কানাডায় এক শ্রেণীর টো ট্রাক চালকের সীমাহীন প্রতারণা

মার্চ ৩, ২০১৯

টো ট্রাক এর চালকদের কাজ হলো দুর্ঘটনাস্থল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িকে উদ্ধার করে অটো মেকানিক শপে নিয়ে যাওয়া। দুর্ঘটনায় যদি গাড়ির চালক আহত না হন তবে তাকেও সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া অটো মেকানিক শপে। আর গাড়ি যে শুধুু দুর্ঘটনার কারণেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়। অন্যান্য আরো অনেক কারণেই গাড়ি যে কোন স্থানে অচল হয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে আছে ব্যাটারী কাজ না করা, গ্যাস ফুরিয়ে যাওয়া, যান্ত্রিক ত্র“টি ইত্যাদি।

আর এই সমস্ত বিপদ বা বিপাক থেকে উদ্ধার করাই টো ট্রাকের চালকদের প্রধান কাজ। অবশ্যই তারা এই উদ্ধারের কাজটি অর্থের বিনিময়ে করে থাকেন। এতে উপকৃত হন বিপদগ্রস্ত চালক ও তার গাড়ি।

কিন্তু দেখা গেছে অধিক লোভের কারণে এই টো ট্রাকের চালকদের কেউ কেউ একশ্রেণীর অটো মেকানিক বা অটো বডি শপের মালিকদের সঙ্গে যোগসাজস করে গাড়ির মালিকদের কাছ থেকে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন বা নেওয়ার চেষ্টা করেন। এরকমই এক ঘটনার শিকার হন বাউসান লেন নামের এক ব্যক্তি। টো কোম্পানী ও একটি বডি শপের মালিক তার গাড়ি আটকে রেখে তার কাছে প্রায় ১৩ হাজার ডলার দাবী করেন! বাউসান বলেন, তার সমস্যা ছিল শুধুমাত্র চাকার পাম্প চলে যাওয়া। আর তাতেই প্রায় ১৩ হাজার ডলারের বিল!!

ঘটনাটি ঘটে ২০১৭ সালের নভেম্বরে। বাউসান লেন তার ছেলেকে ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে ৪০১ ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি থাকেন টরন্টোর পাশেই মার্কহাম সিটিতে। কিন্তু গুয়েল্ফ এর কাছাকাছি এসে তার গাড়ির টায়ার এ সমস্যা দেখা দেয়। টায়ারের পাম্প চলে যাওয়াতে তিনি তখন তার গাড়ি আর চালাতে পারছিলেন না। একে তো ৪০১, তার উপর বাড়ি থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে তখন তার অবস্থান। এত দূরে কার কাছে সাহায্য চাইবেন? চরম বিপজ্জনক অবস্থা তার তখন। ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলে ৪০১ মহাসড়কে। তিনি তখন বাধ্য হয়ে ৯১১ এ কল করেন। ৯১১ এর অপারেটর তখন বাউসানকে গাড়ি থেকে না নামার পরামর্শ দেন এবং তাকে অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। তাকে এও বলা হয় যে, টো ট্রাক আসছে তাকে সাহায্য করার জন্য।

প্রচন্ড উৎকণ্ঠা আর পিছন থেকে অন্য গাড়ি এসে তার গাড়ির উপর আছড়ে পড়তে পারে এই ভয়ে তার তখন বেহাল অবস্থা। টো ট্রাকের জন্য অপেক্ষার পালা তার যেন শেষই হচ্ছে না। কত যুগ যেন পার হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।

অবশেষে এক টো ট্রাক চালক এসে হাজির হলেন। যেন এক দেবদূত এসে হাজির হলেন বাউসানকে উদ্ধারের জন্য। কিন্তু সেই ‘দেবদূত’ যে আসলে একটি ভূত ছিলেন বাউসান তখনো তা টের পান নি।

টো ট্রাক চালক ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে বাউসানকে বলেন, গাড়িটি মিসিসাগায় একটি অটো মেকানিক শপে নিয়ে যেতে হবে। কারণ, তিনি মনে করছেন টায়ার ছাড়াও গাড়ির আরো কিছু ক্ষতি হয়েছে যা মেরামত করা প্রয়োজন।

বাউসান ভেবেছিলেন পুলিশ তাদের কথামত টো ট্রাক পাঠিয়েছে। তাই কোনরকম সন্দেহ প্রকাশ না করে টো ট্রাক চালক যা বলেছেন তাতেই তিনি সরল বিশ্বাসে সায় দিয়েছেন। যদিও টায়ার ছাড়া গাড়ির আর কোন সমস্যা তিনি দেখতে পাচ্ছিলেন না।

বাউসান যে ‘দেবদূত’ এর পরিবর্তে ভূতের হাতে পড়েছিলেন সেটা তিনি হাড়ে হাড়ে টের পেলেন কদিন পর যখন গাড়ি ফেরত আনার জন্য টো কোম্পানীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। তাকে তখন জানানো হলো, সব মিলিয়ে ১২ হাজার ৪৮০ ডলার পে করতে হবে গাড়ি নিয়ে যেতে হলে।

কি ভয়াবহ বিল! বাউসানের তো হার্টফেল করার মত অবস্থা! ওরা কি গাঁজা খেয়ে বিল তৈরী করেছে না মধ্যপ অবস্থায় বিল তৈরী করেছে? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য কথা?

আসলে ঐ টো ট্রাক চালককে পুলিশ পাঠায়নি। পুলিশ যে টো ট্রাক চালককে পাঠিয়েছিল সে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আরেক টো ট্রাক চালক বাউসানের বেগতিক অবস্থার সুযোগ নেন।

বাউসান বলেন, গাড়ির কি ক্ষতি হয়েছে সে সম্পর্কে তাকে কিছুই বলা হয়নি আগে। আর কোন ক্ষতি যদি হয়েই থাকে তবে সেটা মেরামত করতে কত খরচ পড়বে সে সম্পর্কেও তাকে কিছু বলা হয়নি।

বাউসান অবশ্য বলেন, গাড়ির টায়ার বিকল হওয়ার পর তাকে একটি কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং ঐ কাগজে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ঐ স্বাক্ষর এর অর্থ যে প্রায় ১৩ হাজার ডলারের বিল হবে তা তো জানা ছিল না। আর মহাসড়কে গাড়ি বিকল হওয়ার পর ঐ রকম একটি মানসিক অবস্থায় কাগজে কি লিখা ছিল সেটি পড়ার মত ধৈর্য কজনের থাকে?

কিংকর্তব্য বাউসান তখন পুলিশের সাহায্য চান গাড়ি ফেরত পাবার জন্য। কারণ, নিশ্চিতভাবেই এটি একটি বড় ধরণের জালিয়াতির ঘটনা। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, এটি একটি ‘Civil matter’ আর সে কারণে বাউসানকে একজন ল-ইয়ার এর সাহায্য নিতে হবে। পুলিশ আরো জানায়, যেহেতু বাউসান ঐ টো কোম্পানীকে তার গাড়ি টো করার অনুমতি দিয়েছে তাই দায়টা তারই। Global News কে একথা জানান বাউসান।

বাউসান এর এই কাহিনী Global News ও CBC  টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছিল গত বছর মার্চ মাসে। পরবর্তীতে সেই গাড়ি তিনি আর ফেরত পেয়েছিলেন কি না, অথবা টো কোম্পানী সেই গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছে কি না সে সম্পর্কে আর কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। বাউসান অবশ্য দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন তিনি কোন অবস্থায়ই ঐ বিশাল অংকের অর্থ দিয়ে গাড়ি ফেরত আনতে যাবেন না। তিনি অন্যান্য গাড়ি চালকদেরকে এই শ্রেণীর প্রতারক টো কোম্পানীর বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি আরো আশা প্রকাশ করেছিলেন এই বলে যে, পুলিশ অথবা প্রাদেশিক সরকার তার এই প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে যথাযথ তদন্ত করবে যাতে করে দোষী ব্যক্তির উপযুক্ত সাজা হয় এবং তিনি তার গাড়িটি ফেরত পান।

উল্লে­খ্য যে, প্রবাসী কণ্ঠ ম্যাগাজিনের কলামিস্ট নাজমুল ইসলাম কয়েক মাস আগে কাজ থেকে ফেরার পথে ডন ভ্যালী পার্কওয়েতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিলেন। ঐ ঘটনার পর তিনিও এক প্রতারক টো কোম্পানীর খপ্পরে পড়েছিলেন। শুধু টো করে নিকটস্থ একটি অটো মেকানিক শপে নিয়ে আসার জন্য তার কাছে ১৫০০ ডলার দাবী করা হয়েছিল। গাড়ি মেরামত কাজে তখনো তারা হাত দেয়নি। দিলে কত দাবী করা হতো কে জানে। গাড়িটিও বেশ খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দুর্ঘটনায় পড়ে।

ঐ প্রতারকদের হাত থেকে গাড়ি উদ্ধার করতে গেলে এক পর্যায়ে তারা এমন মারমুখী হয়ে উঠে যে নাজমুল ইসলামকে ৯১১ এ কল করতে হয়েছিল। পরে পুলিশের সাহায্য নিয়ে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটি উদ্ধার করতে হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী কণ্ঠ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত তার কলামে তিনি বিস্তারিত বর্ণনাও দিয়েছেন।

সব পেশা এবং ব্যবসায় যেমন কিছু কিছু দুইনম্বরী লোক থাকে তেমনি আছে এই টো ট্রাক কোম্পানীগুলোর মধ্যেও। এদেরকে শ্রেফ দুইনম্বরী না বলে দুর্বৃত্ত বলাই বোধকরি অধিকতর যুক্তিযুক্ত। সড়কে তারা তাদের টো ট্রাকগুলোও চালায় অত্যন্ত বেপরোয়াভাবে। তাদের দুর্বৃত্তপনার কীর্তিকাহিনী প্রায়ই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়।

এই শ্রেণীর টো ট্রাক চালক বা কোম্পানীগুলোর সঙ্গে কিছু কিছু অটো মেকানিক বা বডি শপের মালিকদের সঙ্গে চুক্তি থাকে। চুক্তিটা হলো, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি এনে দিতে পারলে কমিশন দেওয়া হবে।

সমস্যা হলো, এরা ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির যে অংশে ক্ষতি হয়েছে সে অংশ ছাড়াও আরো কিছু অংশের মেরামত (কাল্পনিক) করা হয়েছে বলে দাবী করে বিশাল অংকের একটি বিল ধরিয়ে দেন। অনেক সময় দুর্ঘটনায় গাড়ির ক্ষতি বেশী না হলেও টো ট্রাক চালকরা নানান কৌশল অবলম্বন করে গাড়ির ক্ষতি আরো বাড়িয়ে দেন। এর মধ্যে কমন প্র্যাক্টিস হলো, ট্রাক দিয়ে ধাক্কা মেরে গাড়ির বডিতে ট্যাপ খাওয়ানো বা হেডলাইট ভেঙ্গে দেওয়া।

দুর্ঘটনার পর গাড়ির চালকরা এমনিতেই নার্ভাস অবস্থায় থাকেন। আর আহত হলে অবস্থা আরো বেগতিক হয়ে যায়। ঐ সময় গাড়ি উদ্ধার করতে আসা টো ট্রাক চালক কি করছেন বা না করছেন তা দেখার মত মানসিক বা শারীরিক অবস্থা থাকে না দুর্ঘটনার শিকার কারো পক্ষে। আর ঐ সুযোগটা কাজে লাগান কতিপয় বদ প্রকৃতির টো ট্রাক চালক। তারা এই সময় ওয়ার্ক অর্ডারের একটি কাগজ ধরিয়ে দেন দুর্ঘটনার শিকার চালকের হাতে স্বাক্ষর করার জন্য। আর ঐ স্বাক্ষরিত কাগজটিই তারা পরবর্তীতে কাজে লাগান আকাশচুম্বী বিল আদায় করার  জন্য। সিবিসি নিউজে প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এরকম এক ঘটনার শিকার হয়েছিলেন সাহীল মোল­া নামের এক ব্যক্তি। টো ট্রাক চালক খুব বিনয়ী ব্যবহার করে মোল­ার কাছ থেকে একটি ওয়ার্ক অর্ডার সই করিয়ে নেন। দুর্ঘটনার পর মানসিকভাবে নার্ভাস মোল­া তখন বুঝতে পারেননি কি কাগজে তিনি সই করছেন। পরে তিনি যখন গাড়ি আনতে যান তখন তার কাছে ৮ হাজার ডলার দাবী করা হয় স্টোরেজ ফি বাবদ!

এর পর মোল­া, ‘লেয়নস অটো বডি’ ও ইন্সুরেন্স কোম্পানীর প্রায় তিন মাস সময় লাগে আলোচনা ও বাদানুবাদের মাধ্যমে একটি মীমাংসায় পৌঁছাতে। তবে শেষ পর্যন্ত মোল­াকে কত ডলার পে করতে হয়েছিল সে সম্পর্কে কোন তথ্য নেই উক্ত রিপোর্টে।

প্রভিন্সিয়াল টোইং এসোসিয়েশন অব অন্টারিও’র প্রেসিডেন্ট জয়ী গানিয়ে সিবিসি নিউজকে বলেন, এ জাতীয় আতঙ্কজনক ঘটনার কথা সবসময় শোনা যায় এবং এরকম প্রচুর সংখ্যক ঘটনা ঘটছে। আর গ্রেটার টরন্টোর মিসিসাগা ও ভন এলাকায় এরকম ঘটনা সবচেয়ে বেশী ঘটে। ঐ সকল এলাকায় কোন দুর্ঘটনা ঘটলে টো ট্রাক চালকদের মধ্যে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় কে কার আগে ঘটনাস্থালে পৌঁছাতে পারবে।

দুর্ঘটনার শিকার কোন কাস্টমারকে এনে দিতে পারলে টো ট্রাক ডাইভারগণ অটো মেকানিক শপ বা অটো বডি শপ মালিকদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত কমিশন পান। এর সাথে টো বাবদ ফি তো আছেই। কাস্টমারদের ঘাড়ে যে সকল বিল চাপিয়ে দেওয়া হয় তার মধ্যে আছে স্টোরেজ ফি, রেন্টাল কার ফি, এ্যাডমিনিষ্ট্রেটিভ ফি এবং মেরামত ফি। এসব মিলিয়ে অটো মেকানিক শপ বা অটো বডি শপ মালিকগণ বিরাট আকারের একটি বিল ধরিয়ে দেন কাস্টামারকে। অটো ইন্সুরেন্স কোম্পানীগুলো কোন কোন ক্ষেত্রে এগুলো কভার করলেও পরবর্তীতে গাড়ির চালককে অতি উচ্চমাত্রায় প্রিমিয়াম গুনতে হয়। আর যাদের ক্ষেত্রে ইন্সুরেন্স কোম্পানী কোন দায়িত্ব নেয় না বা যাদের ওয়ানওয়ে ইন্সুরেন্স করা থাকে তাদেরকে পুরো বিলটা নিজ পকেট থেকেই পে করতে হয়। আর পে করতে না পারলে গাড়ি হারায়। অটো মেকানিক শপ বা অটো বডি শপ মালিকরা তখন গাড়ি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়ে তাদের খরচ উঠানোর চেষ্টা করেন।

তবে এই শ্রেণীর টো কোম্পানীর চালক আর অটোমেকানিক বা অটো বড়ি শপের মালিকরা যাতে অন্টারিওর গাড়ি চালকদের কাছ থেকে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অতিমাত্রায় অর্থ আদায় করতে না পারেন সে জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। এই আইন কার্যকর করা হয়  ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারী থেকে।

ফলে কোন গাড়ি টো করতে হলে ঐ আইন অনুসারে এখন গাড়ির মালিক বা মালিকের পক্ষের কোন ব্যক্তির কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। তাছাড়া গাড়ি মেরামত করতে কত খরচ পড়বে তার একটা এস্টিমেট দিতে হয় কাজ শুরু করার আগে। আর কাজ শেষে সেই খরচের পরিমাণ কোনভাবেই আগের এস্টিমেট এর চেয়ে ১০% বেশী হতে পারবে না। অন্টারিও সরকারের ওয়েবসাইটে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে। ঐ ওয়েবসাইটে বলা আছে :

– কোন করণে গাড়ি টো করতে হলে গাড়ির মালিক বা মালিকের পক্ষের কারো কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।

– টো এর রেট জানাতে হবে এবং সার্ভিস প্রোভাইডারের নাম, টেলিফোন নম্বর এবং ঠিকানা জানাতে হবে।

– ক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট নেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ক্যাশ পেমেন্টে এর জন্য কাস্টমারের উপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে না।

– গাড়ির মালিককে জানাতে হবে গাড়ি টো করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

– টো করে নিয়ে যাওয়ার পর গাড়ির মালিককে যে কোন বিজনেস ডে-তে (সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে) তার গাড়িতে থাকা ব্যক্তিগত জিনিষপত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে বিনা খরচে।

– পেমেন্ট নেওয়ার আগে গাড়ির কোন কোন অংশে কি কি মেরামত করা হয়েছে তার প্রতিটি তথ্য ইনভয়েসে উলে­খ থাকতে হবে।

– টো ট্রাকের চালক যে অটো মেকানিক শপে বা বডি শপে গাড়ি নিয়ে যাবেন তাদের কাছে থেকে তিনি কোন কমিশন পাবেন কি না তা জানাতে হবে।

নতুন এই আইনে গাড়ির মালিককে সম্পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে তার পছন্দমত মেকানিক শপ বা বডি শপে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার। চাইলে তিনি তার গাড়ি তার বাড়িতেও নিয়ে যেতে পারেন দুর্ঘটনাস্থল থেকে। টো ট্রাকের চালক এ ব্যাপারে কোনরকম চাপ সৃষ্টি করতে পারবেন না।

টো কোম্পানীকে বা অটো মেকানিক শপকে অথবা অটো বডি শপকে পেমেন্ট দেয়ার সময় ক্রেডিড কার্ডে অথবা ব্যাংক এর ডেভিড কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট দিলে লেনদেনের একটি জোড়ালো প্রমাণ থাকে। পরবর্তীতে কোন বিতর্ক দেখা দিলে এই প্রমাণ খুব কাজে লাগে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে পাসওয়ার্ড যাতে গোপন থাকে। আর কার্ড জালিয়াতি হতে পারে এরকম সন্দেহ থাকলে ক্রেডিড বা ডেভিড কার্ড ব্যবহার না করাই নিরাপদ।

দুর্ঘটনার পর বিচলিত বা নার্ভাস হলে বিপদ আরো বাড়ে। তাই চেষ্টা করতে হবে যথাসম্ভব স্বাভাবিক থাকতে। প্রয়োজনে পুলিশ কল করতে হবে। চেনা জানা কোন টো ট্রাক চালক থাকলে তাকেও কল করা যেতে পারে। আর স্বনামধন্য কোম্পানীর (যেমন সিএএ বা কানাডিয়ান টায়ার) মেম্বারশীপ থাকলে সেটিও ব্যবহার করা যেতে পারে সাহায্যের জন্য।

খুরশিদ আলম

সম্পাদক ও প্রকাশক

প্রবাসী কণ্ঠ