নাগরিকত্বের শপথ গ্রহনের সময় মুখ ঢেকে রাখা যাবে না
জুলাই ১১, ২০১৫
প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল মুসলমান নারীদের নেকাব ইস্যুতে পার্লামেন্টে “ওথ অব সিটিজেনশীপ এ্যাক্ট”নামে একটি বিল উত্থাপন করেছে গত ১৯ জুন। এই বিল পাশ হলে নাগরিকত্ব গ্রহনের সময় সকলকে তাদের মুখ উন্মোচন রাখতে হবে। অর্থাৎ নেকাব বা অন্য কোন কিছু দিয়ে মুখ ঢেকে রাখা যাবে না। খবর টরন্টো স্টারের।
উল্লেখ্য যে, বর্তমান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেসন কেনি ইমিগ্রেশন বিষয়ক মন্ত্রী থাকাকালে মুসলিম নারীদের নাগরিকত্বের শপথ গ্রহণের সময় নেকাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন ২০১১ সালে। পরবর্তীতে মিসিসাগায় বসবাসরত জুনেরা ইসহাক নামের একজন পাকিস্তানি মহিলা ওই নিষেধাজ্ঞার কারণে রক্ষণশীল দলের সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। তিনি তখন যুক্তি দেখান যে, তার ধর্মবিশ্বাসকে ধারণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ওই নিষেধাজ্ঞা তার অধিকারের সনদ লংঘন
করেছে। জুনেরা ইসহাকের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারী কানাডার ফেডারেল কোর্ট মুসলিম নারীদের নেকাব পরা নিয়ে এক রায় প্রদান করেন। আদালত তার রায়ে বলেন, নাগরিকত্ব লাভের জন্য শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে কাউকে তার মুখের পর্দা উন্মোচন করতে বলাটা “অবৈধ”। সরকার এ বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করতে পারে না। আদালত অবিলম্বে এই আইন প্রত্যাহার করার জন্য ফেডারেল সরকারকে নির্দেশ দেন।
আদালতের এই নির্দেশনার পাল্টা জবাব হিসেবেই সরকারের এই পদক্ষেপ। মাল্টিকালচারালইজম মন্ত্রী টিম উপাল এই বিল উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্বাস বেশীরভাগ কানাডিয়ান এবং যারা নতুন কানাডিয়ান তারাও স্বীকার করেন যে নাগরিকত্ব গ্রহনের সময় কারো মুখ ঢেকে রাখাটা অপরাধমূলক কাজ।
টিম উপালের এই বক্তব্যকে কেউ কেউ ভন্ডামী বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ উপাল নিজেই ধর্ম (শিখ) রক্ষার নামে মাথায় বিরাট পাগড়ী পরেন। জবাবে তিনি অবশ্য বলেন, ধর্মীয় কারণে পাগড়ী পরা আর নাগরিকত্ব লাভের অনুষ্ঠানে নেকাব পরে মুখমন্ডল ঢেকে রাখা এক জিনিষ নয়।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন কনজারভেটিভ সরকারের এই বিল হয়তো আর আইনে পরিবর্তিত হবে না কখনো। কারণ, পার্লামেন্ট অধিবেশন সেপ্টেম্বর ১৫ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। আসন্ন নির্বাচনের আগে বিলটি নিয়ে হয়তো আর আলোচনা হবে না।