কানাডায় নবাগতদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর হুমকি দিয়ে টেলিফোনে প্রতারণা করা হচ্ছে

জানুয়ারী ১৩, ২০২০

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : টেলিফোনে প্রতারণাকারীরা এখন কানাডায় নবাগতদের টার্গেট করে অর্থকড়ি দাবি করছে এবং তাদেরকে নিজের দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
টরন্টো এলাকার বাসিন্দা ফারিহা রাশিদী সম্প্রতি এরকম এক প্রতারণাকারীর খপ্পরে পড়েন। তাকে বলা হয় যে তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একথা বিশ্বাস করে তিনি প্রায় ৫,০০০ ডলার খুইয়েছেন। খবর সিটিভি নিউজের।
রাশিদী দৃশ্যত তার স্বামীর সেলফোন নম্বর থেকে আসা একটি কল রিসিভ করেন। অন্য প্রান্তের লোকটি নিজেকে একজন পুলিশের কর্মকর্তা হিসাবে পরিচয় দিয়ে বলেন, তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

টরন্টো এলাকার বাসিন্দা ফারিহা রাশিদী চলতি মাসের শুরুর দিকে এরকম এক প্রতারণাকারীর খপ্পরে পড়েন। তাকে বলা হয় যে তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একথা বিশ্বাস করে তিনি প্রায় ৫,০০০ ডলার খুইয়েছেন। ছবি : সিটিভি নিউজ


পরে রাশিদী সিটিভি টরন্টোকে বলেন, “লোকটি তাকে তার ব্যাজ নম্বরসহ সবকিছু জানায়।”
রাশিদী বলেন, তিনি তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন, কিন্তু তাকে জানানো হয় যে, সেটা অনুমোদনযোগ্য নয়। কথিত পুলিশ অফিসার তখন রাশিদীকে বলেন যে, তার স্বামীর অভিবাসন সম্পর্কিত কাগজপত্র ফিরে পেতে তাকে ১১,০০০ ডলার দিতে হবে। না হলে তাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে।
রাশিদী দরকষাকষি করে অর্থের পরিমাণ ৪,৭০০ ডলারে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন। লোকটি বিট কয়েনের মাধ্যমে অর্থ দিতে বলে। রাশিদী তার শিক্ষা ঋণের টাকা বিট কয়েনে রূপান্তর করে তা পরিশোধ করেন।
টাকা পাঠানোর পর ঘরে ফিরে রাশিদী আবিষ্কার করেন যে তার স্বামী পুরো সময়টাই ঘরে আছেন এবং তিনি ঘুমোচ্ছিলেন। এরপর রাশিদী দম্পতি সত্যিকারের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদেরকে বলা হয় যে, ওই অর্থ কোথায় গেছে তা জানার কোনও উপায় নেই।
রাশিদী বলেন, এ ঘটনায় “আমার খুবই খারাপ লেগেছে।”
কানাডায় “অভিবাসীদের টার্গেট করে” কিংবা “চাঁদাবাজি” সংশ্লিষ্ট এবং “কলার আইইতে কারসাজি করে” কল করার মাধ্যমে প্রতারণার বিষয়ে অহরহ অভিযোগ করা হয়। রাশিদীর ঘটনায় এই সবকটি উপাদানই বিদ্যমান ছিলো। এধরণের প্রতারণা থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য কানাডার এন্টি-ফ্রড সেন্টার নাগরিকদের কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকে।
সবচেয়ে বেশি যেসব পরামর্শ দেওয়া হয় তার মধ্যে রয়েছে, টেলিফোনে জরুরী ব্যক্তিগত তথ্য কাউকে না দেওয়া, প্রতারকরা তাদের নম্বর লুকিযে রাখতে পারে এ বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং এটা মনে রাখা যে, যেসব কলে জরুরী ভিত্তিতে অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয় এবং প্রশ্ন করার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয় সেগুলি আসলে যথার্থ পরিচয়ধারীদের কল নয়।
এছাড়াও , সরকারি কোনও সংস্থাই কানাডীয় মুদ্রা ছাড়া অন্য কোনওভাবে যেমন বিট কয়েন, গিফট কার্ড বা অন্য কোনও মুদ্রায় অর্থ পরিশোধ করতে বলবে না।
সরকারি কোনও সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নামে আসা কোনও কল যদি সন্দেহজনক মনে হয় তাহলে কোনওরকম ব্যক্তিগত তথ্য না দিয়ে সংযোগ কেটে দিন এবং নিয়মিত নম্বর থেকে ফোন করে আগের কলের ব্যাপারে খোঁজ নিন। এটাই হলো এন্টি-ফ্রড সেন্টারের সুপারিশ।