কানাডার সেরা কর্মস্থল যেগুলো
অক্টোবর ১১, ২০১৮
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক: কানাডায় কাজ করার জন্য সবচেয়ে সেরা স্থানের মর্যাদা পেয়েছে শ্যাটে ফ্রন্টেনাক ও দ্য ফেয়ারমন্ট ব্যঁফ স্প্রিংস-এর মতো কানাডার বিশিষ্ট হোটেল পরিচালনাকারী সংস্থাটি। চাকরি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট ইনডিড-এর এক নতুন সমীক্ষায় এ কথা বলা হয়েছে।
নিয়োগদাতাদের জন্য পাঁচটি ভিন্ন মানদন্ড নির্ধারণ করে তার ভিত্তিতে চালানো সমীক্ষায় শ্রেষ্ঠ কর্মস্থলের মর্যাদা লাভ করেছে ফেয়ারমন্ট হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্ট। যেসব মানদন্ড বিবেচনায় সমীক্ষা চালানো হয় তার মধ্যে রয়েছে: কর্ম ও ব্যক্তি জীবনের মধ্যে ভারসাম্য; বেতন ও সুবিধাদি; চাকরির নিশ্চয়তা ও অগ্রিম প্রদান এবং ব্যবস্থাপনা ও সংস্কৃতি।
ইনডিড কানাডার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজ. জোডি ক্যাস্টেন বলেন, ২০১৬ সাল থেকে ফরাসী বৃহত্তর হোটেল গ্র“প অ্যাকর্ডহোটেলস-এর মালিকানাধীন ফেয়ারমন্ট পরিচালিত হয় করপোরেট কালচারের আওতায়। এটা এমন এক কর্মস্থল যেখানে আপনি “সর্বনিম্ম স্তরের পদে যোগ দিয়েও একের পর এক ধাপ পেরিয়ে সর্বোচ্চ পদে ওঠার সুযোগ পাবেন” যা এখনকার সময়ে অনেক কর্মস্থলেই বিরল।
কানাডার হাফিংটন পোস্ট পত্রিকাকে টেলিফোনে ক্যাস্টেন বলেন, “এটি এমন একটি পরিবেশ যেখানে কর্মীরা সচ্ছন্দ বোধ করে এবং মনে করে যে তাদেরকে বুকে জড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ইনডিডের তালিকায় যে ২৫টি সেরা কোম্পানি ছাঁই পেয়েছে তার সবগুলোর ক্ষেত্রেই কথাটা সত্যি।
তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রিটিশ কলাম্বিয়াভিত্তিক নির্মাণ প্রতিষ্ঠান লেডকর। আর তার ঠিক পেছনে তৃতীয় অবস্থান দখল করেছে ক্রেডিট কার্ড ব্যবসার বৃহৎ প্রতিষ্ঠান আমেরিকান এক্সপ্রেস।
কানাডার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও তালিকার উপরের দিকের জায়গাগুলো দখল করেছে। দেশটির বৃহত্তম ব্যাংকগুলোর মধ্যে পাঁচটি ইনডিডের তালিকায় স্থান পেয়েছে (এর মধ্যে আসতে পারেনি বিখ্যাত স্কশিয়াব্যাংক)।
ক্যাস্টেন বলেন, “এসব প্রতিষ্ঠান যা করছে তা হলো আমাদের সবগুলো মানদন্ডের সুচারু সমন্বয়। তারা সত্যিই কর্মচারীদের খুব ভালো সুযোগ-সুবিধা দেয়, কর্ম ও ব্যক্তিজীবনের মধ্যে ভারসাম্য বিধানের সুযোগ দেয়, তারা কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার সময়টুকুও হিসাব করে এবং ঘরে বসে কাজ করারও সুযোগ দেয়, তাদের অগ্রিম গ্রহণের ব্যবস্থা আছে এবং তাদের প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোও বিবেচিত হয়। অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ বলতে কী বোঝায় তারা সত্যিই সেটা নিয়ে ভাবেন।”
ক্যাস্টেন বলেন, কানাডার চাকরির বাজার খুব দুরূহ হয়ে ওঠার পরও যখন দেশটিতে চার লাখ চাকরির পদ খালি আছে তখন কোম্পানিগুলোর সাংস্কৃতিক পরিবেশও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তার ভাষায়, “একটি বিষয় সম্ভবত সিদ্ধান্তমূলক হয়ে ওঠে যে, আমি আপনার কোম্পানিতে কাজ করবো নাকি অন্য কোনও কোম্পানিতে যোগ দেবো।” ইনডিডের আগের এক জরিপে যেমনটা দেখা গিয়েছিলো যে, ৯২ শতাংশ কানাডীয় নাগরিক চাকরির সুযোগ লাভের জন্য সবার আগে যে জিনিসটি গুরুত্ব দিয়ে ভাবে সেটি হলো নিয়োগদাতা কোম্পানির সুনাম।
ক্যাস্টেন কোম্পানিগুলোকে পরামর্শ দেন যে, তারা কর্মচারীদের জন্য গ্রীষ্মকালীন পার্টির আয়োজন বা বাইরের কর্মকান্ডের আয়োজন করতে পারে এবং এর পাশাপাশি কর্মচারীদের চাকরির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়নমূলক নানা ধরণের কোর্সের অফার দিতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন যে, “এটা আসলে পরিবেশেরই অংশÑ কোনওরকম প্রতিশোধের পথে না গিয়ে খোলাখুলিভাবে কর্মচারীদের কাছ থেকেই প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়ার সক্ষমতা। যেসব কোম্পানি সাংস্কৃতিক মানদন্ডে ভাল করেছে তারা প্রায়শ কর্মচারীদের কাছ থেকে মতামত জানতে চায়। আপনি যদি আপনার পণ্য বা সেবার ব্যাপারে অন্যের মতামতই না পেলেন তাহলে সেগুলোর উন্নয়ন ঘটাবেন কিভাবে?” সেরা প্রতিষ্ঠান চিহ্ণিত করতে ইনডিড ছয় লাখ কোম্পানির ওয়েবসাইট ঘেটে তাদের পর্যালোচনা রিপোর্ট (রিভিউ) পর্যালোচনা করেছে। যেসব কোম্পানির ওয়েবসাইটে ৫০টি বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক পর্যালোচনা রিপোর্ট রয়েছে সেগুলোকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় নিয়ে এসেছে ইনডিড। এর ফলে বৃহৎ কোম্পানিগুলোই তালিকায় স্থান পেয়েছে।