ল্যান্ডফোন কেলেঙ্কারীর মাধ্যমে টরন্টোবাসীর কাছ থেকে ৫১ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র
মার্চ ১৩, ২০১৮
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক , ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ : সম্প্রতি টেলিফোনে প্রতারণার মাধ্যমে পাঁচ ব্যক্তির কাছ থেকে সর্বমোট ৫১ লাখ ডলার হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর টরন্টোর পুলিশ একটি সতর্কবার্তা জারি করেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সারা দেশে শত শত মানুষকে এ ধরনের প্রতারণার শিকারে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়েই দুর্বৃৃত্তরা কাজ করছে।
ডিটেকটিভ সার্জেন্ট ইয়ান নিকোল বলেন, গত নভেম্বর থেকে এই বিষয়টি সামনে আসে যখন প্রতারিতরা জানান যে তারা একজন খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে ফোনকল পেয়েছেন এই বলে যে, তারা ক্রেডিট কার্ডে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, টেলিফোনকারী প্রতারণার শিকার ব্যক্তিটিকে লাাইনে থাকতে বলে ৯১১ নম্বরে অথবা ওই ব্যক্তির ব্যাংকে কল করে এবং ল্যান্ডফোনে প্রযুক্তির একটি বিশেষ সুবিধার সুযোগ নিয়ে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এমন এক ব্যক্তির কাছে কল ডাইভার্ট করে যে নিজেকে পুলিশের গোয়েন্দা কিংবা ব্যাংকের প্রতারণা বিষয়ক তদন্তকারী হিসাবে দাবি করে।
নিকোল বলেন, ব্যাংকের প্রতারণা বিষয়ক তদন্তকারী হিসাবে পরিচয় দেওয়া লোকটি তখন প্রতারিত ব্যক্তিকে তার সম্পদ তুলে নেওয়ার এবং ভিন্ন কোথাও সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। আর এতে করে তাদের ক্রেডিট কার্ডের জন্য
ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টিকারী প্রতারণার অতিরঞ্জিত অভিযোগ সম্পর্কে কথিত তদন্ত সম্পন্ন হয়ে যায়।
পুলিশ বলছে, এরপর প্রতারিত ব্যক্তিরা তাদের অর্থ প্রতারকদের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেওয়ার বার্তা দেয়। কথিত “তদন্ত” অব্যাহত রাখার স্বার্থে তাদের ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে এইসব কর্মকা- গোপন রাখতে বলা হয়।
নিকোল বলেন, “এধরণের অসংখ্য প্রতারণার চেষ্টা থেকে বোঝা যায় যে, এটি দৃশ্যত সত্যিই একটি ব্যাপকভিত্তিক বিপণন কর্মসূচি।”
পুলিশ আরও জানায়, এমন সব উদাহরণ রয়েছে যা থেকে আভাস পাওয়া যায় যে, টেলিফোনকারীদের কাছে সম্ভাব্য প্রতারিত ব্যক্তির ব্যাংকিং সম্পর্কিত কিছু তথ্য তারা আগে থেকেই জানতো।
এই কর্মসূচিতে আপাতদৃষ্টিতে কেবল ল্যান্ডফোন গ্রাহকদেরই টার্গেট করা হয়েছে, সেলফোন ব্যবহারকারীদের নয়। নিকোল সাংবাদিকদের বলেন, “প্রতারিত ব্যক্তিকে গোপনীয়তার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে স্বমতে আনার প্রয়াস দেখা গেছে। তারা প্রতারিত ব্যক্তিকে এমনটা বুঝিয়েছে যে, ব্যাংকের কর্মকর্তারা তার ব্যাংকিং সম্পর্কে তদন্ত করছেন। অবশ্য এটাও তাদের বানোয়াট তথ্য।”
তিনি আরও বলেন, এরপর টেলিফোনকারীরা বেশ কিছুদিন ফোন করা থেকে বিরত থাকে। তারা নিশ্চিত হতে চায় যে, অর্থ তুলে নেওয়া এবং তাদের নির্দেশিত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের পর প্রতারিত ব্যক্তি সেই অর্থ ফিরে পাওয়ার জন্য কোনও রকম প্রয়াস চালাচ্ছে কি না।”
পুলিশ এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজনদের ব্যাপারে কোনও বিবরণ লিপিবদ্ধ করতে পারেনি। তবে বিস্তারিত না জানিয়ে নিকোল বলেছেন, টরন্টোর প্রতারণার সঙ্গে “বিদেশি” মহলের যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বলেছেন, তদন্তকাজে টরন্টো পুলিশকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।