প্রতি চারজনে একজন কানাডীয় এখনও জীবনযাত্রার ন্যূনতম চাহিদা পূরণেও হিমশিম খাচ্ছে: স্ট্যাটক্যান
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কেন্দ্রীয় সংস্থার নতুন উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, এক-চতুর্থাংশ কানাডীয় জীবনযাত্রার ন্যূনতম চাহিদা পূরণে (ধারকর্জ না করে চলার মত যথেষ্ট অর্থ আয় করা) হিমশিম খাচ্ছেন এবং গত বছরের শেষদিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠা চাপ যদিও ক্রমহ্রাসমান, তবু প্রেইরি অঞ্চলের প্রদেশগুলি এবং সারাদেশের প্রান্তিক কমিউনিটির লোকেরা সবচেয়ে মন্দ অবস্থার মোকাবেলা করছে। খবর চার্লি বাকলে – সিটিভি
এই পরিসংখ্যান উঠে এসেছে কানাডার সামাজিক সমীক্ষায়। এটি হলো, স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার প্রতি তিন মাস অন্তর পরিচালিত সমীক্ষা যাতে সারাদেশে মানুষের জীবনযাত্রার মান সম্পর্কিত মূল সূচকগুলি অনুসরণ করা হয়। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদেরকে গত বছরজুড়ে অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণে তাদের পরিবার যেসব কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে, তার মূল্যায়ন করতে বলা হয়। এর ফলাফলে দেখা যায়, পরিবারগুলি ব্যাপকভিত্তিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে।
সারাদেশে ২৬.৮ শতাংশ কানাডীয় জানান যে, গত ১২ মাস সময়ে তাদের জন্য অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করা ছিল কঠিন অথবা অত্যন্ত কঠিন। এই সংখ্যাটি ২০২২ সালের দ্বিতীয় কোয়ার্টারের ২৪.৫ শতাংশের চেয়ে এবং গত বছরের শেষদিকে সর্বোচ্চ ৩৪.৮ শতাংশ পৌঁছার পরবর্তী সময়ের চেয়ে বেশি। সর্বোচ্চ সংখ্যাটি ছিল ২০২১ সালে প্রথম এ ধরণের উপাত্ত সংগ্রহ শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ।
টিডি ব্যাংকের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে ২০২২ সাল থেকে জি-৭ দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতির চাপ হ্রাসের বিবরণ আছে, কিন্তু এতে কানাডাকে সতর্ক করা হয় যে, নিকট ভবিষ্যতে মজুরির প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়া এবং বেকারত্ব বেড়ে যাবার মত ঘটনা ঘটতে পারে।
বিশ্লেষণে বলা হয়, “কানাডীয়দের মনে মূল্যস্ফীতি গভীর দাগ কেটে আছে। উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বটে… তবে এই সফরের শেষ ধাপ সবচেয়ে কঠিন হতে পারে।”
যদিও অর্থনৈতিক পীড়ন দৃশ্যত সারা দেশেই কমে আসছে, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সম্পাদিত ব্যাংক অব কানাডার এক সমীক্ষায় দেখা যায়, “অনেক ভোক্তা মনে করেন, তাদের পারিবারিক ব্যয়ের ওপর সুদের উচ্চ হারের প্রভাব হ্রাসে কিছুই করা হয়নি।”
প্রান্তিক কমিউনিটিগুলির সামনে কঠিনতম চ্যালেঞ্জ
সারাদেশে যে কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থা বিদ্যমান তা অন্যান্য ফ্যাক্টরের পাশাপাশি বয়সভিত্তিক গ্রুপ, অভিবাসনের স্ট্যাটাস এবং আদিবাসী পরিচয়ের ভিত্তিতে ভিন্নতর হয়।
২০২৩ সালের দ্বিতীয় কোয়ার্টারে সমীক্ষায় অংশ নেয়া ২৬.৮ শতাংশ কানাডীয় তাদের পরিবারের পক্ষে অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণে কঠিন অথবা অত্যন্ত কঠিন ছিল বলে জানায়, কিন্তু সেই অনুপাত কানাডায় অভিবাসীদের ক্ষেত্রে প্রায় ৩০ শতাংশ, ২৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী, স্বাস্থ্যগত জটিলতা অথবা দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা আছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশে দাঁড়ায়।
সমীক্ষায় অংশ নেয়া জনসংখ্যাগত গ্রুপগুলোর মধ্যে রিজার্ভ অঞ্চলের বাইরে বসবাসকারী আদিবাসী কানাডীয়দের অনুপাত ছিল পারিবারিক অর্থনৈতিক কঠিন অবস্থার মুখে পড়াদের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাদের মধ্যে বিরাট সংখ্যক ৪৩.৬ শতাংশ জীবিকা নির্বাহের মত ন্যূনতম অর্থ আয় করতে কঠিন অথবা অত্যন্ত কঠিন অবস্থায় পড়েন।