টরন্টোতে দক্ষিণ এশিয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এর সফল সমাপ্তি

জুন ৯, ২০১৫

প্রবাসী কন্ঠ : অত্যন্ত জাকজমক আয়োজনের মধ্য দিয়ে টরন্টোতে এবার সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নর্থ আমেরিকার সর্ববৃহৎ ‘দক্ষিণ এশিয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৫’। বিপুল সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতির কারণে পরিবেশটি হয়ে উঠেছিল সত্যিকার অর্থেই উৎসবমুখর। এই চলচ্চিত্র উৎসবে এবারই প্রথম প্রদর্শিত হয় বাংলাদেশের ৩ টি পূর্ণদৈর্ঘ চলচ্চিত্র। বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ছাড়াও উৎসবে হিন্দি, উর্দু, মালয়লাম, মারাঠি, আরবী ও তামিল ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। ইংরেজী ও ফ্রেঞ্চ ভাষার কয়েকটি চলচ্চিত্রও প্রদর্শিত হয় উৎসবে।

ফেস্টিভালের দুটি অংশ ছিল। একটি দক্ষিণ এশিয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এবং অন্যটি পাঞ্জাবী আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। পাঁচদিনব্যাপী এই উৎসবে বাংলাদেশী চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয় ১৭ মে। বেলা ১ টা থেকে শুরু করে রাত ১০ টা পর্যন্ত চলে এ প্রদর্শনী। উৎসব উপলক্ষে স্কারবরোর এগলিংটন টাউন সেন্টারের সিনেপ্লেক্স এ যে তিনটি বাংলা চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয় সেগুলো হল- শাহ আলম কিরণের ‘একাত্তরের মা জননী’, আশরাফ শিশিরের ‘গাড়িওয়ালা’ ও রিয়াজুল রিজুর ‘বাপজানের বায়োস্কোপ’। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ছাড়াও ঐ দিন পশ্চিম বঙ্গের দুটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। ঐ দুটি চলচ্চিত্রের নাম ‘কলকাতা কলিং’ এবং ‘রে’।

একাত্তরের মা জননীর কাহিনী লিখেছেন আনিসুল হক। এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নিপুন আক্তার, আগুন, এমএম মোশেদ, মিশু চৌধুরী ও চিত্রলেখা গুহ। গড়িওয়ালা চলচ্চিত্রে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আসাদ ও রোকেয়া প্রাচী। বাপজানের বায়োস্কো চলচ্চিত্রটির কাহিনী লিখেছেন মাসুম রেজা। প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, শতাব্দী ওয়াদুদ ও সনজিদা তন্ময়। অন্যদিকে কলকাতা কলিং এর পরিচালক হলেন মিয়ানাক ভৌমিক। এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মুনমুন সেন, রাইমা সেন, রিয়া সেন ও সম্রাট চক্রবর্তী। রে চলচ্চিটির পরিচালক হলেন রিঙ্গো ব্যানার্জি। প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জয়সেন গুপ্তা, বরুন চন্ডা ও কৌশিক গাঙ্গুলী।

সাউথ এশিয়ান এই ফেস্টিভালের মিশন ছিলো, কানাডায় সাউথ এশিয়ান সংস্কৃতির সঙ্গে অন্যসব সংস্কৃতির মানুষের পরিচয় ঘটিয়ে দেওয়া যাতে একটি ক্রস কালচার ও ক্রস ব্রিজ তৈরী হতে পারে।

এবারের দক্ষিণ এশিয়ান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে ঢাকা থেকে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক শহীদুজ্জামান সেলিম। আরো এসেছিলেন অভিনেত্রী নিপুন আক্তার, লেখক ও সাংবাদিক অরুন চৌধুরী। অভিনেতা রোকেয়া প্রাচীর আসার কথাত থাকলেও ব্যস্ততার কারনে শেষ মুহুর্তে তিনি তার অপারগতার কথা জানান।

১৭ মে চলচ্চিত্র উৎসবের দিন বিকেল ৩ : ৩০ মিনিটে শুরু হয় রেড কার্পেট রিসেপশন। এই অনুষ্ঠান চলে ৩০ মিনিট। রিসেপশন অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে আগত অতিথিগন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন টরন্টোর বিচেস ইস্ট ইয়র্ক এলাকার এমপি ম্যাথিও ক্যালওয়ে, স্কারবরো সাউথ ওয়েস্ট এর এমপি ড্যান হ্যারিস, বাংলাদেশ থেকে আগত এমপি মাহজীবন খালেদ, বিচেস ইস্ট ইয়র্ক এলাকার সিটি কাউন্সিলর জেনেট ডেভিস’সহ বাংলাদেশী কমিউনিটির কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম, নিপুন ও লেখক অরুন চৌধুরীর হাতে সম্মানার সার্টিফিকেট তুলে দেন এমপি ম্যাথিউ ক্যালওয়ে। এ সময় উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন শহীদুজ্জামান সেলিম, অরুন চৌধুরী ও নিপুন। এমপি ম্যাথিও ক্যালওয়ে, এবং কাউন্সিলর জেনেট ডেভিসও বক্তব্য রাখেন।

রেড কার্পেট রিসেপশন অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আনোয়ার আজাদ যিনি ফেস্টিভালের এক্সিকিউটিভ কমিটির পরিচালক (বেঙ্গলী এ্যাফেয়ার্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাকে সহযোগিতা করেন লায়ন সালাম ও ফওজিয়া শান্তা, আজিজ ভুইয়া ও সুব্রত নন্দী। রেড কার্পেট রিসেপশন শেষে প্রবাসী দর্শকদের সঙ্গে ফটো

সেশনে যোগ দেন অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম ও নিপুন। এই সময় এমপি ম্যাথিও ক্যালি ও কাউন্সিলর জেনেট ডেভিসও দর্শকদের অনুরোধে ফটো সেশনে যোগ দেন।