টরন্টোর এক নারী তার স্বামীর ২০ বছর আগে দেখা স্বপ্নের নম্বরেই জিতলেন ৬০ মিলিয়ন ডলারের লোটো ম্যাক্স জ্যাকপট লটারি
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : ২০ বছর ধরে একটি নম্বরেই লটারি খেলে এসেছেন ৫৭ বছর বয়সী এক নারী। অবশেষে সেই নম্বরেই জিতেছেন ৬০ মিলিয়ন ডলারের পুরষ্কার। বিশেষ এই নম্বরটি স্বপ্নে পেয়েছিলেন তার স্বামী। খবর সিটিভি নিউজের। রিপোর্ট করেছেন কেলা গুডফিল্ড।
সম্প্রতি বিশাল অঙ্কের ওই চেক গ্রহণকালে দেং প্রভাতোদম নামের ওই নারী বলেন, “সব কষ্ট এখন দূর হয়ে গেল।” তিনি অনুবাদকের সাহায্য নিয়ে কথা বলছিলেন।
প্রভাতোদম তার ১৪ জন ভাইবোনকে সঙ্গে নিয়ে ১৯৮০ সালে লাওস থেকে কানাডায় আসেন। তিনি বলেন, “স্থানীয় একটি গীর্জা আমার পরিবারকে এখানে স্পন্সর করে। আর যেহেতু আমাদের কিছুই ছিলো না, তাই এত বছর ধরে তারা আমাদের যে সহায়তা দিয়ে এসেছেন সেজন্যে আমি কৃতজ্ঞ।”
“আমি ও আমার স্বামী গত ৪০ বছর প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেছি, চেষ্টা করেছি পরিবারের জন্য যতটা পারি সঞ্চয় করতে।”
দুটি প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের মা এবং দুটি নাতি-নাতনির দিদা ওই নারী কোভিড-১৯ মহামারির সময় গত বসন্তকালে চাকরি হারান।
বেকার অবস্থায় যখন ভাগ্য ফিরিয়ে দেবার জন্য নিত্য প্রার্থনা করছেন সেই সময়ে প্রভাতোদম গত দুই দশক ধরে সংরক্ষিত সেই বিশেষ নম্বরেই লটারি খেলা অব্যাহত রাখেন। তার ভাষায়, এই নম্বরটি তার স্বামী এক রাতে স্বপ্নে পেয়েছিলেন।
এরপর একদিন মন্দির থেকে বেরিয়ে তিনি কোনও কাজে নর্থ ইয়র্কের ইয়ংগি স্ট্রিটে এক মলে যান এবং তার সর্বশেষ লোটো ম্যাক্স লটারির টিকিটের ফলাফল খুঁজে দেখেন। তিনি দেখতে পান, একটি “ফ্রি প্লে” টিকিট পেয়েছেন। তিনি এটি দিয়ে আবারও খেলার সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করতে পরছিলাম না কয়েক দিন পর ফ্রি প্লের টিকিট ৬০ মিলিয়ন ডলার এনে দেবে।”
আর এই বিরাট খবরটি তাকে জানিয়েছিলেন তার স্বামীই।
তিনি বলেন, “আমি একটি ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন স্বামীকে টিকিটটি দিই ফলাফল দেখার জন্য। আমি যখন গাড়ির কাছে
ফিরে আসি তখন তিনি আমাকে খবরটি জানান।
প্রভাতোদম বলেন, তিনি যখন দেখলেন ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বরের ড্র-তে তিনি ৬০ মিলিয়ন ডলারের দান জিতেছেন, তখন “ভীষণ আনন্দিত হন এবং একই সঙ্গে কেঁদে ফেলেন।”
“আমি সব সময়ই ঈশ্বরের কাছে বিশেষ আশির্বাদ প্রার্থনা করে এসেছি যাতে তিনি আমার পরিবারের মঙ্গল করেন।”
বিরাট লটারি জয়ের পর প্রভাতোদম বলেন, তিনি ও তার স্বামী এখন পরিকল্পনা করছেন তাদের অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে দিয়ে একটি আলাদা বাড়ি কিনবেন, সব বকেয়া বিল পরিশোধ করবেন, নিজেদের পরিবারকে সাহায্য করবেন এবং যদি নিরাপদ হয় তাহলে একবার কোথাও বেড়াতে যাবেন।
“এই অর্থ থেকে আমি আমার সন্তানদের আরও বেশি সাহায্য করতে পারবো, তারা যা-ই চাইবে, গাড়ি বা নতুন পোশাক, কিনে দিতে পারবো।” তিনি আরও যোগ করেন, “এখন আর আগের অবস্থা নেই যখন আমি তাদের তেমন কিছুই দিতে পারতাম না।” একটি বিশেষ ট্রিট হিসাবে প্রভাতোদম যোগ করেন, নিজের জন্য তিনি কিছু হিরার গয়নাও কিনবেন।