কানাডায় প্রতি পাঁচজন শ্রমিকের মধ্যে দুজন কাজ ছেড়ে যায় মালিক খারাপ বলে

নভেম্বর ৯, ২০১৯

টরন্টো, ০৮ অক্টোবর ২০১৯ : “মানুষ খবরদারির লোক (ব্যবস্থাপক) পায়, সত্যিকারের সঙ্গী পায় না” বলে যে একটা কথা আছে, নতুন গবেষণায় দেখা গেছে সেটাতে সত্য আছে। এক জরিপে দেখা গেছে, কানাডায় পেশাজীবীদের মধ্যে প্রতি পাঁচজনে একজন (৩৯ শতাংশ) মালিক খারাপ হবার কারণে চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়।  গ্লোবাল  স্টাফিং প্রতিষ্ঠান রবার্ট হাফ এই জরিপ চালায়। খবর markets.businessinsider.com  এর।

রবার্ট হাফ-এর সিনিয়র ডিস্ট্রিক্ট ডাইরেক্টর ডেভিড কিং বলেন, “ম্যানেজাররা অফিসের মেজাজ তৈরি করেন এবং কর্মচারীদের দৈনন্দিন কাজের অভিজ্ঞতা এবং তাদের সন্তুষ্টির ওপর যথেষ্ট প্রভাব সৃষ্টি করেন- সেটা ভালো বা মন্দ যেটাই হোক।” তিনি বলেন, “সুপারভাইজাররা যখন কোনও প্রকল্প বা নতুন উদ্যোগের বিষয়ে সত্যিকারের উৎসাহ দেখান এবং কর্মস্থলে খোলামেলাভাবে সব সময় যোগাযোগের বিষয়টিকে উৎসাহিত করেন তখন কর্মচারীরা ওই কাজের সঙ্গে অধিকতর একাত্মতা বোধ করে এবং দৈনন্দিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভালোভাবে সহায়তা পাচ্ছে বলে অনুভব করে।”

কিং আরও বলেন, “কর্মচারীদের কাজের প্রশংসা করাও উদ্বুদ্ধকরণের আরেকটি শক্তিশালী উপকরণ। কর্মচারী নিজেকে যত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করবে ততই বেশি করে তারা কাজের ভেতর ডুবে থাকবে।” “এমনকি ছোট ছোট সৌজন্যমূলক আচরণ, যেমন নিয়মিত তার কাজের বিষয়ে অবহিতকরণ (ফিডব্যাক), এবং ভালো কাজ করলে সেজন্যে ধন্যবাদ জানানো হলে কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠানের ওপর তাদের কাজের প্রভাব বুঝতে পারে। এতে করে তারা তাদের পেশাগত উত্তরণ ও সাফল্যের ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠে।”

এক জরিপে দেখা গেছে, কানাডায় পেশাজীবীদের মধ্যে প্রতি পাঁচজনে একজন (৩৯ শতাংশ) মালিক খারাপ হবার কারণে চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। ছবি : সাটারস্টক

মন্দ বসরা কীভাবে কর্মচারীদের চলে যাবার কারণ হয়ে উঠতে পারে তার কিছু বিষয় এখানে তুলে ধরা হলো:

– মন্দ বস হলেন তিনি যার কাছে সাধারণত কেউ যেতে পারে না। কোনও প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য কর্মচারীদেরকে প্রায়শ তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নেতার দ্বারস্থ হতে হয়। যে কর্মচারীরা সময়মত বসের জবাব পায় না তারা হতাশায় ভুগতে পারে এবং হয়তো শেষ পর্যন্ত অন্য কোনও সুযোগ গ্রহণ করে চলে যেতে পারে।

– একজন মন্দ বস সবাইকে অত্যধিক নিয়ন্ত্রণ ও খবরদারির মধ্যে রাখেন। বস যদি কর্মচারীদের কাজের সার্বক্ষণিক অবস্থা জানতে চান এবং কাজটা কীভাবে করতে হবে সে সম্পর্কে প্রতি মুহূর্তে একটার পর একটা নির্দেশনা দিতে থাকেন তাহলে কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ হতে পারে। এতে করে এটাও স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কর্মচারীরা নিজের মতো করে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারে এটা আপনি বিশ্বাস করেন না। যেসব ব্যবস্থাপক তাদের কর্মচারীদের ওপর নিজের আস্থার বিষয়টি প্রকাশ করতে পারেন এবং তাদেরকে কাজের মধ্যে শ্বাস ফেলার সুযোগ দেন তারা কর্মচারীদের কাছ থেকে ভালো বিনিময় পেতে পারেন।

– একজন মন্দ বস ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অন্যদের ওপর ছেড়ে দেন। পাল্লার অন্য প্রান্তে রয়েছেন সেইসব বস যারা অস্পষ্ট নির্দেশনা দেন অথবা সব সময় অন্যদের ওপর কঠোর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন। এসব কারণে কর্মচারীরা কাজ ছেড়ে অন্যত্র চরে যেতে পারে। কর্মচারীরা এমন নেতা চায় যিনি নেতৃত্ব দেবেন এবং তাদের না-ও থাকতে পারে এমন অন্তর্দৃষ্টির যোগান দেবেন। তারা এমন কাউকে চায় না যিনি শুধু শুধু পদ দখল করে থাকবেন।