অন্টারিওতে বেপরোয়া গাড়ি চালনার ঘটনা ৩৬ শতাংশ বেড়েছে
২০২১ সালে যতগুলি প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে তার ১৮ শতাংশের জন্য দায়ী বেপরোয়া গাড়ি চালনা
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : অন্টারিওতে গত দ্ইু বছরে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ঘটনা ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত নতুন এক রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর ব্রেনা মার্সেলো – নাউটরন্টো.কম।
হ্যালোসেফ কানাডা নামের বীমা সংস্থাটি অন্টারিও এবং একইসঙ্গে সারা দেশজুড়ে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর বিষয়ে তার সর্বসাম্প্রতিক পরিসংখ্যান সংকলিত করে। এই কর্মসূচিতে ট্রান্সপোর্ট কানাডা, প্রাদেশিক সরকার, স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা এবং সিএএ-র মত বিভিন্ন সূত্রের তথ্য-উপাত্ত পর্যবেক্ষণ করে।
বেপরোয়া গাড়ি চালনার সংজ্ঞা দিয়ে হ্যালোসেফ বলেছে, এটি হলো, “যে কোনও কাজ, যা রাস্তা থেকে চালকের মনোযোগ সরিয়ে নেয়, গাড়ির ওপর তার নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয় এবং গড়ি চালনায় মনোযোগ নষ্ট হয়।”
রিপোর্টে বলা হয়, ২০২১ সালে এই প্রদেশে যতগুলি প্রাণঘাতী গাড়ির সংঘর্ষ ঘটেছে তার ১৮ শতাংশের জন্য দায়ী বেপরোয়া গাড়ি চালনা।
জাতীয় পর্যায়ে, একই বছরে ১,৭৬৮ জন কানাডীয় নাগরিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়াও কানাডায় যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তার ১৯.৭ শতাংশ ঘটে বিক্ষিপ্ত গাড়ি চালনার কারণে। ২০২২ সালে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে অন্টারিওতে নিহত হন ১০৫ ব্যক্তি, এর বিপরীতে সারা দেশে নিহত হন ৩৪৮ জন।
অন্টারিওই হলো বেপরোয়া গাড়ি চালনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর প্রদেশগুলোর অন্যতম।
রিপোর্টে বলা হয়, “একবার আইন লংঘন করলে বেপরোয়া গাড়ি চালানো অন্টারিওবাসীকে ন্যূনতম ৬১৬ ডলার জরিমানা গুণতে হয়, যা দেশের সর্বোচ্চ শাস্তি।”
অন্টারিতে কোনও চালক প্রথমবার বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অপরাধ করলে তাকে তিনটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেতে হয় এবং তিনদিনের জন্য লাইসেন্স স্থগিত রাখা হয়। একই অপরাধ তিনবার বা বেশিবার করলে তাকে ছয়টি ডিমেরিট পয়েন্ট পেতে হবে এবং ৩০ দিনের জন্য লাইসেন্স স্থগিত হবে।
রিপোর্টে জোর দিয়ে বলা হয় যে, বেপরোয়া ড্রাইভিং বলতে শুধু মেসেজ চালাচালি নয় বরং তার চেয়েও বেশিকিছু। বেপরোয়া ড্রাইভিং বলতে এমন যে কোনও উৎস বোঝায় যা চালকের দৃষ্টি, ম্যানুয়াল কর্মকাণ্ড, জ্ঞান ও শ্রবণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
উদাহরণ স্বরূপ, বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে জিপিএস প্রোগ্রামিং, পানাহার, পড়া, সাজসজ্জা, ভিডিও দেখা এবং এমন আরও কিছু।
প্রাদেশিক সরকার বলেছে, গাড়ি চালকদেরকে এয়ারপিস, ল্যাপেল বাটন বা ব্লুটুথ সংযোগসহ হ্যান্ডস-ফ্রি বেতার যোগাযোগযন্ত্র ব্যবহার এবং একই সাথে গাড়ির ড্যাশবোর্ডে তৈরি বা নিরাপদে স্থাপিত জিপিএস ডিসপ্লে স্ক্রিন ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কাজটি বিপজ্জনক মনে করলে বেপরোয়া গাড়ি চালনার জন্য প্রাদেশিক পুলিশকে চালকদের অভিযুক্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সামগ্রিকভাবে বেপরোয়া গাড়ি চালনা হলো কানাডায় সড়কে মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ। বেপরোয়া গতির কারণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে। বিপরীতে, প্রাণঘাতী গাড়ি দুর্ঘটনার ২৪.৭ শতাংশ ঘটে বেপরোয়া গতির কারণে আর ১৮ শতাংশ দুর্ঘটনার কারণ পরিবেশগত।