কলমবাজি

সাইদুল হোসেন

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

বইয়ের প্রকাশনা খরচ কোথায় পাই?

আমার ১১টা নূতন বই প্রকাশনার অপেক্ষায় দিন গুনছে। আমার অর্থের অনটন, তাই বইগুলো পাবলিশ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত আছি বহু মাস ধরেই, কোন সমাধান চোখে পড়ছে না। আমি কত যে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত তা প্রকাশ পেলো কয়েকদিন আগে দেখা একটা স্বপ্ন থেকে।

আমি স্বপ্নে দেখলাম, প্রকাশনার খরচের টাকা জোগাড় করার উদ্দেশ্যে আমি পথে নেমেছি, বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি এবং আমার আর্থিক প্রয়োজনের কথাটা উপস্থিত লোকজনদের জানাচ্ছি এবং সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছি।

দেখলাম, একটা বাড়িতে গেছি, সেটা ধনবান এক হিন্দুদের বাড়ি। বহু সুসজ্জিত নারীপুরুষের সমাবেশ সেখানে। আমার আবেদন তারা শুনলেন, মনে হলো তারা অনুকূল সাড়া দিতে পারেন। কিন্তু তৎক্ষণাৎ দৃশ্যটা বদলে গেল।

এবার দেখলাম, এক বয়স্কা মহিলা আমার প্রয়োজনের কথা শুনে সহানুভূতিশীল হয়ে বলছেন, “আপনার উদ্দেশ্য তো বেশ ভালো, আমি আপনাকে কিছু সাহায্য করতে রাজী আছি, তবে নগদ কিছু দিতে পারবো না। আমি পিঠা বানিয়ে বিক্রি করি, এটাই আমার বিজনেস। আমি আপনাকে বেশ কিছু পরিমাণ পিঠা দিতে পারি। সেগুলো বিক্রি করে যা পাবেন, সেটাই হবে আমার ডোনেশান। আমার প্রস্তাবটা বিবেচনা করে দেখতে পারেন।”

ঘুমটা ভেংগে গেল। অদ্ভুত স্বপ্ন! নয় কি?

অতীতের কাহিনী – ১

পোলারা পীরিত করত গেছে

দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) সময়কালে বৃটিশ ইন্ডিয়ার সর্বত্র গ্রামে গ্রামে যুবকদের একজন trainer -এর ব্যবস্থাপনায় প্রতিদিন বিকালে গ্রামের মাঠে গিয়ে সারিবদ্ধভাবে parade শেখানো হতো। এটা ছিল সব যুবকদের জন্যই বাধ্যতামূলক। সেই যুগের বাংলাদেশের ঘটনা।

একদিন কোন এক গ্রামের কৃষাণী অন্য পাড়ায় বেড়াতে গিয়ে দেখতে পেল যে সেই বাড়িতে ছেলেরা অনুপস্থিত। সে তখন ঐ বাড়ির কৃষাণীকে জিজ্ঞাসা করলো, “ও বু’, তোর পোলারা কই?”

ছেলেদের মা জবাব দিলো, “পোলারা পীরিত করত গেছে!”

[ইংরেজী “parade” কথাটা অশিক্ষিত কৃষাণীর মুখে বাংলা “পীরিত” রূপ নিয়েছে। অর্থাৎ ছেলেরা parade করতে গেছে, প্রেম-পীরিতি নয়!]

অতীতের কাহিনী – ২

 “হুকুম্দার?”

এটাও সেই যুগেরই কাহিনী।

রাতের বেলা পাড়ায় পাড়ায় যুবকদের জেগে থেকে গ্রাম টহল করে পাহারা দিতে হতো। তাদের trainer শিখাতো যে অপরিচিত লোককে দেখলেই তাকে থামিয়ে প্রশ্ন করবে, Who comes there? অর্থাৎ তুমি কে? পরিচয় দাও।

অশিক্ষিত পাহারাদাররা তো ইংরেজী জানতো না, তাই তাদের মুখ দিয়ে প্রশ্ন বের হতো : “হুকুম্দার?” অর্থাৎ Who comes there?

একটা তথ্য (Information)

বাংগালী মদ খাইলে হিন্দি বলে,

রেগে গেলে ইংরেজী বলে,

মিলাদে গেলে উর্দু বলে,

বিপদে পড়লে আরবী বলে, আর

মাইর খাইলে বাংলা বলে।

(Internet থেকে)

কিছু অত্যাধুনিক Jokes : Ask Google!

এই Internet-এর যুগে বহু মানুষ Google search করে নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে। কিছু দৃষ্টান্ত ঃ

১)  ছেলের বয়স ৩২ বছর, আয়-রোজগার ভালো, কিন্তু বিয়ে করতে নারাজ। কি করি বলুন তো?

– Ask Google.

২)  এক বন্ধুকে কিছু ডলার লোন দিয়েছিলাম কিন্তু সে ডলারগুলো ফেরত দেয়ার কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। কি করি বলুন তো?

– Ask Google.

৩)  খুব সস্তায় একটা এপার্টমেন্ট পেয়েছি কিন্তু seller-এর সংগে আলোচনাকালে মনে হলো কোথায় যেন একটা ঘাপলা আছে। বহু চেষ্টা করেও আসল খবরটা বের করতে পারছি না, অথচ এপার্টমেন্টটা হাতছাড়া করতেও ইচ্ছা করছে না। কি করি বলুন তো?

– Ask Google.

৪)   আমার মেয়ের বয়স ৩২, ইউনিভার্সিটি গ্যাজুয়েট, ভালো জব করে। আমাদের সংগেই আছে। বিয়েশাদীতে আগ্রহ নেই। এখন গোঁ ধরেছে কোন এক ফ্রেন্ডের সংগে এপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে ডাউনটাউনে গিয়ে স্বাধীনভাবে বসবাস করবে। বিরাট সমস্যা। কি করি বলুন তো?

– Ask Google.

অকটোবর ২৭, ২০২২

Qaseeda Burdah [কাসীদা বুরদাহ]

(মুসলিম সমাজে অজ্ঞতা, অতি দুর্বল ঈমানের ও অন্ধ বিশ্বাসের একটি বেদনাময় দৃষ্টান্ত।)

ভাষাটা আরবী। “কাসীদা” অর্থ কারো গুণগান করে লেখা কবিতা। কখনোবা কাসীদার অর্থ করা হয়ে থাকে রাসূল মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর গুণগান বা প্রশংসা করে লেখা কবিতা যা একক অথবা সম্মিলিত কণ্ঠে বাদ্যযন্ত্র সহকারে গাওয়া হয়।

বিশ্বজুড়ে মুসলিম সমাজে ‘কাসীদা বুরদাহ’ খুব সমারোহ সহকারে গাওয়া হয়ে থাকে।। ছবি : ইউটিউব

“বুরদাহ” অর্থ গায়ের চাদর, scarf অথবা এমনি ধরনের গা ঢাকার উপযুক্ত বস্ত্রখন্ড।

এক্ষেত্রে “কাসীদা বুরদাহ” অর্থ করা হয়েছে রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর প্রশংসা করে আল্লাহর কাছে আবেদন। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয়টা হচ্ছে এই যে “বুরদাহ” কথাটা মূল কবিতাতে নেই, এই শব্দটা পরবর্তী যুগে অন্যরা যোগ করেছে কবির প্রাসংগিক একটা বর্ণনার ভিত্তিতে।

ইসলামী আলেম সমাজ এই কাসীদাটির অর্থ নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত। এক দলের মতে এটা গাওয়া অনুচিৎ কারণ এটাতে র্শিকি কথাবার্তা রয়েছে যা একজন মুসলিমের ঈমান নষ্ট করতে পারে।

অন্যদলের অভিমত হচ্ছে যে এই কাসীদাতে সরাসরি কোন র্শিকি কথাবার্তা নেই, এগান গাওয়া যেতে পারে, তবে কবিতাটার কোন কোন শব্দের র্শিকি ব্যাখ্যা করা যেতে পারে বটে, একথাটা সত্য।

এসব বিতর্ক থাকা সত্বেও আরবদের মাঝে এবং অনারব বিশ্বজুড়ে মুসলিম সমাজে এই ‘কাসীদা বুরদাহ’ খুব সমারোহ সহকারে গাওয়া হয়ে থাকে। এই কাসীদার বহু ভিডিও Internet-এ YouTube-এ দেখা যায়। খুবই জনপ্রিয়, very popular. Mesut Kurtis-এর Qaseeda Burdah video-টা খুবই উপভোগ্য। [এই “কাসীদা বুরদাহ” ইন্ডিয়া-পাকিস্তানে অতি জনপ্রিয় কাওওয়ালী “দমাদম মাস্ত কালান্দার”-এর মত গভীর শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস নিয়ে আরব মুলুকে গাওয়া হয়ে থাকে।] 

এসব তো গেল ভূমিকা। এবার মূল বিষয়ে আসি। Internet-এ এক বক্তার ভাষণ থেকে জানা গেল যে-

এই কাসীদা বুরদাহ’র লেখক বা কবির নাম ইমাম বুসিরি, ঈজিপ্শিয়ান, জন্ম হিজরী ৬০৭ সন, মৃত্যু ৬৯৬ হিজরী সন (খৃষ্টাব্দ ১২১২- ১২৯৬ সন) তিনি একবার paralysis-এ আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী অবস্থায় খুব বেদনাময় জীবন কাটাচ্ছিলেন। এমনি দিনগুলোতে তিনি এক রাতে রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে কেন্দ্র করে এই কবিতা বা কাসীদাটা রচনা করেন আরবী ভাষায়। দীর্ঘ কবিতা যার শুরুটা এরকম : –

“মাওলাইয়াসাল্লি ওয়া সাল্লিম

দা-ইমান আবাদান

’আলা হাবীবীকা

খাইরিল খাল্ক্বি কুল্লিহিমি।

“মুহাম্মাদুন সাইয়্যেদুল কাউনাইনি

ওয়া সাক্বালাইনি,

ওয়াল ফারিক্বাইন মিন উরবিন

ওয়া মিন আজামী।”

বাংলা অনুবাদ

(হে আল্লাহ! বর্ষণ/নাযিল করতে থাক তোমার রহমত ও সালাম (শান্তি) অবিরত তোমার হাবীব, তোমার সকল সৃষ্টির সেরা মুহাম্মাদের উপর যিনি মহান নেতা মানুষজাতি এবং জীনজাতির, এবং মহান নেতা আরব ও অনারব সব মানুষের।)

কবিতাটা লেখা শেষ হলে ইমাম বুসিরি ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুম থেকে উঠে তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন যে, রাতে আমি এই কাসীদাটা লিখে ঘুমিয়ে পড়লে স্বপ্নে দেখলাম যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দরবারে বসেছেন, সেখানে বহু নবী উপস্থিত, তাঁর বহু সাহাবীও উপস্থিত, এবং আমি নিজেও উপস্থিত। দরবার মিষ্টি খুশবুঁতে আমোদিত। হঠাৎ লক্ষ্য করলাম যে নবীজী আমার দিকে ইশারা করে হাসিমুখে বলছেন,

“বুসিরি, আমাকে নিয়ে তুমি যে কবিতাটা লিখেছো তুমি সেটা আমাদের পড়ে শুনাও।”

নবীজীর কথা শুনে আমি খুবই অবাক হলাম, এবং বিনীতভাবে জানতে চাইলাম, “ইয়া রাসূলুল্লাহ! মাত্র তো আমি কবিতাটা লিখে শেষ করলাম, এটার খবর আপনি জানলেন কি করে?”

নবীজী হেসে বললেন, “খবর আমাকে পৌঁছানো হয়েছে। এবার তুমি তোমার কবিতাটা পড়।”

বুসিরি ঃ “দীর্ঘ কবিতা, তাঁরই প্রশংসায় লিখা আল্লাহর কাছে তাঁরই উপর রহমত করার প্রার্থনা জানিয়ে। লক্ষ্য করলাম যে যতই কবিতা পাঠে আমি এগিয়ে যাচ্ছি ততই নবীজীর মুখ সন্তোষের আলোতে উদ্ভাসিত হচ্ছে এবং দরবারে উপস্থিত সবাই মৃদু বাতাসে আন্দোলিত ক্ষেতের শস্যের মত এদিক থেকে ওদিকে আন্দোলিত হচ্ছেন।”

“কবিতা পাঠ শেষ হলে নবীজী তাঁর গায়ের “বুরদাহ-টা [চাদরটা] খুলে আমার দিকে ইশারা করতেই সেটা উড়ে এসে আমার গায়ের উপর পড়ল, অপূর্ব সুগন্ধ তাতে!”

“আমার ঘুমটা ভেংগে গেল। লক্ষ্য করলাম যে বুরদাহটা নেই কিন্তু সুগন্ধে ঘরটা ভর্তি। এবং বিষ্ময়ের সংগে অনুভব করলাম যে আমার paralysis রোগটা আর নেই, আমি নির্ভয়ে সহজভাবে হাঁটাচলা করতে পারছি! এই দেখ!”

ফজরের সালাত শেষে ইমাম বুসিরি বিশ্রাম নিচ্ছেন, এমন সময় ঘরের দরজায় কেউ একজন এসে কড়া নাড়লো। এত ভোরে কে আসলো আবার ভাবতে ভাবতে তিনি দরজা খুলে দেখলেন যে এক অপরিচিত লোক তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে। সালাম জানিয়ে সেই লোকটা বিনীত কণ্ঠে বললো, “ইমাম বুসিরি, গত রাতে যে কাসীদাটা নবীজীকে আপনি পড়ে শোনালেন সেটার একটা অনুলিপি (copy) আপনার কাছ থেকে সংগ্রহ করার আকাক্সক্ষা ও অনুরোধ নিয়ে আপনার দরজায় হাজির হয়েছি এই ভোর বেলায়। আশা করি আপনি আমাকে নিরাশ করবেন না।”

লোকটার কথা শুনে ইমাম বুসিরি তো হতভম্ব! একি করে সম্ভব হলো? জানতে চাইলেন তিনি।

উত্তরে সেই লোকটি আরো বিনীত কণ্ঠে জানালো,

“আপনি যখন নবীজীকে কাসীদাটা পড়ে শোনাচ্ছিলেন সেই দরবারে তখন আমিও উপস্থিত ছিলাম!”

[এই লোকটার কোন পরিচয় ঘটনাটার বর্ণনাকারী দেননি। এবং স্পষ্টতঃই এই গল্পটা একটা স্বপ্নভিত্তিক কল্পনা যাতে বাস্তবতার লেশ মাত্রও নেই। তথাপি মুসলিম জনগণ এটাকে নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করে। দুঃখজনক। – সাইদুল হোসেন]

কাসীদা বুরদাহ বিশ্ব জুড়ে মুসলিম সমাজে এতোই সমাদর লাভ করেছে যে আল্ল­াহর কুরআনের আয়াত অথবা রাসূলুল্লাহের (সাঃ) সহীহ হাদীসভিত্তিক কোন দু’আ না হওয়া সত্বেও মুসলিম জনগণ একান্ত বিশ্বাসের সংগে তাদের বহু আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য কাসীদা বুরদাহ পাঠের আমল করে থাকে, এটাকে সর্ব প্রকার রোগ-বালাই এবং বিপদ কাটানোর শক্তিশালী অস্ত্র বলে বিশ্বাস করে থাকে যা স্পষ্টতঃই র্শিক।

RETAIL THERAPY!

নূতন কথা, নূতন প্রকাশ ভংগী, নূতন জ্ঞান। অন্ততঃ আমার জন্য তো বটেই।

এতদিন জেনে এসেছি যে therapy মানে হলো medical science-এর আইনকানুন মেনে মানব দেহে কোন একটা রোগব্যাধি দূর করার একটা স্বীকৃত পন্থা- একটা চিকিৎসা পদ্ধতি। Such as, physiotherapy.

কিন্তু ধারণাটা পাল্টাতে হচ্ছে, কারণ medical science এর বাইরেও মানবদেহে রোগ চিকিৎসার জন্য একটা বিশদ বর্ণনা শোনলাম আজ একজন বয়ষ্ক বহু অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ক্যানাডিয়ানের মুখে। স্বীকার করতে হচ্ছে যে ভদ্রলোকের মুখে প্রাণবন্ত ভাষায় এই therapy-টার বর্ণনা শুনে আমি খানিকটা হতভম্ব।

বর্ণনাটা এরকম।

“মন খারাপ? Mentally depressed? কিছুই ভালো লাগছে না? কাজে মন বসছে না কিছুতেই? No problem. That’s OK. কাপড়-জামা পরে কোন একটা shopping mall-এ চলে যাও। ওখানে নানা ষ্টোর ঘুরে পছন্দসই কিছু জিনিসপত্র কিনে ফেল।  Cash নেই? Credit card দিয়ে কিনে নাও। তারপর দু’হাতভর্তি shopping bags ঝুলিয়ে বাসায় ফিরে যাও।

সদ্যকেনা merchandise গুলো বেডের উপর ছড়িয়ে দাও। নাকের কাছে নিয়ে গন্ধ শুঁকো, হাত দিয়ে অনুভব কর, উল্টে-পাল্টে দেখ- Their look, feel and fresh scent will create a ‘feel-good’ mood instantly. Your depression will disappear, you will start feeling happy again.. তুমি গুনগুন করে গান গাইতে শুরু করবে। It’s a sure shot. Do retail purchases, it will work like a therapy to come out of your mental depression.

“This is Retail Therapy!”, থামলেন তিনি।

Senseless spending করে মনকে চাংগা করার চেষ্টা! পাগলামী আর কাকে বলে?”

“এমন অস্থিরমতি, সর্বনাশা মানসিকতার লোকও আছে সমাজে?”, প্রশ্ন করলাম আমি।

তিনি বললেন, “আছে, অনেক আছে।”

“ওরা কারা?”, আবারো জানতে চাই আমি।

তিনি বললেন, “ওরা হচ্ছে সেই সব লোক যারা প্রয়োজন থাক বা না থাক একটা কিছু কেনার সুযোগ বা ছুতা খুঁজে বেড়ায়। Black Friday Sale, Boxing Day Sale, Liquidation Sale, Christmas Sale ইত্যাদিতে শহরের বিভিন্ন shopping mall এ অহরহ ভীড় জমায়। Cash না থাকলেও Credit purchase করতে, আপাদমস্তক ঋণে ডুবে থাকতে আনন্দ পায়। Check to check জীবনধারণ করে, ক’টা Credit card maxed-out করেছে সেই গল্প শোনাতে গর্ব বোধ করে। এরা নারী এবং পুরুষ দুই দলেই আছে। এরা হচ্ছে shopaholics, এরাই ওরা যারা বলে “Shop until you drop!” Their happiness is in buying only not in enjoying. এরা এক প্রকার মানসিক অস্থিরতার নেশাগ্রস্ত রোগী, ঋণগ্রস্ত হতে, bankrupt হতে লজ্জা বা ভয় পায় না। সাময়িক আনন্দটাই হচ্ছে একটা enjoyable therapy ওদের কাছে। অপরিণামদর্শী। Rash, Reckless.” কথা শেষ করলেন ভদ্রলোক।

Retail Therapy. মানব চরিত্র সম্পর্কে নূতন জ্ঞান লাভ করলাম। ধন্যবাদ।

বর্ণনাটা শুনতে শুনতে মনে পড়ে গেল একটা ঘটনার কথা।

আমরা স্বামীস্ত্রী দু’জনে একটা shopping mall-এ গিয়েছিলাম একদিন। আমি একটা bench-এ বসে বিশ্রাম নিচ্ছি এমন সময় হঠাৎ চোখে পড়লো যে এক মহিলা বেমানান সাইজের বড় colorful একটা shopping bag তার কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, normal size-এর shopping bag এর চেয়ে আড়াই-তিনগুন বড় সেই ব্যাগটা।

আরো লক্ষ্য করলাম যে সেটার গায়ে বড় বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে :

DON’T DISTURB ME NOW.
I AM BUSY SHOPPING.

নভেম্বর ১৫, ২০২২

Dolly Parton and the Bezos Courage and Civility Award: $100 million US (2022)

আমেরিকার বিখ্যাত country music singer, guitarist, song writer, actress হলেন Dolly Parton. বয়স বর্তমানে ৭৬ বছর। জীবনে বহু গান গেয়েছেন, বহু সুনাম, অর্থ ও পুরস্কার অর্জন করেছেন। দেশেবিদেশ প্রভূত সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। শুধু কি গান গেয়ে?

না, আরো সুদূরপ্রসারী জনকল্যাণমূলক কাজ করেছেন তাঁর অর্জিত অর্থ দিয়ে। প্রতিষ্ঠা করেছেন বহু charity এবং ছোটছোট বাচ্চাদের হাতে গল্পের বই তুলে দেয়ার জন্যে Jolene Singer Foundation. এটা হচ্ছে তাঁর প্রিয় Dolly Parton’s fiction library- books for the children..

এই লাইব্রেরী বই সংগ্রহ করে শিশুদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করে ওদের পড়াশোনায় আগ্রহ-উৎসাহ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে। ৩৬ কোটির বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশ আমেরিকার প্রতি ১০টি বাচ্চার মাঝে অন্ততঃ একজন Dolly Parton’s fiction library থেকে বই পেয়েছে। পাচ্ছে। শুধু আমেরিকাতেই নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের বাচ্চারাও এই fiction library থেকে ফ্রি গল্পের বই পেয়ে আনন্দিত হচ্ছে, উপকৃত হচ্ছে, পড়ুয়া হচ্ছে। সমাজে শিক্ষা বিস্তার ঘটছে। এবং তাঁর বিভিন্ন charitable organizations দরিদ্রদেরকে অনবরত সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে। She is a Philanthropist.

এই মহিলা COVID-19’এর research-এ সাহায্য করার জন্য এক মিলিয়ন ইউ.এস. ডলার দান করেছেন।

তাঁর এই আজীবন শিশু শিক্ষায় উৎসাহ প্রদানের মহতি প্রচেষ্টায় এবং জনকল্যাণমূলক অবদানে মুগ্ধ হয়ে, তাকে আরো উৎসাহ দেয়ার উদ্দেশ্যে আমেরিকার top বিলিয়নেয়ারদের একজন AMAZON Inc. এর প্রতিষ্ঠাতা Jeff Bezos ডলি পারটন-কে ১৩ই নভেম্বর, ২০২২, $100 million US dollars মূল্যের The Bezos Courage and Civility Award দিয়ে সম্মানিত করেছেন  for giving access to books to the children worldwide and for helping the less fortunate. Award declaration ceremony speech এ Jeff Bezos-এর longtime friend Lauren. Sanchez বলেছেন, “The award honours leaders who aspire to high goals, find solutions, and who always do so with kindness and civility.”

উল্লে­খ করা যেতে পারে যে Dolly Parton আমেরিকার অতি দরিদ্র পিতামাতার ১২টি সন্তানের মাঝে ছিলেন ৪র্থ। তাঁর জন্ম ১৯৪৬ সনের ১৯ জানুয়ারী।

Congratulations Dolly Parton!

আমাদের বাংলাদেশে তো বর্তমানে কোটিপতির ছড়াছড়ি। তাদের কেউ কি শিক্ষা বিস্তার অথবা সমাজ উন্নয়নের কোন ক্ষেত্রে এমন উদারতা দেখাতে এগিয়ে আসবেন? (চলবে)

সাইদুল হোসেন। মিসিসাগা