টরন্টোতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন বাংলাদেশী কানাডিয়ান নাদিয়া মজুমদার

গভীরশোকেরছায়ানেমেআসে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে

প্রবাসী কণ্ঠ, অক্টোবর ২০, ২০২১ : সদা হাস্যময়ী এবং পরোপকারী মনোভাবের কিশোরী কন্যা নাদিয়া মজুমদার গত ১৯ অক্টোবর স্কারবরোতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। টরন্টোর বাঙ্গালী অধ্যুষিত ড্যানফোর্থ এলাকার নিকটবর্তী ড্যানফোর্থ এ্যাভিনিউ ও বার্চমাউন্ট ইন্টারসেকশনে রাস্তা পারাপারের সময় একটি মিনিভ্যানের ধাক্কায় নাদিয়া মারাত্মক ভাবে আহত হন। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
নাদিয়ার এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোকে স্তব্দ হয়ে যান তার মা ও বাবা। গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে টরন্টোর বাংলাদেশী কমিউনিটিতেও।
নাদিয়া স্কারবরোর বার্চমাউন্ট পার্ক কলেজিয়েট ইনস্টিটিউট এ গ্রেড টুয়েলভ এর শিক্ষার্থী ছিলেন। মায়ের সাথে তিনি স্কারবরোতেই থাকতেন।
টরন্টো পুলিশ জানায় ৪০ বছর বয়সী এক মহিলা ড্রাইভার একটি মিনিভ্যান চালাচ্ছিলেন বার্চমাউন্ট ধরে। দক্ষিণগামী ঐ মিনিভ্যানটি ড্যানফোর্থ এভিনিউতে বাঁ দিকে মোড় নেওয়ার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নাদিয়া ঐ সময় রাস্তা অতিক্রম করছিলেন।
নাদিয়ার এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা জানান টরন্টোর মেয়র জন টরি।
২০ অক্টোবর বাদ জোহর নিহত নাদিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হয় টরন্টোর নাগেট মসজিদে। বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী অংশ নেন এই জানাজায়। এই সময় মসজিদ প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন বাঙ্গালী অধ্যুষিত স্কারবরো সাউথওয়েস্ট এর ফেডারেল এমপি ও ‘পাবলিক সেফটি এ্যান্ড এমার্জেন্সী প্রিপার্ডনেস’ মন্ত্রী বিল ব্লেয়ার।
জানাজা শেষে নিহত নাদিয়ার বাবা আজিজুল মজুমদার উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ি ব্যক্তির উপযুক্ত সাজা দাবী করেন এবং আর কোন বাবা মা-কে যেন এ ভাবে তাদের প্রিয় সন্তানকে হারাতে না হয় সেই দোয়া করেন।
আজিজুল মজুমদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরো বলেন, নাদিয়াকে হারিয়ে আমি আমার সব হারিয়েছি। সে ছিল আমার খুব আদরের মেয়ে। বাকি জীবন আমাকে সন্তান হারানোর এই বেদনা নিয়েই থাকতে হবে।
বাঙ্গালী অধ্যুষিত স্কারবরো সাউথওয়েস্ট এর এমপিপি ডলি বেগম সিবিসি নিউজকে বলেন, তিনি পরিবারটিকে জানতেন এবং নাদিয়াকে চিনতেন তার শিশুকাল থেকেই। দুর্ঘটনার পর তিনি নাদিয়ার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। নাদিয়া ছিলেন এই মায়ের একমাত্র সন্তান। মেয়েকে হারিয়ে গভীরভাবে শোকাহত হয়ে পড়েন তিনি। নাদিয়া ছিল তার জীবনের সবকিছু। নাদিয়ার এই মর্মান্তিক মৃত্যু অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং অবিশ্বাস্য একটি ঘটনা।
এদিকে সিবিসি নিউজ জানায় দুর্ঘটনায় জড়িত মিনিভ্যানের চালকের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ গঠন করেছে। কোন ক্রিমিনাল অভিযোগ গঠন করা না হলেও হাইওয়ে ট্রাফিক এ্যাক্ট এর আওতায় তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তা হলো, অসাবধানে গাড়ি চালনো যার পরিনতিতে একজন পথচারীর মৃত্যু হয়েছে এবং নিরাপদভাবে ইন্টারসেকশনে টার্ন না নেওয়া।
চালক ঐ মহিলা দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। আগামী ৯ ডিসেম্বর তার আদালতে হাজির হওয়ার কথা।