ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশী-কানাডিয়ান প্রকৌশলীদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রভিন্সের ভ্যাংকুভার শহরের ব্লু মাউন্টেন পার্ক। লেবার ডে  উপলক্ষে সেদিন ছিল সরকারি ছুটি। শনি ও রবিবারসহ  লম্বা তিনদিনের এই ছুটিতে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়ার এবং কম্পিউটার সায়েন্স প্রফেশনাল এসোসিয়েশন (বিইসিবিসি) এই উৎসব আয়োজন করে।

কানাডায় এখন শীত পড়বে পড়বে এমন ভাব। শীতের প্রাক্কালে এই উৎসবে পরিবার ও বন্ধুদের উপস্থিতিতে দিনটি সকলের জন্য উষ্ণতা বয়ে এনেছিল। অনুষ্ঠানটিতে স্থানীয় কানাডিয়ান সংসদ সদস্য মিস বনিতা জারিলো উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও কানাডার মন্ত্রী, মিঃ টেরি বিচ তাঁর কার্যালয় থেকে এই উৎসবের জন্য শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান।

অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন বিইসিবিসির বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান। সঞ্চালক হিসেবে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শামসুল হক (ভাইস-চেয়ার, অপারেশন্স)।

কানাডায় বাংলাদেশী  বংশোদ্ভূত প্রকৌশলীদের অপরিসীম অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে সংসদ সদস্য বনিতা জারিলো তাৎক্ষণিক বার্তায় বলেন, “সরকার আইন প্রণয়ন করতে সক্ষম, কিন্তু শক্তিশালী কমিউনিটি তৈরী করতে অক্ষম ।” কানাডাতে বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের এই শক্তিশালী সম্প্রদায় গড়ে তোলার জন্য তিনি এর ভূয়সী প্রশংসা করেন।

সংসদ সদস্য বনিতা জারিলোর হাতে কৃতজ্ঞতা সূচক স্যুভেনির উপহার তুলে দেন বিইসিবিসির বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান। এরপর প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন সভাপতিদের নাম-খচিত স্মারক টি-শার্ট তাদের হাতে তুলে দেন সংসদ সদস্য বনিতা জারিলো।

অনুষ্ঠানটি সুচিন্তিতভাবে পরিকল্পনা ও সম্পাদন করেন বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ শামসুল হক (ভাইস-চেয়ার, অপারেশন্স) , মো: কামরুজ্জামান (ভাইস-চেয়ার, ফাইন্যান্স), মো: সালামাহ মেহেরিয়ার (এসোসিয়েট ভাইস-চেয়ার, ফাইন্যান্স), শেখ সুমিত নূর (ভাইস-চেয়ার, পাবলিক রিলেশন্স), মো: নাজমুল হাসান তপু (ভাইস-চেয়ার, ইউনিভার্সিটি রিলেশন্স) এবং তারানা আহমেদ (ভাইস-চেয়ার, কালচারাল এফেয়ার্স)। এছাড়াও অন্যান্য সিনিয়র সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিজান মজুমদার, নুরুল ইসলাম, সাইফুজ্জামান মিঠু, ড. ইকবাল ভূঁইয়া, মুজিবুর রহমান সহ আরো অনেকেই। অনুষ্ঠানটির গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলি ক্যামেরা বন্দী করেন মিডিয়া পার্টনার- স্কলারশিপ স্কুল বিডি এবং মিঠুন-শিমুল’স স্টোরি।

প্রাক্তন সভাপতি প্রকৌশলী মিজান মজুমদার আলাপচারিতায় প্রতিষ্ঠানটির অতীত ইতিহাস ও কর্মকান্ড তুলে ধরেন। এছাড়াও স্কলারশিপ স্কুল বিডির কর্ণধার মো: নাজমুল হাসান তপুর সাথে মতবিনিময় পর্বে প্রাক্তন সেক্রেটারি সাইফুজ্জামান মিঠু ও ড. ইকবাল ভূঁইয়া বাংলাদেশ থেকে কানাডায় নতুন আগত প্রকৌশলীদের জন্য মূল্যবান পরামর্শ প্রদান করেন।

মুখরোচক খাবার ছাড়া কোনো উৎসব সম্পূর্ণ হয় না। এটিও তার ব্যতিক্রম ছিল না। উপস্থিত সদস্য ও অতিথিগণ বিভিন্ন ধরণের দেশীয় সুস্বাদু খাবার উপভোগ করেন। খাওয়া শেষে আইসক্রিম এবং চা পরিবেশন করা হয়। লাঞ্চ-পরবর্তী সময়ে বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের কমতি ছিল না। বাচ্চাদের জন্য ছিল মার্বেল দৌড় প্রতিযোগিতা। মহিলাদের জন্য ছিল বালিশ খেলা। পুরুষরা দুই দলে ভাগ হয়ে রশি টানার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। খেলা পর্ব শেষে জয়ীদের মধ্যে পুরুস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও পুরস্কার বিতরণী শেষে স্থানীয় ছাত্র ব্যান্ড – মিউজেস, শ্রোতাদের জন্য গান পরিবেশন করে।

বিইসিবিসি সভাপতি নাজমুল হাসান তার বিদায়ী বার্তায় উপস্থিতদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “এই ধরনের উৎসব বাংলাদেশী-কানাডিয়ান প্রকৌশলীদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে। ” এছাড়াও তিনি বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের কানাডায় নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান রেখে এগিয়ে যাওয়ার  আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠান শেষে শামসুল হক (ভাইস-চেয়ার, অপারেশন্স) বলেন, “পেশাগত এবং পারিবারিক শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আমরা সর্বাত্নকভাবে চেষ্টা করেছি সবাইকে একত্রিত করার এবং সকলেই আগ্রহ নিয়ে এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন। এই ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে একে অন্যের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ লাভ করেন। আমরা মনে করি, ভ্যাংকুভারে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের মধ্যে সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এই অনুষ্ঠানটি।”  

শামসুল হক কমিটি মেম্বারদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সফলভাবে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করার জন্য।

উল্লেখ্য বিইসিবিসি ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রভিন্সে রেজিষ্ট্রার্ডকৃত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা এই প্রভিন্সে কর্মরত বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মশালা সহ কারিগরী উৎকর্ষ সাধনে এক যুগেরও বেশী সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছে।

বার্তা ও ছবি প্রেরক : মো: নাজমুল হাসান তপু