‘কানাডা-বাংলাদেশ ডায়াস্পোরা জীবন’ বইটি অভিবাসনপ্রত্যাসীদের জন্য একটি গাইড বই হিসাবে বিবেচিত হতে পারে

বর্তমান বিশ্বে কানাডা অভিবাসীদের জন্য সেরা দেশ হিসাবে বিবেচিত। ইতিপূর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের  ‘U.S. News & World Report’ এর এক জরিপে এই তথ্য প্রকাশ পায়। শুধু ইউএস নিউজ এ্যান্ড ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট নয়, এর প্রতিফলন দেখা যায় ওয়াশিংটন ভিত্তিক পিউ রিসার্স সেন্টারের এক সমীক্ষায়ও। ওতে বলা হয় বিশ্বের প্রথম সারির দশটি দেশের মধ্যে অভিবাসীদের প্রতি সবচেয়ে বেশী ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে কানাডিয়ানদের। নতুন অভিবাসীদেরকে তারা বোঝা মনে না করে একটা শক্তি হিসাবে বিবেচনা করেন।

অন্যদিকে বেস্ট কোয়ালিটি অব লাইফ’ এর জন্য বিশ্ব সেরা দেশ হিসাবেও স্বীকৃতি আছে কানাডার। বিশ্বের ৮০ টি দেশের উপর জরিপ চালিয়ে প্রতি বছর এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। জীবন মানের শ্রেষ্ঠত্ব বিচার করতে গিয়ে যে বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব দেয়া হয় তার মধ্যে আছে জব মার্কেট, এফোর্ডেবিলিটি, অর্থনীতি, নিরাপত্তা ইত্যাদি।

এ সকল কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক মানুষ কানাডায় এসে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য চেষ্টা করেন নানান উপায়ে। এদের মধ্যে আছেন অনকে বাংলাদেশীও। কিন্তু এই বাংলাদেশীদের অনেকেই কানাডায় আসতে গিয়ে সঠিক পথটি সঠিকভাবে বেছে নিতে পারেন না। কেউ কেউ আবার দালালদের খপ্পরে পড়ে বিভ্রান্ত হন, অর্থকড়ি খোয়ান, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।

সেই দিক বিবেচনায় কানাডা প্রবাসী মাহমুদা নাসরিনের নতুন প্রকাশিত ‘কানাডা-বাংলাদেশ ডায়াস্পোরা জীবন’বইটি একটি সঠিক নির্দেশনা দিবে পাঠকদেরকে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সময়োপযোগী ও সুলিখিত এই বইটি অভিবাসন প্রত্যাসীদের জন্য একটি গাইড বই হিসাবেও বিবেচিত হতে পারে।

মাহমুদা নাসরিন নিজেও অভিবাসন নিয়ে পরিবারসহ কানাডায় এসেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। এখানে এসে তিনি ইমিগ্রেশন আইন নিয়ে লেখাপড়া করেছেন। জেনেছেন এর নিয়ম-কানুন। অভিবাসন বিষয়ে একজন অভিজ্ঞ পরামর্শক হিসাবে গত কয়েক বছর ধরেই তিনি কাজ করে আসছেন সফলতার সঙ্গে। টরন্টোর বাঙ্গালী অধ্যুষিত ড্যানফোর্থে রয়েছে ‘ক্যানবাংলা ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস’ নামে তার নিজস্ব অফিস। আগ্রহীরা চাইলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন nasrinmahmuda8@gmail.com এই ঠিকানায়।

ইমিগ্রেশন আইন ছাড়াও মাহমুদা নাসরিন তার ‘কানাডা-বাংলাদেশ ডায়াস্পোরা জীবন’বইটিতে প্রবাসীদের প্রাত্যহিক জীবনের সুখ-দুঃখের কাহিনী বিবৃত করেছেন নিজের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি ও গভীর দৃষ্টি দিয়ে। এই কাহিনীগুলো থেকেও কানাডার জীবন সম্পর্কে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা একটা আগাম ধারণা নিতে পারেন। এই কাহিনীগুলোর অধিকাংশই বই আকারে প্রকাশিত হওয়ার আগে ঢাকার প্রথম আলো পত্রিকাসহ টন্টোর স্থানীয় কয়েকটি বাংলাদেশী পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়।

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স করা মাহমুদা নাসরিন কানাডায় আসার আগে অধ্যাপনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি প্রথমে বাংলাদেশের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরবর্ততে সৌদী আরবের কিং খালিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। তার স্বামী সৈয়দ আমিনুল ইসলামও শিক্ষকতা পেশার সঙ্গ জড়িত ছিলেন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ, রিয়াদের প্রাক্তন অধ্যক্ষ এবং ‘শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ বাকেরহাট’ এর প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ছিলেন তিনি।

‘কানাডা-বাংলাদেশ ডায়াস্পোরা জীবন’বইটি প্রকাশ করেছে অনশ্বর প্রকাশন। প্রচ্ছদ একেছেন চারু পিন্টু। গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয় বইটি। ঢাকার একুশে বইমেলার বিভিন্ন স্টলে বিক্রির জন্য রাখা ছিল মাহমুদা নাসরিনের এই বইটি। ছিল গত মাসে অনুষ্ঠিত টরন্টোর ১৮তম বইমেলায়ও।