জনসংখ্যার ‘বিপুল বৃদ্ধি’ অন্টারিওর জরুরী বিভাগগুলোতে বাড়তি চাপ ফেলছে

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : অন্টারিওর হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশন (ওএইচএ) সতর্ক করেছে যে, জনসংখ্যার “বিপুল বৃদ্ধি” প্রদেশের জরুরী বিভাগগুলির ওপর “স্থায়ী চাপ” আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। খবর উদয় রানা – গ্লোবাল নিউজ।

সম্প্রতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, অন্টারিওতে দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া শ্বাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বেশি সংখ্যক রোগীর হাসপাতালগুলিতে অবস্থান করা এবং ভর্তির জন্য অপেক্ষার সময় দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্পর্ক আছে।

ওএইচএর তথ্য অনুযায়ী, ১৩ জানুয়ারি অন্টারিওর হাসপাতালগুলিতে ১,২৭৪ জন কোভিড-১৯ রোগী, ৪৪৫ জন ফ্লুতে আক্রান্ত রোগী এবং ১৫৮ জন আরএসভি (ভাইরাসজনিত শ্বাসকষ্টের রোগ) রোগী চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জনসংখ্যার “বিপুল বৃদ্ধি” প্রদেশের জরুরী বিভাগগুলির ওপর “স্থায়ী চাপ” আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ছবি: টরন্টো স্টার

ওএইচএর প্রেসিডেন্ট এবং সিইও অ্যান্থনি ডেল বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, “অন্টারিওতে নিয়োজিত কর্মচারীসহ আনুমানিক ২২ হাজার অ্যাকিউট কেয়ার বেড আছে। এগুলি যে কোনও সময় অপারেশনের জন্য প্রস্তুত। এসব বেডের মধ্যে ৬,০০০ টিরও বেশি বেডে এমন রোগী ভর্তি আছেন যাদের আরও উপযুক্ত কোনও পরিবেশে থাকা উচিৎ অথবা যারা ভর্তি না হলেও পারতেন, যদি তাদেরকে মৌসুমী শ্বাসজনিত ভাইরাসের টিকা দেওয়া হতো। এই ভাইরাস অনেক অন্টারিওর স্বাস্থ্যের প্রতি অব্যাহত ঝুঁকি সৃষ্টি করছে, বিশেষত সবচেয়ে নাজুক ব্যক্তিদের ওপর।”

বর্তমান সংখ্যাটি ডিসেম্বরের চেয়ে বেশি। তখন অ্যাকিউট কেয়ার বেড দখল করে ছিল ৪,২০০ রোগী যাদের আরও উপযুক্ত কোনও পরিবেশে থাকা উচিৎ ছিল। রোগীদের প্রায় ৪০ শতাংশ দীর্ঘকালীন বেডের জন্য অপেক্ষমান।  

ওএইচএ বলেছে, “অন্টারিওর অত্যন্ত দ্রুত পরিবর্তনশীল জনসংখ্যার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান অপেক্ষার সময় এবং হাসপাতালে অধিক সংখ্যক রোগীর অবস্থান সরাসরি সংশ্লিষ্ট। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জনসংখ্যার বিপুল বৃদ্ধি এবং জরুরী বিভাগে উপস্থিত রোগীদের অস্থিরতার স্তর বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি নানা ধরণের স্বাস্থ্যগত জটিলতাসম্পন্ন বয়স্ক জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান সংখ্যার স্বাস্থ্য পরিষেবার চাহিদা বেড়েছে।

ওএইচএ অন্টারিওবাসীর প্রতি শ্বাসজনিত রোগ যেমন, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কোভিড-১৯ এবং আরএসভির মত ভাইরাসের টিকাদান সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য জেনে রাখার আহবান জানিয়েছে।

দেখা গেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া কোভিড-১৯ এর পূর্ণাঙ্গ টিকাদান অভিযানে মাত্র ১৪.৬ শতাংশ যোগ্য কানাডীয় উন্নততর এক্সবিবি,১.৫ টিকা নিয়েছে।

চলতি বছরের ফ্লুর টিকা গ্রহণকারীদের তথ্য পাওয়া যায়নি।

ডেল যোগ করেন, “শ্বাসজনিত ভাইরাসের মৌসুম এখন চলছে। আর অন্টারিওর সব হাসপাতালের জরুরী বিভাগগুলি স্থায়ী চাপের মুখে পড়েছে। জরুরী বিভাগগুলি রোগীদের সময়মত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

কর্মচারী স্বল্পতা, অতিরিক্ত রোগীর ভিড় এবং ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবসহ নানা কারণে সারা দেশের জরুরী বিভাগগুলিতে সেবা পাবার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে থাকা রোগী উপচে পড়ছে।

জরুরী বিভাগের রোগীরা বলছেন, চলতি বছরের এই মৌসুমটি তাদের দেখা সবচেয়ে খারাপ মৌসুম। এখন তারা কানাডার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ছড়িয়ে পড়া সঙ্কটের সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানাচ্ছেন।

কানাডার মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন সিএমএ গত সপ্তাহে এক বিবৃতি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, বড় ধরনের পদ্ধতিগত পরিবর্তনের সূচনা করা না হলে জরুরী বিভাগের এই সঙ্কট থেকেই যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *