টরন্টোতে বন্দুক সন্ত্রাস পাঁচ বছরে ৩০% কমেছে

এই প্রবণতা ধরে রাখতে পারবে শহরটি?

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক: টরন্টোতে বন্দুক নিয়ে সহিংসতার হার ২০২৩ সালেও অব্যাহতভাবে কমেছে। পাঁচ বছর আগে রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছার পর এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। খবর বানেছা বলিনটেক – সিবিসি নিউজ।

২০১৯ সালে টরন্টো পুলিশ সার্ভিসের জননিরাপত্তা ডেটা পোর্টালে ৪৬৯টি গুলিবর্ষণ ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা তুলে ধরা হয় যাতে বছর শেষে ২৭০ ব্যক্তির মৃত্যু অথবা ক্ষয়ক্ষতি হয়।

টরন্টোতে বন্দুক নিয়ে সহিংসতার হার ২০২৩ সালেও অব্যাহতভাবে কমেছে। ছবি : ক্রিস ইয়াং-দি কানাডিয়ান প্রেস

২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর ওই পরিসংখ্যান প্রায় ৩০ শতাংশে কমে আসে। গুলিবর্ষণ ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা ছিল ৩২৬টি এবং ১৫৩ ব্যক্তি মৃত্যুবরণ অথবা আহত হয়।

টরন্টো পুলিশের অর্গানাইজড ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের সুপার স্টিভ ওয়াটস বলেন, “এই হ্রাসপ্রাপ্তি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য আইনগত অধিক্ষেত্রের অবস্থা বিবেচনায়; সেখানে গুলিবর্ষণ ও হত্যার সংখ্যা বাড়ছেই।” তিনি বলেন, “আমরা এক্ষেত্রে বৃদ্ধির প্রবণতার কিছুটা বাইরে রয়েছি আর, এতে আমি গর্বিত।”

ওয়াটস টরন্টোর এই সাফল্যের কৃতিত্ব দেন অন্তত আংশিকভাবে হলেও অপরাধীদের চিহ্নিত করা, পদক্ষেপ গ্রহণ ও প্রতিরোধের কৌশল অবলম্বনের বিষয়কে।

তিনি বলেন, বন্দুক নিয়ে সহিংসতা কমার অর্থ হলো ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা হ্রাস এবং গুলিবর্ষণের ঘটনা নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধির পথ খুলে যাওয়াÑ পুলিশ ২০১৯ সালের আগে এধরণের ঘটনার ১৫ শতাংশের নিষ্পত্তি করতো, আর এ বছর করেছে ৫০ শতাংশের। 

ওয়াটস বলেন, এখন, প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো চলমান নিম্নমুখি প্রবণতা ধরে রাখা – যা করতে হবে সামাজিক ও কমিউনিটির বিভিন্ন কর্মসূচি, টেকসই বহুমুখি পদক্ষেপ এবং জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, এটি বিশেষভাবে জরুরী সেইসব তরুণের জন্য যারা সংঘবদ্ধ অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

“গ্যাংভিত্তিক সহিংসতা ও বন্দুকসংশ্লিষ্ট অপরাধের দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের মূল অন্য অনেক ক্ষেত্রে প্রোথিত, সেটা আবাসন ও  নিরাপত্তা, আর্থিক ও নিরাপত্তা, পরিবেশগত বিষয়াদি যেটাই হোক, এসবই যথেষ্ট আলোচিত হয়েছে।”

২০২৪ সালে সহিংসতা কমিয়ে রাখার আশা করেন প্রবক্তারা

অ্যাডভোকেসি গ্রুপ জিরো গান মুভমেন্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নেতা লুইস মার্চ সীমান্তে

টহল বাড়ানো এবং দেশে অবৈধ অস্ত্রের চালান আসা বন্ধে সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে কৃতিত্ব দেন।

তিনি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কমিউনিটি ও সামাজিক সেবা এবং শিশু ও যুব প্রযত্নের মত বিভিন্ন খাতে সংশ্লিষ্টতার জন্যও সরকারকে কৃতিত্ব দেন। এই বিষয়গুলি ২০২১ সালে সূচিত টরন্টোর সেফ টু প্ল্যানের রূপরেখার অন্তর্ভুক্ত।

তবে নিশ্চিতভাবেই অগ্রগতি অর্জিত হলেও, লুইস সতর্ক করেন যে, বন্দুকসংশ্লিষ্ট সহিংসতার অনুপস্থিতির সাথে সম্ভবত অন্য ধরণের সহিংস অপরাধ যেমন, গাড়ি ছিনতাই ও ডাকাতি বেড়ে যাবার সংযোগ থাকতে পারে।

লুইস বলেন, “অপরাধী চিত্ত কখনও বিরতি নেয় না। এটি বিকশিত হতেই থাকে, ঠিক যেভাবে আমরা বিকশিত হয়েছি এবং আমাদের পথ পাল্টে নিয়েছি।”

ওয়াটস দাবি করেন, বিষয়গুলি ভিন্ন। তবে তিনি স্বীকার করেন, তার বাহিনী গাড়িচুরি বেড়ে যাবার বিষয়ে অবগত এবং এটি এ সমস্যার মোকাবেলায় একটি প্রাদেশিক টাস্ক ফোর্স গঠনে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, “সংঘবদ্ধ অপরাধীরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে এবং টাকা বানাতে পারবে, এমন যে কোনও ক্ষেত্রে তারা প্রয়াস কেন্দ্রীভূত করবে।” তিনি বলেন, কমিউনিটিভিত্তিক কর্মসূচি, আবাসন, কর্মসংস্থান এবং মানসিক স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ করা দরকার; বিশেষ করে নগরীর সেইসব এলাকায় যেগুলি ঐতিহাসিকভাবেই স্বল্প সেবা পেয়ে এসেছে।