অন্টারিওতে রোগীদের ন্যায়পাল ২০২২-২৩ সালে রেকর্ড সংখ্যক অভিযোগ পেয়েছে

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : অন্টারিওর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পর্যবেক্ষক বা ন্যায়পাল (Ombudsman) কাজ শুরুর পর থেকে অন্য যে কোনও বছরের চেয়ে গত বছর বেশি অভিযোগ পেয়েছেন। যদিও অনেক অভিযোগ সংস্থার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। সংস্থার বার্ষিক রিপোর্টে এ তথ্য জানা গেছে। খবর লেন হ্যারিসন – সিবিসি নিউজ।

রিপোর্টের তথ্যমতে, পর্যবেক্ষক সংস্থাটি ২০২২-২৩ সালে ৪,৩৮৮ টি অভিযোগ পেয়েছে, যা আগের বছরের এই মাসের চেয়ে ৩৩ শতাংশ বেশি।

২০১৬ সালে চালু হওয়া রোগীদের ন্যায়পাল স্বরূপ প্রতিষ্ঠানটি তাদের রিপোর্টের একটি কপি আগেভাগেই সিবিসি টরন্টোকে পাঠিয়েছে। এতে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের তথ্য লিপিবদ্ধ হয়েছে।

ন্যায়পালের রিপোর্টে গুরুত্ব পাওয়া অভিযোগগুলোর একটি বিষয় ছিল অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী পরিবহনের বিল। ছবি : ইভান মিৎসুই-সিবিসি

কিন্তু অভিযোগগুলির মধ্যে ৭৮৫টি ছিল প্রাইমারি কেয়ার সম্পর্কিত। প্রাইমারি কেয়ারের আওতায় পড়ে পারিবারিক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এটিই মানুষের প্রথম যোগাযোগের স্থান। কিন্তু প্রাইমারি কেয়ার ব্যবস্থাটি ন্যায়পালের আওতাধীন নয়।

ন্যায়পাল ক্রেগ থমসন সিবিসি নিউজকে বলেন, “আমরা এখন অভিযোগের মধ্যে এটিও (প্রাইমারি কেয়ার) দেখতে পাচ্ছি।”

তিনি বলেন, প্রাইমারি কেয়ার সম্পর্কিত অনেক অভিযোগের ক্ষেত্রে এমন কোনও তদারকি সংস্থা নেই যেখানে মানুষ অভিযোগ নিয়ে যেতে পারে।

থমসন বলেন, “এটা সত্যিই যন্ত্রণাদায়ক।”

যেসব অভিযোগ তার আওতার মধ্যে পড়ে সেগুলোর মধ্যে ২,২৬৪টি হাসপাতাল সম্পর্কিত, ৩৩৪টি লং-টার্ম কেয়ার হোম সম্পর্কিত এবং ২৭২টি আবাসিক ও কমিউনিটি কেয়ার বিষয়ক।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মুখপাত্র হান্নাহ জেনসেন বলেন, তারা রিপোর্ট পর্যালোচনা করবেন এবং পরিস্থিতির উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করবেন। তিনি বলেন, প্রাদেশিক সরকার যেসব কমিউনিটিতে “সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন” সেখানে প্রাইমারি কেয়ারের টিম সম্প্রসারণের জন্য চলতি বছর তিন কোটি ডলার ব্যয় করছে। 

জেনসেন চলতি বছরের আরও আগের দিকে একটি আইন চালু করার বিষয়ও উল্লেখ করেন। ওই আইন অনুযায়ী আরও বেশি সংখ্যক প্রাইভেট ক্লিনিক নির্দিষ্ট কিছু সরকারি ব্যয়ের সার্জারির চিকিৎসা করতে পারবে। আইনটি স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে। তারা বলছেন, প্রাদেশিক সরকারের উচিৎ ওইসব শল্যচিকিৎসা সম্পাদনের জন্য হাসপাতালেই অর্থ বিনিয়োগ করা।

অনেকে অ্যাম্বুলেন্সের বিল নিয়ে অভিযোগ করেন

ন্যায়পালের রিপোর্টে গুরুত্ব পাওয়া অভিযোগগুলোর আরেকটি বিষয় হলো অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী পরিবহনের বিল। অ্যাম্বুলেন্স এবং অন্যভাবে রোগী পরিবহনের বিলের যথার্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এমন ১৪টি অভিযোগ পেয়েছেন ন্যায়পাল।

রিপোর্ট অনুযায়ী, চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স সেবা দেওয়া হলে OHIP-বীমার আওতাধীন রোগীকে ৪৫ ডলার পরিশোধ করতে হবে। তবে প্যারামেডিক আসার পর রোগীকে স্থানান্তরের প্রয়োজন নেই বলে মনে করা হলে রোগীকে ২৪০ ডলার দিতে হবে।

রিপোর্টে বলা হয়, “অনেক মানুষই সচেতন নন যে, অ্যাম্ব্যুলেন্স সার্ভিস পুরোপুরি OHIPএর অর্থে পরিচালিত নয়।”

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, চিকিৎসা সম্পর্কিত চাহিদা নিরূপণ করেন রোগীর চিকিৎসক, কোনও আইন, নীতি বা বিধি সেটি করে না। থমসন বলেন, চিকিৎসাগতভাবে কী প্রয়োজন সেটির সংজ্ঞায়নের জন্য নীতি থাকা দরকার।

তিনি বলেন, “পরিষ্কার নীতিমালা যদি না থাকে তাহলে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা থাকা সম্ভব নয়।”

থমসন বলেন, পরিষ্কার নীতিমালা না থাকলে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেগুলি  স্বেচ্ছাচারিতামূলক মনে হতে পারে অথবা সারা প্রদেশে বৈষম্য সৃষ্টি করতে পারে।

থমসন যে নীতিমালার কথা বলেছেন তা প্রণয়নের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সরাসরি কোনও জবাব দেয়নি।