নাগরিকত্বের জন্য রাণীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে শপথ বাক স্বাধীনতার প্রতিবন্ধক হলেও অসাংবিধানিক নয়

ডিসেম্বর ২৭, ২০১৩

প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : কানাডার নাগরিক হতে যাওয়াদের রাণীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে বাধ্যতামূলক শপথ গ্রহণ সাংবিধানিক, যদিও এতে ব্যত্যয় ঘটছে বাক স্বাধীনতার- সম্প্রতি ওন্টারিওর এক আদালত এমনি রুল জারি করে।

আইন জারি করার সময় ওন্টারিওর সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক স্হায়ী তিন বাসিন্দার করা আবেদন খারিজ করে দেন, আবেদনকারীদের দাবি- শপথ গ্রহণ বৈষম্যমূলক ও অনৈতিক।

মরগান বলেন, “নাগরিকত্বের শপথ এক ধরনের নির্দিষ্ট বক্তব্য”

“তবে সেকশন ১ ন্যায়সঙ্গত মাত্রার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সমাজে জনগণের বাক স্বাধীনতার প্রকাশ নিশ্চিত করে”।

ধর্মীয় অনুভূতি ও সমতাবিধানে শপথ অন্তরায়, আবেদনকারীদের এমন বক্তব্যও খারিজ করে দেন মরগান।

এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীলের কথা ভাবছেন সেলউইন পিটারস নামের একজন আইনজীবি। তিনি বলেন, “স্বাধীন মত প্রকাশে শপথ বাধা তৈরি করছে, প্রাপ্ত এমন তথ্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ”।

“হতাশার কথা হলো, নতুন রায় বাক স্বাধীনতার অন্তরায়কে প্রকাশ্যে ন্যায্য করে নেয়া”।

নাগরিকত্ব আইনে আবেদনকারীদের “কানাডার রাণী দ্বিতীয় এলিযাবেথ, ও তার উত্তরসুরিদের প্রতি বিশ্বস্ত ও অনুগত থাকতে বাধ্য থাকবে”।

নাগরিকত্ব পেতে কানাডার প্রতি আনুগত্যই যথেষ্ট দাবি করে ধর্মীয় ও অতিমাত্রায় আনুগত্য প্রদর্শনের বিরোধীতা করে শপথ গ্রহণে অনীহা দেখাচ্ছেন এখানে বহুদিন ধরে বসবাসকারীরা।

তারা আরো উল্ল্লেখ করেন, কানাডীয় বাবা-মার বংশোদ্ভূতরা দেশটির বাইরে জন্মালেও কানাডার নাগরিক আর তাই তাদের শপথ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নেই। কানাডার নাগরিকত্ব পেতে রাণীর প্রতি শপথ পাঠকে একটি শর্ত হিসেবে পালন করে আসছে কেন্দ্রীয় সরকার।

সরকারের যুক্তি, “নাগরিকত্বের সুবিধা ভোগ থেকে বঞ্চিত হওয়া- কানাডার পাসপোর্ট ও ভোট না দিতে পারা- কিছু ব্যক্তিকে কানাডার মৌলিক ঐতিহ্যের প্রতি বিরোধী করে তুলেছে”।

সরকার আরো দাবি করে, শপথের বিরোধীতাকারী ঐ তিন ব্যক্তি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা পাচ্ছেন।

সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে মর্গান দাবি করেন, বাক স্বাধীনতার অর্থ শুধুমাত্র মত প্রকাশে স্বাধীনতা নয়, ঐ তিন ব্যক্তির আবেদন অনেকটা চরমপন্থীদের মতোই এবং এর মাধ্যমে শপথের ব্যাপারে তাদের ভ্রমকেই প্রকাশ করে।

তিনি বলেন যাই হোক তারা কানাডার রাজতন্ত্রের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারছে।

বিচারক বলেন “বিপ্লব নয় বরং বিতর্কের মাধ্যেই এ জাতির জন্ম”।

“ভিন্নমত কানাডার রাজনৈতিক পরিচয়কে প্রকাশ করে”।

আবেদনকারীদের একজন ৭৯ বছর বয়সী, মাইকেল ম্যাকঅ্যাটার, একজন অবসরপ্রাপ্ত সাংবাদিক। তিনি অভিবাসিত হয়ে কানাডায় আসেন ৫০ বছর আগে। তিনি জানান আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতাকে সমর্থন করায় তার বাবাকে নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়েছিল।

কানাডিয়ান প্রেসকে তিনি জানান, আনুগত্য প্রদর্শনে রাণীর প্রতি  শপথ পাঠ তার বিবেক ও রিপাবলিকান ঐতিহ্যের প্রতি বেঈমানি।

ড্রর বার-নাটান, একজন ইসরাইলী এবং জ্যামাইকায় জন্মগ্রহণকারী সাইমন টোপে অন্য দুই আবেদনকারী।

শুক্রবার জেনেভায় থাকাকালে গণিতের অধ্যাপক বার-নাটান জানান নতুন আইনটি তিনি এখনো না দেখায় মন্তব্য করতে পারছেন না। তবে, আপীলের অবস্থা তৈরি হলে তিনি অন্য দু’জনের সঙ্গে অবশ্যই আলোচনা করবেন।

টপেই জানান, রাস্তাফারিয়ানরা রাণীকে “ ব্যাবিলনের প্রধান” মনে করেন এবং শপথ এক্ষেত্রে তার গভীর বিশ্বাসকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। – কানাডিয়ান প্রেস