রোমান্টিক সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত

১২% কানাডীয় বন্ধনহীন সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয়!

মে ৫, ২০১৯

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ১ এপ্রিল ২০১৯: কানাডায় প্রতি ১০ জনে একজন মানুষ বন্ধনহীন সম্পর্কে (এমন এক ধরণের বিয়ে বা সম্পর্ক যেখানে নারী ও পুরুষ উভয়েই সম্মত থাকেন যে তারা পরস্পরকে ছাড়াও অন্য কারো সঙ্গে শারীরিকভাবে মিলিত হতে পারবে) জড়িত অথবা এধরণের সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয়। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। খবর সিটিভি নিউজের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্বকারী একটি সমীক্ষার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছেন। ওই সমীক্ষায় ১৮ থেকে ৯৪ বছর বয়সী প্রায় ২০০০ লোকের বক্তব্য ধারণ করা হয়।

সমীক্ষার জন্য যাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে চার শতাংশ মানুষ বন্ধনহীন সম্পর্কে জড়িত থাকার কথা জানিয়েছে। আর প্রতি পাঁচজনে একজন জানায়, তারা জীবনের কোনও এক সময়ে এধরণের সম্পর্কে জড়িত ছিলো। ১২ শতাংশ মানুষ জানায়, বন্ধনহীন সম্পর্কই তাদের কাছে সবচেয়ে আদর্শ সম্পর্ক।

যাদের মধ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছে তাদের মধ্যে নর ও নারীর সংখ্যা ছিলো প্রায় সমান। এদের মধ্যে ছিলো বিবাহিত, রোমান্টিক সম্পর্কে আবদ্ধ, নিঃসঙ্গ এবং তালাকপ্রাপ্ত নারী ও পুরুষ।

সেক্স রিসার্চ জার্নালে সোমবার প্রকাশিত সমীক্ষার প্রধান লেখক নিকোল ফেয়ারব্রাদার এক বিবৃতিতে বলেন, “সমীক্ষায় আমরা যে ফলাফল পেয়েছি তাতে মনে হয় এখনকার চেয়ে আরও অনেক বেশি মানুষ বন্ধনহীন সম্পর্কে জড়িত হওয়ার বিষয়টি পছন্দ করবে। সেটা যে এখনও হয়নি তার কারণ সম্ভবত এই যে এধরণের সম্পর্কের বিষয়ে একধরণের কালিমা লেগে আছে এবং সঙ্গীর সঙ্গে খোলাখুলি এ বিষয়ে আলোচনা করে নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা কাজ করে।”

ফেয়ারব্রাদার বলেন, “এই কালিমা সত্ত্বেও এমনটাই ধারণা করা যায় যে, আরও বৃহৎ সংখ্যক কানাডীয় প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বন্ধনহীন সম্পর্কে জড়িয়ে আছে অথবা এধরণের সম্পর্কে জড়াতে পছন্দ করবে।”

এধরণের সম্পর্কের মধ্যে পড়ে পলিয়ামোরি যার সংজ্ঞা করা হয়েছে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে প্রেম বা রোমান্টিক সম্পর্ক জড়ানো এবং সুইঙ্গিং যার সংজ্ঞা হলো বহু ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রাখা।

সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, বন্ধনহীন সম্পর্কে জড়ানোর বিষয়টিকে যারা অগ্রাধিকার দেয় তারা প্রধানত তরুণ বয়সের এবং পুরুষ।

গবেষকরা এক বিবৃতিতে বলেন, “একনিষ্ঠ বা বন্ধনহীন যে সম্পর্কেই জড়িত থাকুন না কেন সম্পর্কজনিত সন্তুষ্টির তেমন উল্লেখযোগ্য কোন হেরফের হয় না।” বরং গবেষকরা দেখেছেন, “একজন ব্যক্তি যে ধরণের সম্পর্ককে প্রকৃতপক্ষে অগ্রাধিকার দেয় সেইরকম সম্পর্কের মধ্যে একজন সঙ্গী পাওয়াই তার সম্পর্কজনিত পরম সন্তুষ্টির নিয়ামক।

ফেয়ারব্রাদার বলেন, তাদের প্রাপ্ত ফলাফল মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সেবা দানকারীদের জন্য বিশেষ করে যারা দম্পতিদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেয় তাদের জন্য জটিলতার কারণ হয়ে উঠতে পারে।

মিজ. ফেয়ারব্রাদার বলেন, “মনে রাখতে হবে, সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে খুবই স্বল্পসংখ্যক মানুষ বলেছেন যে তারা বন্ধনহীন সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেন, এটা হয়তো মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দানকারীদের জন্য লাভজনক হতে পারে, কারণ এতে করে তারা থেরাপি দেওয়ার সময় দম্পতিদেরকে তাদের সম্পর্কের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা সহজতর করে তোলার উপায় হিসাবে এটিকে ব্যবহার করতে পারেন।”