কানাডার রাজনীতি : কেমন গেল ২০১৬ সাল?
জানুয়ারী ৭, ২০১৭
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কালের গর্ভে হারিয়ে গেল আরেকটি বছর ২০১৬। এই সময়ে বিশ্বজুড়েই ঘটেছে অনেক ঘটনা আর অঘটনা। বিশ্ব রাজনীতিতে ছিল উত্তাল ঢেউয়ের ক্রমাগত আঘাত। ঘটেছে অনেক নাটকীয় ঘটনা। জঙ্গীবাদ ছিল বছরজুড়ে আলোচনা ও আতংকের বিষয়। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ এ বছর পঞ্চম বর্ষে প্রবেশ করেছে। যুদ্ধে নিহত হয়েছেন প্রায় পাঁচ লাখের মত সিরিয় নাগরিক আর দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন প্রায় ৮৫ লাখ।
গোটা ইউরোপজুড়ে এবছর উদ্বাস্তু সমস্যা বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে সেই সাথে মানবতা কি ভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে তাও প্রত্যক্ষ করেছেন বিশ্ববাসী।
বিশ্ববাসী আরো প্রত্যক্ষ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের প্রস্থান ও প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের পদত্যাগ। ইউরোপ ও আমেরিকাজুড়ে এন্টি ইমিগ্রেন্ট মনোভাব বৃদ্ধিও প্রত্যক্ষ করেছেন বিশ্ববাসী। বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ছিল আলোচনার অন্যতম এক ইস্যু বিতর্কিত ব্যক্তি ডোনাল্ড ট্রাম্প এর কারণে। এই বছর মৃত্যুবরণ করেন কিউবার লৌহমানব ফিদেল ক্যাস্ট্রো।
ইউরোপের ফ্রান্স, জার্মানী এবং ব্রাসেলস এ জঙ্গী হামলা, যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডোতে জঙ্গী হামলা ও ঢাকার গুলশানে জঙ্গী হামলাও ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। জঙ্গী হামলা ঘটেছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুরেই যার বিবরণ দিতে গেলে কয়েক হাজার পৃষ্ঠা লেগে যাবে। আর বছরের শেষ দিনে নিউইয়ার্স ইভসে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে তুরস্কে।
২০১৬ সালটি কানাডার জন্যও ছিল অনেক ঘটনাবহুল বছর। এই সময়ে কানাডার রাজনীতিও বারবার উত্তাল হয়ে উঠেছে বিভিন্ন ইস্যুতে। কানাডা আলোচিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও। এই সময়টাতে কানাডায় সবচেয়ে বেশী আলোচিত ঘটনাসমূহের মধ্যে ছিল সবচেয়ে নিকট প্রতিবেশী আমেরিকার নির্বাচন ইস্যু, সিনেট ইস্যু, পাইপলাইন ইস্যু, ইমিগ্রেশন ইস্যুসহ আরো বেশ কিছু ইস্যু।
আমেরিকার নির্বাচন সারা বিশ্বে যেমন আলোচনার অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে দাড়িয়েছিল তেমনি ইস্যু হয়ে দাড়িয়েছিল কানাডার রাজনৈতিক মহল সহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও। আর এর প্রধান কারণ ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হবার পর বিতর্কের ঝড় বয়ে গেছে কানাডায়। আমেরিকার বিভিন্ন শহরের পাশাপাশি টরন্টো ও ভেঙ্কুভারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই উন্মত্ত প্রকৃতির ব্যক্তিটিকে নিয়ে কানাডার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিকদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠার শেষ ছিলনা। নির্বাচনের পর পরিচালিত এক জরীপে দেখা গেছে অধিকাংশ কানাডিয়ানই ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়াটাকে একেবারেই ভাল চোখে দেখেননি। তারা স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কারণে তারা খুব অসন্তুষ্ট। কানাডায় চরম ভাবে এই অসন্তুষ্ট লোকের সংখ্যা শতকরা ৫৩ ভাগ। কানাডার বাণিজ্যিক খাতগুলোও ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বলে মনে করছেন শতকরা ৫৭ ভাগ নাগরিক।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অবশ্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কৌশলগত কারণে এবং কানাডা সফরের আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। তবে ট্রাম্পের ব্যাপারে তাঁর ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশের ক্ষেত্রে তিনি পুরোপুরি নীরবতা পালন করে আসছেন শুরু থেকেই।
অবশ্য অন্টারিওর প্রিমিয়ার ক্যাথেলীন উইন সে পথে পা বাড়াননি। তিনি স্পষ্টভাবেই বলে দিয়েছেন ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় তিনি খুবই আঘাত পেয়েছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি একেবারেই বিষ্ময়কর ব্যাপার এবং হতাশাব্যঞ্জকও বটে।
২০১৬ সালের জুন মাসে স্বেচছা মৃত্যুবরণ আইন প্রবর্তন করা হয়। এর আগে কানাডার সিনেট ও কমন্স কমিটির যৌথ এক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, “কোন মৃত্যুপথযাত্রী কানাডিয়ান রোগী যদি স্বেচ্ছায় আগাম মৃত্যুবরণ করতে চান তবে তার জন্য হাসপাতালের সহায়তা উন্মুক্ত রাখতে হবে। রোগী স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করতে চাইলে লিখিত আবেদন করতে হবে এবং সেই আবেদন পত্রে দুইজন সাক্ষীর প্রয়োজন হবে। আর মৃত্যুর আবেদনপত্রে দুইজন ডাক্তারের অনুমোদন লাগবে। মৃত্যুর প্রক্রিয়াটি হাসপাতালেও সম্পন্ন হতে পারে বা রোগীর বাসস্থানেও সম্পন্ন হতে পারে এবং বেধে দেওয়া একটি নির্ধারিত সময় পার করতে হবে মৃত্যু কার্যকর করার আগে।
ডাক্তারের সহায়তায় স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করতে চাইলে কোন রোগী অগ্রীম অনুমোদন বা সন্মতি দিতে পারবেন যখন তার রোগ দেখে ডাক্তার নিশ্চিত হবেন যে তিনি কর্মদক্ষতা বা সহজাত ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন কিংবা তার অবস্থা নিদারুন যন্ত্রণাদায়ক অথবা তার রোগটি নিরাময়ের অযোগ্য। তবে এই সন্মতি দিতে হবে রোগীর পীড়া বা ব্যাধি সহনাতীত হবার আগে।
তবে এই স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ আইনটি নিয়ে বিতর্ক এখনো লেগেই আছে।
সিনেট ইস্যু :
২০১৬ সালে কানাডার আপার চেম্বার বা সিনেট এ বড় ধড়নের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। তবে বছরের শুরুতে কতিপয় সিনেটরের আর্থিক কেলেংকারী নিয়ে রাজনীতি ছিল সরগম। অবশ্য পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে সিনেটর মাইক ডাফির বিরুদ্ধে আনীত আর্থিক কেলেংকারীর আভিযোগ আদালতে বাতিল হয়ে যায়। অন্যান্য কয়েজন সিনেটরের বিরুদ্ধে আরসিএমপি যে অনুসন্ধান চালাচ্ছিল সেগুলোও বাতিল করা হয়।
জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা গ্রহণ করার পর সিনেটে কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেন। এই পরিবর্তনের উদ্দেশ্য ছিল কমিটির একটি নিরপেক্ষ অবয়ব তুলে ধারা। সেই পরিবর্তনের ধারায় সিনেটে কিছু নতুন মুখ দেখা যায়। তবে এই প্রক্রিয়া মসৃণভাবে এগিয়েছে তা বলা যাবে না। বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি এর সমালোচনায় মুখর ছিল। কনজারভেটিভ সিনেটর ডেনিস বেটার্স অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সিনেটে বিরোধী দলকে ধ্বংস করতে চাইছেন।
কার্বন টেক্স ইস্যু:
ফেডারেল সরকার প্রভিন্সিয়াল সরকারগুলোকে চরমপত্র দিয়েছে ২০১৮ সালের মধ্যে কার্বন টেক্স আরোপের জন্য। কেউ পছন্দ করুক আর নাই করুক এই কার্বন টেক্স আরোপ করতে হবে। প্রভিন্সিয়াল সরকারগুলো যদি এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নেয় তবে ফেডারেল সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে এ বিষয়ে।
ট্রুডো সরকার জানিয়েছে শুরুতে কার্বন টেক্স ধার্য করতে হবে প্রতি টনে ১০ ডলার করে। পরে প্রতি বছর তা আরো ১০ ডলার করে বৃদ্ধি করতে হবে। এবং ২০২২ সালের মধ্যে তা ৫০ ডলারে উন্নীত করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, কার্বন টেক্স হলো, ফসিল বা জীবাশ্ম জ্বালানীর (পেট্রোলিয়াম জ্বালানী যা সাধারণত গাড়ি বা বিভিন্ন কলকারখানায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে) উপর ধর্যকৃত কর। যারা এই জ্বালানী ব্যবহার করবেন তাদেরকে এই কর দিতে হবে। বায়ু দুষণ কমাতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
সিরিয়ান উদ্বাস্তু:
কানাডায় সিরিয়ান উদ্বাস্তুদের আসা শুরু হয় ২০১৫ সালে। তবে তা অব্যাহত থাকে ২০১৬ এসেও। কারণ প্রাথমিকভাবে ২৫ হাজার উদ্বাস্তু গ্রহণের যে কোটা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা সময়ের স্বল্পতার কারণে যথাসময়ে পুরণ করা যাচ্ছিল না। পরে ২০১৬ সালের শেষের দিকে এসে সব মিলিয়ে ৩০ হাজার সিরিয়ান উদ্বাস্তুকে কানাডা নিয়ে আসা হয়।
সিরিয়ান উদ্বাস্তু গ্রহণের বিষয়টি নিয়েও কানাডায় তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছিল।
পার্টি লীডারশীপ:
২০১৫ সালে কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি পরাজিত হলে নেতার আসন থেকে সরে দাড়ান সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার। পরে ২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট মাসে স্টিফেন হারপার তার এমপি পদ থেকেও পদত্যাগ করেন এবং বিদায় নেন প্রায় দুই দশকের আলোড়নপূর্ণ রাজনৈতিক জীবন থেকে।
হারপার ছিলেন ক্যালগারি প্রভিন্সের ‘ক্যালগারি হেরিটেজ’ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি। তিনি ছিলেন কানাডার ২২তম প্রধানমন্ত্রী। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারী থেকে ২০১৫ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
কনজারভেটিভ পার্টির বর্তমান নেতা (অন্তবর্তীকালীন) হিসাবে আছেন এমপি রনা এমব্রস। তিনি এডমনটন প্রভিন্স এর অধিবাসী।
গত নির্বাচনে পরাজিত হয়ে পার্টি লীডারশীপ হারাতে বসেছিলেন এনডিপি’র নেতা থমাস মুলকেয়ারও। তার উপর অব্যাহত চাপ ছিল পার্টির লীডারশীপ পদ থেকে সরে দাড়ানোর। কিন্তু তিনি সরে দাড়ানি। পরে ২০১৬ তে পার্টি সিদ্ধান্ত নেয় পার্টির নেতা নির্বচনের জন্য ভোটভুটি হবে। তখন থমাস জানান তিনি পার্টির প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন পরবর্তী নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত। অবশ্য তিনি এও জানান যে, আগামী জাতীয় নির্বাচনেও তিনি আর প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন না। তিনি মন্ট্রিয়লের উতরামন এলাকা থেকে নির্বাচিত এমপি।
যারা কানাডায় আসতে চান নতুন ইমিগ্রেন্ট হয়ে তাদের মধ্যে ‘এন্টি কানাডিয়ান ভ্যালিউজ’ বা কানাডিয়ান মূল্যবোধ বিরোধী কোন প্রবণতা আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা উচিৎ তাদের আবেদন গ্রহণ করার আগে। পরীক্ষা পাশ করলে তারা ইমিগ্রেশন পাবেন, পাশ না করলে তাদেরকে কানাডায় আসার স্বপ্ন ত্যাগ করতে হবে। কনজারভেটিভ পার্টি অব কানাডার লীডারশীপ প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া মহিলা প্রার্থী ক্যালী লিচ ২০১৬ সালে এজাতীয় এক বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের শীর্ষে এসেছেন। তিনি বিতর্কেও মুখমুখি হন নিজ দলের লোকদের কাছেও।
ক্যালীর দলের আরেক নেতা মেক্সিম বারনিয়ের বলেছেন ক্যালী প্রস্তাবিত এন্টি কানাডিয়ান ভ্যালুউজের বিষয়টি একটি অকার্যকর ধারণা।
টরন্টো ভিত্তিক সাংবাদিক ডেসমন্ড কোল টরন্টো স্টার পত্রিকায় তার এক লেখায় ক্যালীকে কান্ডজ্ঞানহীন মহিলা হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি লীডারশীপ প্রতিযোগিতায় জয়ী হবার আশায় দলের মধ্যে একটি বর্ণবাদী ও বিদেশীদের সম্পর্কে অহেতুক ভয় সৃষ্টি করার পায়তারা করছেন মাত্র। কানাডার ইমিগ্রেশন মন্ত্রী জন ম্যাককুলাম বলেছেন, ক্যালীর এই বিতর্কিত ‘এন্টি কানাডিয়ান ভ্যালুউজ’ এর প্রস্তাবনাটি বিপজ্জনক পদক্ষেপ এবং এর মাধ্যমে তিনি ইমিগ্রেশন বিভাগের বিদ্যমান কার্যধারাকেও অবজ্ঞা করেছেন।
দ্বৈত নাগরিকদের নাগরিকত্ব হরণ আইন:
কানাডায় দ্বৈত নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাতিলের আইনসহ অন্যান্য কিছু বিতর্কিত আইনের (স্ট্রেংথেনিং কানাডিয়ান সিটিজেনশীপ এ্যাক্ট, যা বিল সি -২৪ নামেও পরিচিত) সংশোধনের প্রস্তাব থার্ড রিডিং এর পর পার্লামেন্টে পাস হয়েছে গত জুন মাসের ১৭ তারিখে। বর্তমানে তা সিনেট কমিটির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, সাবেক কনজারভেটিভ সরকার কর্তৃক প্রণীত বিতর্কিত এই আইনটি সংশোধন করার জন্য গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্টে বিল (বিল সি-৬) তুলেছিল লিবারেল সরকার। গত জাতীয় নির্বাচনের আগে লিবারেল পার্টির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ছিল এটি। তারা বলেছিল, লিবারেল পার্টি ক্ষমতায় এলে দ্বৈত নাগরিকেদের নাগরিকত্ব হরণের আইনটি বাতিল করা হবে এবং সিটিজেনশীপ এ্যাক্ট এর অন্যান্য বিতর্কিত ধারাগুলো সংশোধন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্ব:
গত জাতীয় নির্বাচনে জয় লাভ করে জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ২০১৫ সালের ৪ নভেম্বর। কানাডার ২৩তম প্রধানমন্ত্রী তিনি। ২০১৬ সালে এসে তিনি কানাডার রাজনীতিতে নাটকীয় সব পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগিয়েছেন। কৃতিত্বেও ছাপিয়ে গেছেন অনেক কিছুতেই। ডিসেম্বর (২০১৬) মাসে প্রকাশিত এক জরীপেও দেখা গেছে বেশীরভাগ কানাডিয়ান মনে করেন আন্তর্জাতিক মহলে তিনি কানাডার সুনাম বৃদ্ধি করেছেন। তাঁর নেতৃত্বশৈলী বা দলের ও দেশের ছন্দময় অধিনায়কত্ব তাকে দিয়েছে জনপ্রিয়তার শীর্ষ অবস্থান এবং একই সাথে তাঁর উপর দেশবাসীর নির্ভয় নির্ভরতা।
২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর প্রকাশিত ফোরাম রিসার্সের জরীপে বলা হয়, নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর এক বছর পরেও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা এখনো জ্বল জ্বল করছে সূর্যের আলোর মত। এই মূহুর্তে যদি কানাডায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তবে শতকরা ৪৯ জন কানাডিয়ান জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টিকে ভোট দিবেন। বর্তমানে লিবারেল পার্টির মধ্যে জাস্টিন ট্রুডোর প্রতি সমর্থন রয়েছে ৯২%।
EKOS Research Associates এর প্রেসিডেন্ট গ্র্যাভিস বলেন, একটি সাহসী ও সপ্রতিভ এবং সক্রিয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে জাস্টিন ট্রুডোকে মনে হচ্ছে একজন চ্যাম্পিয়ন ব্যক্তিত্ব। তিনি সরকার ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা এনেছেন। জনগণ আগের সরকারের তিরিক্ষি ও অভদ্র আচরণে পরিশ্রান্ত।