অন্টারিও’র পার্লামেন্ট নির্বাচন : কে হচ্ছেন পরবর্তী প্রিমিয়ার?
প্রবাসী কণ্ঠ : আগামী ২ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অন্টারি প্রভিন্সের ৪৩তম সাধারণ নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী প্রধান ৩ টি দল হচ্ছে- প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টি অফ অন্টারিও, অন্টারিও নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং অন্টারিও লিবারেল পার্টি।
অন্টারিও পার্লামেন্টে মোট আসন সংখ্যা ১২৪ টি। নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে মোট আসন পেতে হবে ৬৩ টি।
ড্যাগ ফোর্ডের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ক্ষমতাসীন দল প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টি গত সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করেছিল। দলটি সেই সময়কার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি অফ অন্টারিওকে গো-হারা হারিয়ে ক্ষমতায় আসে। লিবারেল পার্টি অফ অন্টারিও সেই সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়েই পার্লামেন্টে অবস্থান করছিল। কিন্তু কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে তাদের শোচনীয় পরাজয় ঘটে। এমনকি পার্লামেন্টে বিরোধী দলের মর্যাদাও হারায় তারা। বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে হলে কমপক্ষে ৮ টি আসন পেতে হয়। তারা আসন পেয়েছিল ৭ টি।
এবারের নির্বাচন হচ্ছে এমন একটি সময় যখন করোনা মহামারীর ষষ্ঠ ডেউ চলছে অন্টারিওতে। মহামারীর যন্ত্রণায় মানুষজন অতিষ্ঠ, ক্লান্ত, বিপর্যস্ত এবং চরম বিরক্ত। এরকম পরিস্থিতে গত বছর ২০ সেপ্টেম্ব কানাডার জাতীয় নির্বাচন (ফেডারেল) অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ফলাফলে কোন পরিবর্তন হয়নি। তার আগের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টি আসন পেয়েছিল ১৫৭ টি। গত সেপ্টেম্বরে নির্বাচনে তারা আসন পায় ১৫৮ টি। মাত্র একটি আসন বেশী। উল্লেখ্য যে কানাডার গত ফেডারেল নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগেও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিল ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টি। আর সেই কারণেই দলটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আগাম নির্বাচনের যাতে করে সংখ্যালঘুর নড়বড়ে অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু তাদের সেই আশা পূরণ হয়নি।
কিন্তু অন্টারিওতে কোন আগাম নির্বাচন হচ্ছে না। কারণ, ক্ষমতাসীন দল নড়বড়ে অবস্থানে নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়েই তারা পার্লামেন্টে আছে। বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ পুরণ হবার পর নিয়ম অনুয়ায়ী আগামী ২ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহে পরিচালিত বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দেখা যাচ্ছে ড্যাগ ফোর্ডের নেতৃত্বাধীন প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টি আবারো পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েই সরকার গঠন করবে। অন্যদিকে স্টিভেন ডেল ডুকার নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি অফ অন্টারিও বর্তমানে জনপ্রিয়তার মাপে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। আর তৃতীয় অবস্থানে আছে এন্ড্রিয়া হোরয়াথ এর নেতৃত্বাধীন অন্টারিও নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি। মাইক শ্রেইনার এর নেতৃত্বাধীন গ্রীন পার্টি অফ অন্টারিও চতুর্থ স্থানে।
অন্টারিও’র বর্তমান পার্লামেন্টে প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টি অফ অন্টারিও’র আসন সংখ্যা ৭৬ টি, অন্টারিও নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির আসন সংখ্যা ৪০ টি, অন্টারিও লিবারেল পার্টির আসন সংখ্যা ৭টি, গ্রীন পার্টি অফ অন্টারিও’র আসন সংখ্যা ১ টি। নিউ ব্লু পার্টি অফ অন্টরিও’র আসন সংখ্যা ১ টি, অন্টারিও পার্টি’র আসন সংখ্যা ১ টি এবং স্বতন্ত্র এমপিপি আছেন ৬ জন।
এবারের নির্বাচন নিয়ে জরিপ প্রতিষ্ঠানসমূহের ভবিষ্যত বাণী যাই হোক, চূড়ান্ত ফলাফল কি হবে সেটা সময়ই বলে দিবে। কারণ, ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবারই দেখা গেছে জরিপ প্রতিষ্ঠানসমূহের ভবিষ্যত বাণী সঠিকভাবে ফলেনি। নির্বাচনের ঠিক আগমূহুর্তে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। উদাহরণ হিসাবে ২০১৫ সালের ফেডারেল নির্বাচনের কথা বলা যেতে পারে। ঐ বছর নির্বাচনের আগে প্রথম অবস্থায় দেখা গিয়েছিল জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা অনেক কম। প্রধান ৩ দলের মধ্যে লিবারেল পার্টির প্রতি ভোটারদের সমর্থন ছিল সবার পিছনে। কিন্তু ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছিল ততই জাস্টিন ট্রুডো ও তার দলের প্রতি ভোটারদের আস্থা ও সমর্থন বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এবং নির্বাচনের দিন দেখা গেল জাস্টিন ট্রুডো সাবইকে অবাক করে দিয়ে বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগড়িষ্ঠতা পাওয়ার জন্য যে কয়টি আসন প্রয়োজন ছিল তার চেয়েও বেশী আসনে জয় লাভ করে লিবারেল পার্টি।
অন্টারিও’র এবারের সাধারণ নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দেওয়ার আগে যে যে বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন তার মধ্যে প্রথম ৫ টি ইস্যু হলো, স্বাস্থ্য সেবা, প্রতিদিনের খরচে সাহায্য পাওয়া, মহামারী নিয়ন্ত্রণ, টেক্স কমানো এবং আবাসন আরো সাশ্রয়ী মূল্যের করা। গ্লোবাল নিউজের জন্য পরিচালিত ‘Ipsos poll’ এর জরিপে এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
জরিপে দেখা গেছে ৩১% ভোটার বলেছেন, তারা কাকে ভোট দিবেন তা নির্ভর করছে স্বাস্থ্য সেবাকে কোন দল শীর্ষ তিন ইস্যুর মধ্যে একটি হিসাবে গুরুত্ব দিচ্ছে তার উপর। আর ২৫% ভোটার বলেছেন, তারা কাকে ভোট দিবেন তা নির্ভর করছে কভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণকে কোন দল শীর্ষ তিন ইস্যুর মধ্যে একটি হিসাবে গুরুত্ব দিচ্ছে তার উপর।
এদিকে ২৪% ভোটার বলেছেন তারা ভোট কাকে দিবেন তা নির্ভর করছে শীর্ষ তিন ইস্যুর মধ্যে কর কামানোকে যারা গুরুত্ব দিবেন। আর ২২% ভোটার বলেছেন প্রতিদিনের ব্যয়ের ক্ষেত্রে সহায়তা পাওয়াকে তারা শীর্ষ তিন ইস্যুর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করছেন। এবং ২১% বলেছেন সাশ্রয়ী আবাসনকে তারা শীর্ষ তিন ইস্যুর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করছেন। ভোট দেওয়ার আগে ভোটারদের কাছে আরো যে ইস্যুগুলো গুরুত্ব পাচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হলো : অর্থনীতি ও চাকরী (১৭% ভোটারের কাছে), ক্লাইমেট বা জলবায়ু পরিবর্তন (১৫% ভোটারের কাছে), কম খরচের বিদ্যুৎ (১৪% ভোটারের কাছে), মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসার উদ্যোগ (১৪% ভোটারের কাছে) এবং দরিদ্র ও গৃহহীনদের জন্য কম খরচে/সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন তৈরী করা (১৩% ভোটারের কাছে)।
ইপসোস পাবলিক এ্যাফেয়ার্সের প্রধান নির্বাহী ড্যারেল ব্রিকার গ্লোবাল নিউজকে বলেন, শীর্ষ সমস্যাগুলোর তালিকাটি ‘আশ্চর্যজনক’। তার দৃষ্টিতে সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসাবে সামনে এসেছে। এরপরই আছে কভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি।
এর পর বাকি সবকিছুই সামর্থ্য এবং জীবনযাত্রার খরচ সম্পর্কে বিশেষ করে দৈনন্দিন গ্রোসারী এবং গাড়ির জ¦ালানী খরচ, কর কমানো এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য আবাসনকে আরো সাশ্রয়ী করে তোলার বিষয়গুলো নির্বাচনের ইস্যু হিসাবে ভোটারদের সামনে এসেছে।
জরিপ প্রতিষ্ঠান ‘Ipsos poll’ আরো জানতে চেয়েছিল শীর্ষ সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার জন্য কোন দলকে সবচেয়ে যোগ্য মনে করছেন ভোটারগণ? এ প্রশ্নের জবাবে তারা যা বলেন তা নিন্মরূপ:
এদিকে গত কয়েকদিনে নির্বাচনী জরিপ ফলাফলে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ আগে প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টির তুলনায় লিবারেল পাটি অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও ভোটের দিন এগিয়ে আসার সাথে সাথে তাদের জনপ্রিয়তা কিছুটা মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্লোবাল নিউজের জন্য করা Ipsos poll এর জরিপে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ২১ এপ্রিল প্রকাশিত ঐ জরিপে দেখা যাচ্ছে ২২ এপ্রিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বর্তমান ক্ষমতাসীন প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টি ভোট ভোট পেত ৩৫% এবং লিবারেল পার্টি ভোট পেত ৩২% ভোট। আর এনডিপি পেত ২৩% ভোট। এই ফলাফলে দেখা যাচ্ছে লিবারেল পার্টি আগের তুলনায় ৪ পয়েন্ট এগিয়েছে।
জরিপে আরো দেখা গেছে বয়স এবং অবস্থানের ভিত্তিতে ভোটাররা বিভক্ত অবস্থানে আছেন। বয়স্ক ভোটারদের মধ্যে প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যাদের বয়স ৫৫ বা তারও বেশী তাদের মধ্যে ৪৩% বলেছেন তারা প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টিকে ভোট দিবেন। এই বয়স গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে লিবারেলকে ভোট দিবেন ২৮% এবং এনডিপি-কে ২১%।
যাদের বয়স ৩৫ থেকে ৫৪ এর মধ্যে তাদের ৩৫% বলেছেন তারা প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টিকে ভোট দিবেন। আর লিবারেল ও এনডিপি-কে ভোট দিবেন যথাক্রমে ৩০% এবং ২৩%। গ্রীন পার্টির জন্য এই বয়সীদের মধ্যে সমর্থক রয়েছেন ৭%।
তবে অপেক্ষাকৃত তরুণ বয়সীদের মধ্যে লিবারেল পার্টির সমর্থক বেশী দেখা যাচ্ছে প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টির তুলনায়। Ipsos poll এর জরিপে বলা হচ্ছে যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৪ এর মধ্যে তাদের ৩৯% ভোট দিবেন লিবারেল পার্টিকে। এনডিপি রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে এবং প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ তৃতীয় স্থানে। তারা এই বয়স গ্রুপের কাছ থেকে ভোট পাবেন যথাক্রমে ২৫% এবং ২৪%।
নির্বাচনে ভোট পাবার জন্য কোন দল
কি কি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে
প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টি অফ অন্টারিও : ভোট পাবার আশায় ২১ এপ্রিল পর্যন্ত প্রগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্র্টি যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা বাস্তবায়নে ১০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী খরচ হবে সরকারের। তবে প্রতিশ্রুতি প্রদান এখনো শেষ হয়নি। আগামী কয়েক সপ্তাহে আরো প্রতিশ্রুতি আসবে এমনটাই বলছেন পর্যবেক্ষক মহল। সিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়। দলের প্রধান ড্যাগ ফোর্ড ইতিমধ্যেই অন্টারিও’র গাড়ির মালিকদেরকে লাইসেন্স প্লেট রিনিউ করার টাকা ফেরত দিয়েছেন বা দিচ্ছেন যার পরিমাণ ১.১ বিলিয়ন ডলার। টাকা লাগবে না টরন্টোর নিকটবর্তী ডারহাম এলাকায় কয়েকটি হাইওয়েতেও যেখানে আগে টুল বা শুল্ক নেয়ার ব্যবস্থা ছিল। ব্র্যাম্পটনে হাসপাতালের ধারণক্ষমতা বর্ধিতকরণের জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। অশোয়া এবং ইনগারসোল এলাকার বাসিন্দাদের নতুন কর্মসংস্থানের জন্য ২৫৯ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আশ^াস দিয়েছেন তিনি জেনারেল মটর্স এর পিছনে। এছাড়াও ‘হোন্ডা কানাডা’, ইলেক্ট্রনিকস জায়েন্ট ‘LG’, অটোমেকার ‘ Stellantis’ এই সকল বৃহৎ কোম্পানীর জন্যও ফান্ড যোগাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ফোর্ড। গ্যাস ও জ্বালানি টেক্স বা কর কমানোরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আগামীতে। টরন্টোর সেন্ট জোসেফ হেলথ সেন্টারের ভবিষ্যত পুনঃউন্নয়নের জন্য ১ বিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ড্যাগ ফোর্ড। এছাড়াও স্কারবরো, বেরী, ব্রান্টফোর্ড, ব্র্যাম্পটন এবং অটোয়ার কয়েকটি হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ফোর্ড।
লিবারেল পার্টি অফ অন্টারিও : নির্বাচনের আগে লিবারেল পার্টি অফ অন্টারিও যে সকল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো হেলথ কেয়ার ও ওয়ার্কারদের জন্য ন্যূনতম ঘন্টায় ২৫ ডলার বেতন বৃদ্ধি। হেলথ প্রফেশনালদের জন্য গ্যারান্টিড মেন্টাল হেলথ সার্ভিস। সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে দলটি যার মধ্যে আছে, হোম কেয়ারের গ্যারান্টি দিয়ে নিজ বাড়ি বা বাসায় থাকার ব্যবস্থা সহজ করা হবে সিনিয়রদের জন্য। আর যখন আরো বেশী সাপোর্ট দরকার হবে তখন তাদেরকে এমন লং-টার্ম কেয়ার হোমে স্থানান্তর করা হবে যেখানে তারা অনুভব করবেন তারা নিজ বাড়ি বা বাসাতেই আছেন, কোন গুদামে নয়। এর জন্য লং-টার্ম হোমগুলোকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হবে। সিনিয়র সিটিজেনরা যাতে তাদের প্রাপ্য মর্যাদা এবং যত্ন পান সে ব্যাপারে লিবারেল কাজ করে যাবে।
স্কুল এবং পুলিশ বিভাগে পদ্ধতিগত বর্ণবাদ অবসানের জন্যও লিবারেল কাজ করে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়াও অন্টারিতে কর্মরত মহিলারা যাতে পুরুষের পাশাপাশি একই কর্মের জন্য সমান বেতন ও সমান সুযোগ সুবিধা পান তার জন্য কাজ করবে। অন্টারিও’র সাধারণ কর্মজীবীদের ন্যূনতম মজুরী ঘন্টায় ১৬ ডলার করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লিবারেল নেতা ডেল ডুকা। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারীর মধ্যেই এই আইন বলবৎ করা হবে। মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট টেক্স দুই বছরের জন্য বাদ দেওয়া হবে।
অন্টারিও নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি : নির্বাচনে জয়ী হলে এনডিপি যা যা করবে তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে গত ২৫ এপ্রিল। এর মধ্যে অন্যতম হলো ইউনিভার্সাল ফার্মাকেয়ার এবং ডেন্টাল কেয়ার। ১০ হাজার পার্সোনাল সাপোর্ট ওয়ার্কার নিয়োগ করা হবে এবং তাদের বেতনও বৃদ্ধি করা হবে। ইমিগ্রেন্ট নার্সদের ক্রিডেন্সিয়ালকে স্বীকৃতি দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। উত্তর অন্টারিও’র জন্য ৩ শত ফ্যামিলি ডাক্তার, ১ শত স্পেশালিস্ট এবং ৪০ জন মানসিক চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের পরিবারের জন্য কর স্থগিত করা হবে। নতুন পাবলিক এবং নন-প্রফিট হোম নির্মান করা হবে। কমুউনিটি কেয়ার এবং লং-টার্ম কেয়ার সিস্টেমে পঞ্চাশ হাজার নতুন ও আধুনিক বেড নির্মান করা হবে। প্রতি বছর ১ ডলার করে ন্যূনতম মজুরী বৃদ্ধি করে ২০২৬ সালের মধ্যে তা ঘন্টায় ২০ ডলারে উন্নীত করা হবে। সপ্তাহে চার কর্মদিবসের একটি পাইলট প্রজেক্ট চালু করা হবে। রেজিস্টার্ড আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেটরদের জন্য বেতন ঘন্টায় ২৫ ডলার করা হবে। আগামী দশ বছরে এক লক্ষ স্যোসাল হাউজিং বা সরকারী এপার্টমেন্ট নির্মান করা হবে স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য। গ্যাসের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা হবে।