অন্যান্য অগ্রসর অর্থনীতির চেয়ে কানাডার জীবনমান পিছিয়ে পড়ছে

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : টিডি ব্যাাংকের এক নতুন অর্থনৈতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, জীবনমানের দিক থেকে কানাডা তার সহযোগিদের চেয়ে পিছিয়ে পড়ছে। খবর মিচেল কনস্কি-সিটিভি নিউজ।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত ঐ রিপোর্ট অনুযায়ী, জীবনযাত্রার মানের প্রশ্নে (অথবা মাথাপিছু প্রকৃত জিডিপির হারে) কানাডা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য অগ্রসর অর্থনীতির দেশের চেয়ে পেছনে রয়েছে।

টিডির অর্থনীতিবিদ মার্ক এরকোলাও লিখেছেন, “অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সব সময়ই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সমতুল্য মনে করা হয় না।”

জিডিপির বিষয়টি বিবেচনার পাশাপাশি, এরকোলাও ব্যাখ্যা করে বলেন, কানাডার অর্থনৈতিক কর্মকুশলতা বোঝার জন্য জবিনযাত্রার মান এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

এরকোলাও বলেন, মহামারির আগের দশ বছরে গড় প্রবৃদ্ধির দিকে থেকে কানাডা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের খুব কাছাকাছি, যা ছিল বছরে দুই শতাংশের একটু বেশি এবং জি-৭ গ্রুপের সব দেশের গড় ১.৪ শতাংশের চেয়ে ওপরে।

জীবনমানের দিক থেকে কানাডা তার সহযোগিদের চেয়ে পিছিয়ে পড়ছে। ছবি : প্রবাসী কণ্ঠ

মহামারির তাণ্ডবের পর কানাডা শক্তিশালী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সূচনা করতে সক্ষম হয়, অন্যান্য উন্নত অর্থনীতির দেশের তুলনায় দ্রুততর প্রবৃদ্ধির হার অর্জন করে। অর্থনৈতিক এই প্রবৃদ্ধির পেছনে দেশের জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধি বড় অবদান রাখে বলে উল্লেখ করেন এরকোলাও।   

রিপোর্ট অনুযায়ী, কানাডার জনপ্রতি অর্থনৈতিক উৎপাদন (প্রকৃত মাথাপিছু জিডিপি) অনেক বছর ধরেই কমছে।

এরকোলাও লিখেছেন যে, ২০১৪-১৫ সালের তেলের ধাক্কা অর্থনৈতিক কর্মকূশলতা খারাপ অবস্থায় ঠেলে দেয়। প্রতি বছর কানাডার মাথাপিছু প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হচ্ছিল খুব ধীর গতিতে মাত্র ০.৪ শতাংশ হারে, যা অন্য উন্নত দেশগুলোর গড়ের চেয়ে অনেক বেশি ধীর (অন্য দেশগুলোর বার্ষিক প্রবৃদ্ধির গড় হার ১.৪ শতাংশ)।

সম্প্রতি জনসংখ্যার বৃদ্ধি বছরে তিন শতাংশে উন্নীত হলেও এটি মূল বিষয় হয়ে আসছে না– বিশেষত ২০২০ থেকে  যখন জনসংখ্যার গড় প্রবৃদ্ধি ২০০০ সালের আগের চেয়ে সামান্যই বেশি (প্রায় ১.২ শতাংশ)।

এরকোলাওয়ের মতে আসল সমস্যা হলো, ১৯৮০-র দশক থেকেই জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। এর অর্থ হলো, মাথাপিছু জিডিপি কম হওয়াটা নিছক ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য নয় বরং তা ঘটছে খোদ অর্থনীতিরই নিম্ন প্রবৃদ্ধির কারণে।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, এই ধসের কারণ প্রধানত উৎপাদনশীলতার সঙ্গে জড়িত।

টিডি বলছে, আলবার্টা, সাসকাচুন এবং নিউ ফাউন্ডল্যান্ড ও ল্যাব্রাডরের মত যেসব অঞ্চলে অর্থনীতি বহুলাংশে পণ্য বিনিময়ের ওপর নির্ভর করে সেখানে সচরাচর মাথাপিছু জিডিপি ছিল সর্বোচ্চ। কিন্তু গত দশ বছরে সেই তাদের প্রাধান্য চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। টিডির রিপোর্টে বলা হয়, মহামারির পর শুধু বিসি এবং পিইআই তাদের প্রবৃদ্ধির হার কোভিড-১৯ এর আগের বছরগুলোর পর্যায়ে উন্নীত করতে পেরেছে।

রিপোর্টে বলা হয়, “এ থেকে স্পষ্ট, উৎপাদনশীলতা ও প্রবৃদ্ধির বিষয়ে আমাদের কর্মপদ্ধতির মৌলিক পরিবর্তন করা না হলে কানাডার জীবনমানের ক্ষেত্রে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ ভবিষ্যতে বহুদিন পর্যন্ত থেকে যেতে পারে।