কানাডীয়রা রেকর্ড সংখ্যায় বৃহৎ শহর ছেড়ে যাচ্ছে: স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১ : স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার এক নতুন রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৮৭ হাজারের বেশি মানুষ বৃহৎ শহর ছেড়ে নিকটবর্তী অপেক্ষাকৃত ছোট লোকালয়ে চলে গেছেন। সিটিভির ক্রিসন অ্যাজেকোটের রিপোর্ট।
কানাডার বৃহত্তম শহরগুলোতে লোকজন কমে যাবার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। নগরবাসী সাধ্যের মধ্যে আবাসনের খোঁজে অপেক্ষাকৃত ছোট লোকালয়ে চলে যাবার কারণে এটা ঘটছে।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার একটি নতুন রিপোর্ট অনুযায়ী, নগরবাসী ক্রমশ নগরীর উপকণ্ঠে, ছোট টাউনে এবং পল্লী এলাকায় সরে যাবার কারণে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুলাইয়ের মধ্যে মন্ট্রিল ও টরন্টো উভয় নগরী রেকর্ড সংখ্যক বাসিন্দা হারিয়েছে।
ওই ১২ মাসে টরন্টোতে মানুষ কমেছে ৫০,৩৭৫ জন, অন্যদিকে নিকটবর্তী শহর অন্টারিওর অশোওয়াতে জনসংখ্যা বেড়েছে ২.১ শতাংশ। এটিই হলো দেশে সবচেয়ে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির শহর।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চে আছে অন্টারিও’র কিচনার-ক্যাম্ব্রিজ-ওয়াটারলু এবং অন্যদিকে হ্যালিফ্যাক্স শহর। এসব শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২ শতাংশ।
অশোয়ার মেয়র ড্যান কার্টার বলেন, এই পরিবর্তন শহরের জন্য বিরাট সুখবর।
সিটিভি নিউজকে কার্টার বলেন, “এই ঘটনা আমাদেরকে সত্যি বৃহত্তর সুযোগের মুখে এনে দিয়েছে: নতুন পরিবার, নতুন বন্ধু, নতুন সমাজ তৈরি হচ্ছে আর এসবই অশোওয়া শহরের জনজীবনে সত্যিকারের নতুন বুনন এনে দিচ্ছে।”
ওই একই সময়ে মন্ট্রিল হারিয়েছে ২৪,৮৮০ জন বাসিন্দাকে। আর পাশের জনপদ যেমন, ফারহাম, কিউ ও সেন্ট-হিপোলাইট, কিউ ইত্যাদিতে জনসংখ্যা বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগর থেকে উপকণ্ঠের দিকে যাবার এই প্রবণতা ত্বরান্বিত করেছে মহামারি। মহামারির কারণে চাকরিজীবীরা বেশি সংখ্যায় ঘরে বসে কাজ করার সুবিধা পাওয়ায় এবং তরুণ ও প্রথম বাড়ির ক্রেতারা সাধ্যের মধ্যে বাড়ি পাবার জন্য নগরীর বাইরের দিকে নজর দেওয়ায় এটি ঘটছে।
এই পালাবদল সমাজে অনেক ধরণের প্রতিযোগিতা উস্কে দিয়েছে যেখানে দরকষাকষির যুদ্ধ অনন্য রূপ পেয়েছে।
অটোয়ার একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী জিওফ ওয়াকার বলেন, “সারা দেশের অনেক বড় বাজারে আমরা যে সরবরাহ স্বল্পতার বিষয়টি দেখি সেটি একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ দেখেশুনে বেছে নেয়ার যথেষ্ট সুযোগ না থাকায় আপনাকে বাড়ি কিনতেই হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসনের কারণে নগরগুলোতে সামগ্রিকভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও রিপোর্টে দেখা যায়, টরন্টো, মন্ট্রিল ও ভ্যাঙ্কুভার শহর থেকে বহু মানুষ অন্য জায়গায় চলে গেছে।
মহামারির সময় সীমান্ত বন্ধ থাকলেও ২০১৯-এর জুলাই থেকে ২০২০-এর জুলাই পর্যন্ত সময়ে কানাডার শহরগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ৯০ শতাংশই ঘটেছে আন্তর্জাতিক অভিবাসনের কারণে। অন্যান্য এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অভিবাসনের ভূমিকা কমে এক-তৃতীয়াংশের সামান্য বেশিতে দাঁড়ায়।
কানাডার বৃহত্তর শহরগুলিতে গত এক বছরে রিয়েল এস্টেট বাজার প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও রয়েল ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রবার্ট হগ আশা করছেন আগামী বছরগুলিতে এটা মন্থর হয়ে আসতে পারে।
হগ বলেন, “২০২০ সালের শেষের দিকে যে অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের তৎপরতা দেখা গেছে, ২০২১ সালের মধ্যে তা থিতিয়ে পড়তে পারে বলেই মনে হয়।”