কানাডার ঠান্ডা
ড. গোলাম দস্তগীর
কানাডার প্রকৃতি শীতে বেজায় বিরূপ
বিশ্বনগরী হারিয়ে ফেলে চিরচেনা রূপ |
রাশি রাশি বরফ, পেঁজা পেঁজা তুষার
তুষার ঝড়ে বিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের তার
শত গৃহে নেমে আসে নিকশ আঁধার |
হিমাঙ্কের নিচে বিশ ডিগ্ৰী তাপমাত্রায়
স্থবিরতা ভর করে জীবনযাত্রায়
কোলাহলমুখর, নয় শীতের শহর
বিদ্যুতবিহীন নগর উত্তাপহীন কিশোর
ঠান্ডায় গৃহে কাতর কত অশীতিপর |
সুবিশাল দিকচক্রবাল তুষার ধবল
দৃষ্টিগোচরতা ক্ষীণ, অতিশয় দূর্বল |
চারিদিকে স্তব্ধতা, শুনশান নীরবতা
যানবাহনবিহীন ফাঁকা রাজপথ
জনমানবশূন্য বন্দর, নাই মুখরতা |
যার নূন্যতম মজুরী আর ঘন্টা মাপা চাকরী
বেকারত্বে কাতর সে, আবহাওয়া বৈরী |
এ দেশ যতই উন্নত আমি ততই মর্মাহত
যখন দেখি ভিখারীর হাত কানাডাতে
আর গৃহহীন থাকে ত্রিশ হাজার প্রতিরাতে |
বরফে নিয়ন্ত্রণ হারায় হাজারো যান
অবোষ্ণতা কেড়ে নেয় অনেকের প্রাণ |
দূর্ভোগের শিকার হয় আপামর জনতা
পিছলে আছাড় খেয়ে অস্থি গুঁড়ায়
আবাল, যুবা, বৃদ্ধ ও বনিতা |
ছোট বড়ো হ্রদের জল জমাট বেঁধে হয় প্রবল
হ্রদ হয়ে যায় স্কেটিং খেলার কোর্ট |
প্রাকৃতিক বরফ-সড়ক দেখি হ্রদের উপর
‘জেমস বে উইন্টার রোড’ এমনই সড়ক
বরফে আদিবাসীরা নির্মাণ করে বরফের ঘর |
বিস্তীর্ণ দ্রাক্ষালতায় ঝুলন্ত আঙ্গুর
ঠান্ডায় জমাট বেঁধে হয় তা ভঙ্গুর |
নিংড়ানো সে রস শর্করায় ভরপুর |
বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এমনই রসদ
নায়াগ্রায় তৈরী হয় এই বরফ-মদ |
শীতকালেও অনেকে যায় মৎস শিকারে
হ্রদের জমাটবাঁধা বরফ ছিদ্র করে
আধার ভরা বড়শি ফেলে তার ভিতরে |
বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে
মন মন মাছ তুলে আনে ঘরে |
শীতের প্রকোপে পাখিকুল গর্তে লুকায়
বনের হিংস্র প্রাণী ফিরে যায় গুহায় |
গ্রীষ্মে যা কিছু হয়েছে আহরণ
অতি সংযমে তা এখন করিবে ভক্ষণ |
নয়তো উপোস ছাড়া নেইকো উপায় |
প্রকৃতির বিরূপ কারও কাছে যেন অপরূপ
নতুন অভিবাসী প্রথম বরফের পরশে
বরফ মেখে ছবি তোলে মনের হরষে |
পল্লবহীন বৃক্ষরাজী কখনোবা বরফ-বৃষ্টিতে
মুক্তোর মালা পরে রবির উজ্জ্বল আলোতে |
জানুয়ারী ১২, ২০২৪, টরন্টো, কানাডা
This poem is truly a wonder testament to our Canadian weather. Like all other poems of yours, this too is a fascinating one for its message and rhetoric presentation.