গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে: অ্যামনেস্টি

অনলাইন ডেস্ক , ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ : ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনে উল্লিখিত আইনের সংজ্ঞা অনুসারে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা বলে দাবি করেছে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ৫ ডিসেম্বর বার্তাসংস্থা রায়টার্স ও এএফপি এ খবর জানায়।  

ইসরাইলি হামলা থেকে বাঁচতে গাজার খান ইউনুস এ নাসের হাসপাতালে আশ্রয় নেয়া কয়েকজন শিশু। ছবি : বিবিসি

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ইসরাইলি সরকার ও সামরিক কর্মকর্তাদের অমানবিকতা এবং গণহত্যার প্রতিবেদন তৈরী করা হয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার, স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি, কয়েক মাসের তদন্ত ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিবৃতি বিশ্লেষণ করে।

অ্যামনেস্টির প্রধান অ্যসনেস কালামার্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মাসের পর মাস, ইসরায়েল গাজায় ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের উপর শারিরীক নির্যাতন চালিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন,‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনিই জেগে ওঠতে হবে। কারণ গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা। অবশ্যই এই গণহত্যা বন্ধ করতে হবে এবং সেটি এখনি।’

উল্লেখ্য যে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে নজিরবিহীন আকস্মিক এক হামলা চলালে ১২০৮ জন ইসরাইলি নিহত হন। এর পরপরই ইসরাইলি সামরিক বাহিনী গাজায় প্রাণঘাতি অভিযান চালানো শুরু করে এবং হামাসকে চিরতরে নিমূর্লের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।  

বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর প্রাণঘাতি অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে। এবং এ পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ৪৪ হাজার ৫শ’ ৩২ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের তথ্য মতে নিহত শিশুর সংখ্যা ১৭ হাজারের মতো।

অন্যদিকে গাজায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ব্যাপক হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থীশিবির, মসজিদ ও গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন দুই মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনি। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।

তবে ইসরাইল শুরু থেকেই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং পাল্টা অভিযোগ করে বলছে হামাস নিজেদের বাঁচাতে বেসামরিক লোকদের মানবঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *