নবাগত তরুণদের সুরক্ষায় ৬ কৌশল
ডিসেম্বর ১, ২০১৭
বৈশাখী রায় : এখন তিনি পিএইচডি ডিগ্রিধারী একজন সমাজকর্মী এবং তার মিশন হলো ঝুঁকির মধ্যে থাকা শিশুদেরকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে দিতে সাহায্য করা। কিন্তু ড.এন্থনি হাচিনসন এখনও ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বারনাবির রাস্তায় তার শৈশবের দিনগুলি স্মরণ করেন যখন তিনি একটি পয়েন্ট ২২ ক্যালিবারের পিস্তল নিয়ে গ্রোসারির দোকানে ডাকাতি করতেন। ইন্ডিয়ান ও আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তান হাচিনসন বর্ণবাদী বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, অনুপস্থিতির কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন এবং প্রায় সবধরণের সমস্যা-সঙ্কটের ভেতর দিয়ে গেছেন।
বর্তমানে খ্যাতিমান এই গ্যাং এক্সপার্ট সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আজকের কানাডায় সহিংসতা থেকে শুরু করে গ্যাংয়ের সদস্য হওয়া বা যৌনতার শিকার হওয়া পর্যন্ত নানা কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে একই ধরণের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে প্রতি ৫ জনে একজন শিশু এবং এসব কর্মকান্ড ক্রমশ বাড়ছেই।
তিনি বলেন, ‘‘বেশ কিছু কারণে অভিবাসীদের শিশুরা বা অভিবাসী শিশুরা নিজেরাই আত্ম-বিস্মৃতির ফাঁদে পড়ার বিরাট ঝুঁকির মুখোমুখি রয়েছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণটি হলো তাদের স্বকীয় পরিচিতি হারিয়ে ফেলা।’’
ইউনাইটেড ওয়ে টরন্টোর এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের প্রতি নাজুক হিসাবে চিহ্নিত তরুণদের মধ্যে একটি উপবিভাগ হলো নবাগত তরুণরা। আরেকটি উপবিভাগ হলো ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের আওতাধীন শিশুরা, মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে এমন তরুণরা এবং ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যবর্তী শিশুরা। ঝুঁকির মুখোমুখি রয়েছে এমন অভিবাসী তরুণদের নিয়ে কর্মরত বিশেষজ্ঞরা বলেন, তরুণদের ঝুঁকির মুখে পড়ার নানা কারণ রয়েছে।
আত্মপরিচয় হারিয়ে ফেলা
কানাডায় আসা বাবা-মায়েদের বেশিরভাগের লক্ষ্য থাকে তাদের সন্তানদের ভাল শিক্ষাদীক্ষা। কিন্তু অনেক নবাগত শিশুকেই এখানে লেখাপড়া করার জন্য নিজেদের যোগ্য করে তোলার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতেই অনেক মূল্য দিতে হতে পারে। অপেক্ষাকৃত কম বয়সের শিশুদের জন্য একটি বড় বাধা হলো ভাষা। এই বয়সের শিশুরা তাদের স্কুলে ইংরেজিতে কথা বলার জন্য রীতিমত সংগ্রাম করতে থাকে। অথচ এই পুরো সময়কালে তারা ইংরেজির চেয়ে তাদের মাতৃভাষায় অধিক সচ্ছন্দে কথা বলতে পারে। ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে যাদের বয়স তাদের ক্ষেত্রে এই চ্যালেঞ্জ হলো আরও বেশি করে মনস্তাত্ত্বিক। হাচিনসন বলেন, ‘‘এটা হলো সেই বয়স যখন মানুষের আত্ম-পরিচয় অবয়ব পেতে শুরু করে।’’ তিনি বলেন, ‘‘তাকে এমন একটি দেশে আসতে হয়েছে যেটি দেখতে এবং অনুভবের দিক থেকেও সম্পূর্ণ ভিন্ন। তার নিজ দেশের নিজ ভাষার লোকদের মধ্যে বেড়ে ওঠার এতগুলো বছর কাটানোর পর এই বিরাট পরিবর্তন তার মধ্যে এক ধরণের সংশয়বোধের সৃষ্টি করে।’’
এর ওপর যুক্ত হয় অবিরাম বকাঝকা বা বৈষম্য যা অভিবাসী তরুণদের মোকাবিলা করতে হয়, যেমনটা করেছিলেন হাচিনসন নিজেও। আর এর ফলে তাদের আত্মপরিচয়ের বোধ আরও বেশি সংশয়ের মধ্যে পড়ে এবং এটি তাদের ক্রোধের উদ্রেক ঘটানোর কারণ হতে পারে।
চাপ অনুধাবন করা
তাদের বাবা-মাকে কানাডায় বসবাসের জন্য থিতু হতে যে ধকল পোহাতে হচ্ছে সেটা অনুভব করেও তরুণরা যন্ত্রণার শিকার হয়। তাদের বাবা-মা কানাডায় আসার পর এখানে যে ধরণের কাজে নিয়োজিত হন তা হয়তো তাদের নিজ দেশের পেশার চেয়ে একেবারেই ভিন্ন ধরণের। তরুণ-তরুণীরা দেখতে পায় তাদের বাবা-মা কেবল অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এমন সব কাজ করছেন যেগুলো তাদের জন্য সুখকর নয় এবং এসব কাজে সাধারণত অর্থও আসে কম।
আরেকটি বিষয় এখানে নবাগত তরুণদের মনে বিশেষ প্রভাব ফেলে। সেটি হলো পারিবারিক গতিশীলতার পরিবর্তন। সোস্যাল সার্ভিসেস নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক এবং টরন্টোর একজন পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত অভিবাসী নায়লা বাট বলেন, ‘‘কোন কোন কমিউনিটিতে আমরা দেখেছি যে, পরিবারের পুরষ সদস্যের চেয়ে নারী সদস্যের কর্মসংস্থান হয় অনেক দ্রুত। এর ফলে পুরুষটি তার পরিবারে প্রাথমিকভাবে নেতৃত্বের আসন থেকে ছিটকে পড়েন এবং এতে তার স্বকীয়তা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এতে করে ওই দম্পতির মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে টানাপোড়নের সৃষ্টি হয়। বাচ্চারাও বাবা-মায়ের মধ্যকার সম্পর্কের এই টানাপোড়ন বুঝতে পারে এবং সেভাবেই তাদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।’’
তরুণদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় যদি তাদের বাবা-মায়ের সম্পর্কের মধ্যে বিদ্যমান মানসিক চাপ ক্রমশ আবেগগত এমনকি শারীরিক অত্যাচারের পর্যায়ে উপণীত হয়।
নায়লা বাট বলেন, ‘‘একটি শিশু বা টিনএজের ছেলেমেয়ে বাবা-মার থেকে দূরে সরে যেতে হবে এমন ভয়ে পরিবারের মধ্যে বাবা-মায়ের মানসিক বা শারীরিক নিপীড়ন বা সহিংসতার বিষয়ে কিছু বলতে পারে না। তারা দেখতে পায় যে পরিবারের একজন সদস্য নিপীড়নের শিকার হচ্ছে কিন্তু তারা অসহায় বোধ করে কারণ তাদের পক্ষে কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়া সম্ভব হয় না। বিপন্ন বা অসহায় বোধ করা থেকে তারা সামাজিক ক্ষেত্রে বিরূপ আচরণ করতে পারে যা তাদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের দিকে ঠেলে দিতে পারে।’’
এসময় শিশুরা পরিবারের বাইরে থেকে কারও সাহায্য চাইতে পারে এবং সেটি সব সময় সঠিক লোকের কাছে না-ও হতে পারে। এরকম সময়েই শিশুটি গ্যাং-এর শিকারে পরিণত হতে পারে যা তার জন্য ভরসা যোগানোর অনুভূতি তৈরি করে দেবে যা তার নেই।
শিক্ষাগত পরিবর্তন
একটি অপেক্ষাকৃত কম বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত হলো এই যে, নিছক শিক্ষাক্ষেত্রে ধরণের পরিবর্তনও তার মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং সে বিরূপ আচরণ করতে পারে।
সোস্যাল সার্ভিসেস নেটওয়ার্কের যুব সমন্বয়কারী রিচা কারকি বলেন, ‘‘কানাডায় শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভিন্ন বিশেষ করে যখন স্কুলের ও বাড়ির কাজের জন্য স্কুলের কাছে জবাবদিহিতার প্রশ্ন আসে। ’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এখানে ক্লাশে অনুপস্থিত থাকা বা বাড়ির কাজ না করার মত বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী গুরুতর ফল ভোগ করতে হয় তা নবাগত অনেক অভিভাবক ও শিশুরা অনুধাবন করতে পারে না।’’
যোগাযোগ ও স্থানান্তরের নানা বাধা এই সমস্যাটিকে আরও জটিল করে তোলে। কারকি এক্ষেত্রে একটি যুবকের দৃষ্টান্ত উল্ল্লেখ করেন যে স্কুলে ফলাফল ভালো করছিলো না। এ ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ বারবার ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মাকে অবহিত করেছে এবং স্কুল শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করতে বলেছে। খুব বেশি হলে মাত্র এক বছর হলো কানাডায় আসা ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মা তাদের সার্বক্ষণিক চাকরিতে ব্যস্ত থাকার কারণে সময় দিতে পারেননি এবং তারা ইংরেজিতে সচ্ছন্দ ছিলেন না। এর ফলে তারা স্কুল থেকে পাঠানো নোটিশগুলো পুরোপুরি বুঝতে পারেননি এবং স্কুলে এ বিষয়ে তার শিক্ষকের সঙ্গে ফলোআপ সেশনে তারা উপস্থিত থাকতে পারেননি।
বাবা-মার চাপ
এছাড়া, কিছু দেশের সংস্কৃতিতে শিশুর শিক্ষা ও ক্যারিয়ার বাছাইয়ের বিষয়টিকে চরমভাবে উচ্চতর মানে স্থাপন করা হয় এবং এটিও একটি সমস্যা। বাবা-মা চান তাদের সন্তান তাদের নিজেদের দেশে যেসব পেশাকে আদর্শ হিসাবে বিবেচনা করা হয় ঐতিহ্যগতভাবে তেমনই কোন পেশা বেছে নেবে, যেমন চিকিৎসক, আইনজীবী বা অ্যাকাউন্ট্যান্ট ইত্যাদি। কিন্তু যেসব ছেলেমেয়ে তাদের বাবা-মার চেয়ে দ্রুততার সঙ্গে কানাডীয় সমাজের সঙ্গে একাত্ম হতে চায় তাদের সব সময় ভিন্ন মতামত থাকেই।
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভ্যাঙ্কুভারের ১৮ বছর বয়সী জোডি (আসল নাম নয়) বলেন, ‘‘আমার পরিবারের সবাই আইনজীবী অথবা ব্যবসায়ী।
কিন্তু আমি গ্রাফিক আর্টিস্ট হতে চাই। আর আমাকে গ্রাফিক ডিজাইনের কোর্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য বাবা-মাকে রাজী করানোটা ছিলো খুবই কঠিন। অনেক ধরাধরির পর তারা মত দিয়েছেন।’’
হাচিনসন বলেন, ‘‘ বিশ্বের বেশিরভাগ এলাকা থেকে আসা নবাগত শিশুরা তাদের বাবা-মার প্রতি নিঃশর্তভাবে অনুগত থাকতে অভ্যস্ত। এভাবেই তাদেরকে শিক্ষা দেয়া হয়।’’ হাচিনসনকে প্রায়শই বাবা-মায়েরা অনুরোধ করেছেন যে, ‘‘আমার বাচ্চাকে বলুন যেন সে আমার কথা শোনে।’’
তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু কানাডায় এই সংস্কৃতিটা ভিন্ন। এখানে বাবা-মা তাদের সন্তানকে তাদের সমকক্ষ হিসাবে বা বন্ধু হিসাবে দেখেন এবং কোনও সমস্যা হলে সেটি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। নবাগত বেশিরভাগ বাবা-মার কাছেই এই ধারণাটিকে একেবারে অচেনা মনে হয়।’’ অনমনীয় ও জেদী
বাবা-মার সঙ্গে সন্তানদের খুব শিগগিরই দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় এবং বাবা-মা যখনই ছেলেমেয়েকে হুকুম করতে যান ক্রমশ বিদ্রোহী হয়ে ওঠা সন্তান তখনই বলতে বাধ্য হয় যে, ‘‘তোমরা কিছুই বোঝ না।’’
সুতরাং অভিবাসী বাবা-মা কী করে আশা করবেন যে তারা তাদের সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবেন?
কানাডায় তাদের নতুন জীবনে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য বাবা-মা ও সন্তানদের কাউন্সেলিং করানো এবং তাদের সহায়তা দানকারী হাচিনসন ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘কানাডা হলো একটি ব্যক্তিস্বাধীনতার দেশ। এখানে প্রতিটি মানুষ তার নিজের পথ নিজে বের করে নিতে চায়। কিন্তু সামষ্টিক সমাজ, যেখানে সবসময়ই বুদ্ধি-পরামর্শ দেয়া বা সহায়তা করার মতো বন্ধু বা পরিবার রয়েছে, সেখান থেকে একটি কিশোর বা তরুণকে নিয়ে কানাডায় চলে আসাটা সত্যিই বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে বাবা-মায়েরা কিছু কৌশল কাজে লাগাতে পারেন যাতে স্কুলে বা সামাজিক পরিবেশে তাদের সন্তানের ওপর বিদ্যমান চাপ সহজ হয়ে আসে।’’
হাচিনসনের মতে, শিশুদের সুখি ও নিরাপদ রাখার জন্য বাবা-মায়েরা ছয়টি কাজ করতে পারেন।
১. যোগাযোগ রক্ষা করা- আপনার সন্তানরা নিজেদের মধ্যে কী করছে সে সম্পর্কে জানুন এবং তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে উৎসাহ দেখান।
২. মনোযোগ দিন – তাদের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন এবং তাদের স্কুলের কাজের ব্যাপারে সবশেষ অবস্থা জানুন।
৩. লেগে থাকুন – আপনার শিশুদের সঙ্গে লেগে থাকার জন্য তাদের ঊঝখ ( ঊহমষরংয ধং ধ ংবপড়হফ ষধহমঁধমব) ক্লাশ নিন। এতে তারা দ্রুত শিখবে এবং আপনি সাধ্যমত জবাব দেয়ার জন্য তাদের পাশে থাকবেন।
৪. তাদের উৎসাহ দিন – স্কারবরো-রুজ রিভার এলাকার সাবেক এমপি এবং কানাডীয় পার্লামেন্টে প্রথম তামিল সদস্য রাথিকা সিতসাবেইসান বলেন, ‘‘আমি যখন শ্রীলঙ্কার জাফনা থেকে মিসিসগায় আসি তখন আমার গায়ের রঙয়ের কারণে আমি সবচেয়ে মারাত্মক ধরণের বর্ণবাদী আচরণের মুখোমুখি হই।’’ তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু আমার বাবা আমাকে সামাজিক কর্মকান্ডে তার ভাললাগা দিয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তার কারণেই আমি ও আমার বোনেরা একেবারে তরুণ বয়স থেকে সমাজগঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করি আর সেটাই আমাদেরকে জীবনের সঠিক পথে অটল রেখেছে।’’
অন্য কথায়, নিজের ঘর ও স্কুলের বাইরে এমন কোন কাজে আত্মনিয়োগ করুন যা সমাজকে প্রভাবিত করে। এ ধরণের তৎপরতা আপনার শিশুদেরকে ধ্বংসাত্মক কাজের চেয়ে বরং কিছু অর্থবহ কাজে নিয়োজিত রাখার মাধ্যমে বহুদূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবে।
৫. সাহায্য চান – আপনার এলাকায় সেটেলমেন্ট এজেন্সিগুলোর অসংখ্য কর্মসূচি রয়েছে যাদের যুব ও কাউন্সেলিং কর্মসূচি আপনার জন্য সহায়ক হতে পারে। স্কুলগুলোরও রয়েছে সেটেলমেন্ট কর্মী যাদের সঙ্গে কথা বলে বাবা-মা এবং শিশুরা আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে পারে। স্কুল সেটেলমেন্ট কর্মীরা বাবা-মা ও তাদের শিশু এবং স্কুলের স্টাফদের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসাবেও কাজ করতে পারে।
৬. যোগাযোগ রাখুন – এমনকি আপনি যদি কানাডায় স্থায়ী হবার ক্ষেত্রে নিজেই খুব সমস্যাসঙ্কুল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে থাকেন তবুও সেটা আপনার সন্তানদের জানান। আপনি তাদের জানতে দিন যে, ওই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও আপনি কাজ করে যাচ্ছেন এবং ভাল সুযোগ পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কারকি বলেন, নিজের বাবা-মাকে কঠিন ও দুরূহ এবং কখনও হয়তো বিব্রতকর সময় পার করতে দেখার অনুভূতি যে কেমন তা কথা বলে বোঝাতে পারবো না।’’ কারকি জন্মগ্রহণ করেছেন নেপালে, বড় হয়ে উঠেছেন জাপানে এবং ১৯ বছর বয়সে কানাডায় এসেছেন। তিনি আরও বলেন, তবে ‘‘সমস্ত দুঃসময়ের মধ্যেও আমরা এগিয়ে গেছি, তিনি আমাদের জন্য সময় বের করে নিয়েছেন এবং আমাদেরকে তার বন্ধু করে নিয়েছেন। আমরা সবকিছু নিয়েই তার সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনিও সব বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমার মনে হয়, এই কথা বলাটা আমাদের এবং তার জন্যও খুবই সহায়ক হয়েছে।’’
– কানাডিয়ানইমিগ্রেন্ট.কম