টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষণায় ৮৭% গৃহসামগ্রীতে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পাওয়া গেছে
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষকদের এক নতুন গবেষণায় পরীক্ষা করে ৮৭ শতাংশ গৃহসামগ্রীতে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। খবর হান্নাহ এলবারগা-সিটিভি নিউজ।
তাদের গবেষণায় কারসিনোজেনিক কেমিক্যালের (ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক দ্রব্য) “সর্বব্যাপী সনাক্তকরণ” করা গেছে। এই কারসিনোজেনিক কেমিক্যালকে বলা হয় ক্লোরিনেটেড প্যারাফিন (সিপি), যা কানাডায় এক দশক আগে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স: প্রসেসেজ অ্যান্ড ইমপ্যাক্টস’ সাময়িকীতে গত এপ্রিলে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, গবেষকরা ইলেক্ট্রোনিক ডিভাইস, কাপড়চোপড়, প্লাস্টিকের খেলনা, চিত্রকর্মসহ ৯৬ ধরণের সামগ্রী পরীক্ষা করেন। তারা দেখতে পান, ৮৪টি সামগ্রীতেই সিপি বা ক্লোরিনেটেড প্যারাফিন আছে। এটি হলো এক ধরণের উপাদান যা প্লাস্টিক নমনীয় করতে ব্যবহার করা হয়।
সমীক্ষার প্রধান লেখক এবং টরন্টো ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক স্টিভেন কুটারনা মঙ্গলবার সিটিভি নিউজ টরন্টোকে বলেন, “আমরা বিস্মিত হয়েছি এটি দেখে যে, আমরা যেসব জিনিস পরীক্ষা করেছি তার প্রায় সবকিছুতেই ওই যৌগটি বিদ্যমান।”
সিপির তিনটি আলাদা শ্রেণী আছে: শর্ট চেন (SCCPs), মিডিয়াম চেন (MCCPs) এবং লঙ চেন ক্লোরিনেটেড প্যারাফিনস (LCCPs)।
মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর “ক্ষতিকর” প্রভাবের জন্য কানাডায় ২০১৩ সাল থেকে এসসিসিপির প্রস্তুতকরণ, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ। কিন্তু কুটারনা বলেন, এমসিসিপি এবং এলসিসিপি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে মাত্র গত দশক থেকে এবং এ দুটিও “সমভাবে বিষাক্ত বলে মনে করা হচ্ছে।” এসসিসিপি ২০১৭ সাল থেকে জাতিসংঘের স্টকহোক সনদের আওতায়ও নিষিদ্ধের তালিকাভুক্ত।
কুটারনা বলেন, যাই হোক, এখন এই রাসায়নিকগুলি খোঁজা হচ্ছে, সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “কানাডার প্রস্তুতকারকরা এখন এগুলি উপাদান হিসাবে সরাসরি ব্যবহার করতে পারেন না… এগুলি একটি দেশে সংযোজন করা হয় এবং সেই প্লাস্টিক পণ্য অন্য কোনও দেশে পাঠানো হয় এবং এর পর তা আরেকটি দেশে আসে।”
গবেষকরা দেখতে পান, এসসিসিপির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি খেলনায়, বিশেষ করে যেসব খেলনা একেবারে ছোট শিশু বা কেবল হাঁটতে শেখা বাচ্চাদের জন্য তৈরি। এটি তার গবেষক দলকে বিস্মিত করেছে বলে জানান কুটারনা, কারণ এতে স্পষ্ট যে, বাচ্চাদের হাত থেকে মুখে এই ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানটি ছড়িয়ে যাচ্ছে।
কুটারনা বলেন, গবেষণার এই ফলাফল এই রাসায়নিকগুলির সর্বব্যাপিতা বোঝা, সনাক্তকরণ এবং আরও ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপের সূচনামাত্র। তিনি বলেন, “এটি হলো কেবল প্রথম ঢিল ছোঁড়া।” খেলনায় রাসায়নিক আবিষ্কারের বিষয়ে আরও গভীরতর গবেষণার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এটি এ বিষয়ে প্রথম অন্তর্দৃষ্টি নিক্ষেপ।”