অন্টারিওতে প্রথমবারের মতা বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস উদযাপন
মার্চ ৩০, ২০১৭
২৭ মার্চ অন্টারিও পার্লামেন্ট ভবনে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান ছিল বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস উদযাপন। অন্টারিও প্রভিন্সের প্রিমিয়ার ও অন্টারিও লিবারেল ককাস এর পক্ষ থেকে আগেই প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এই হেরিটেজ মাস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য। পার্লামেন্ট ভবনের গভার্নমেন্ট কাকাস রূমে সন্ধ্যায় শুরু হয় এই অনুষ্ঠান। শুরুতেই বাংলাদেশ ও কানাডার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। সঙ্গীত পরিবেশনায় ছিলেন বাংলাদেশী কমিউনিটির জনপ্রিয় শিল্পী ফারহানা শান্তা।
উল্লেখ্য যে, অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্টে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাস মার্চ মাসকে বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস হিসাবে ঘোষণা দেয়ার জন্য চুড়ান্ত রায় দেয়া হয় গত বছর ৫ ডিসেম্বর। অন্টারিও প্রভিন্সের লিবারেল পার্টির এমপিপি (স্কারবরো সাউথ-ওয়েস্ট) লরেঞ্জো বেরার্ডিয়ানিটি অন্টারিওতে মার্চ মাসকে বাংলাদেশী হেরিটেজ মাস হিসাবে ঘোষণা দেয়ার জন্য গত বছর একটি প্রাইভেট মেম্বার বিল উত্থাপন করেছিলেন ওন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্টে। গতবছর ২০ অক্টোবর এই বিলটির উপর প্রথা অনুযায়ি দীর্ঘ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কে অংশ নেয়া সরকারী ও বিরোধী দলীয় এমপিপি সকলেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের ভাষার আন্দোলনের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এ সবই উঠে আসে বিতর্ক অনুষ্ঠানে। এছাড়াও অন্টারিওর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এখানে বসবাসরত বাংলাদেশীদের অবদানের কথাও উঠে আসে বিতর্ক পর্বে।
বাংলাদেশ সেন্টার এন্ড কমিউনিটি সার্ভিসেস এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুব রেজা প্রবাসী কন্ঠকে জানান, মার্চ মাসকে অন্টারিওতে বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস হিসাবে ঘোষণা দেয়ার জন্য এমপিপি লরেঞ্জোর সঙ্গে অন্যান্য যারা কাজ করেছেন তদের মধ্যে আছেন এমপিপি আর্থার পটস, এমপিপি র্লন কো, এমপিপি জি মার্টো, এমপিপি জে. ফ্রেঞ্চ, এমপিপি জে. সিং এবং মন্ত্রী গ্লিন মুরে।
বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস উদযাপন অনুষ্ঠানে ক্যাথলিন উইন তার বক্তৃতায় বলেন, আমরা অনেক সুন্দর একটি স্থানে বাস করি, অনেক সুন্দর একটি প্রভিন্সে বাস করি এবং অনেক সুন্দর একটি দেশে বাস করি। আর এই সৌন্দর্যের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো এর ডাইভার্সিটি।
তিনি বলেন, এ দেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠি ছাড়া আমরা বাকি সবাই অন্য কোন দেশ থেকে এসেছি। আমরা কেউ এসেছি দারিদ্রতার কারণে, কেউ এসেছি জীবন গড়ার নতুন সুযোগ খুঁজে পাবার জন্য, কেউ এসেছি সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, কেউ এসেছি নির্যাতনের হাত থেকে বা যুদ্ধ বিগ্রহের হাত থেকে বাঁচার জন্য।
ক্যাথলিন উইন বলেন, আমরা আমাদের নিজ নিজ দেশ থেকে কানাডায় এসেছি একটি নতুন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলার জন্য এবং তা আমরা গড়েছি যা বাংলাদেশ থেকে ভিন্ন, স্কটল্যান্ড থেকে ভিন্ন, পর্তুগাল থেকে ভিন্ন এবং অন্যান্য আরো বহু দেশ থেকে ভিন্ন।
আমরা আমাদের নিজ নিজ সংস্কৃতি এ দেশে এনে এখানকার সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছি। অন্টারিও একটি ভিন্ন স্থান যেখানে মানুষজন নিজ নিজ এথনিক পরিচয়কে তুলে ধরতে পারে এবং একই সাথে অনুভব করতে পারে এখানকার মাল্টিকালচারাল সমাজব্যবস্থার সঙ্গে একাত্মতারও। ফলে অন্টারিওর সমাজব্যবস্থায় আমরা সবাই মিলে অনেক শক্তিশালী।
ক্যাথলিন উইন আরো বলেন, কানাডা প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি যে দেশটি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। আজ অন্টারিও প্রভিন্স মার্চ মাসকে বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
প্রিমিয়ার ক্যাথলিন উইনীর বক্তব্য শেষে বাংলাদেশের একটি নৃত্য পরিবেশত হয়।