ছয়টি প্রদেশে ন্যূনতম মজুরি বেড়েছে
কানাডিয়ান লেবার কংগ্রেস-এর প্রধান বলেন, ১৫ ডলার এখন আর যথেষ্ট নয়
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : ০৩ অক্টোবর ২০২২ ॥ কিছু প্রদেশে ন্যূনতম মজুরিতে কর্মরত শ্রমিকেরা এখন আরও কিছু বেশি অর্থ পাচ্ছেন। অন্টারিও, সাসকাচুন, ম্যানিটোবা, নোভা স্কশিয়া, নিউ ব্রুন্সউইক এবং নিউ ফাউন্ডল্যান্ড ও ল্যাব্রাডর এই ছয়টি প্রদেশ ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়েছে যা গত শনিবার কার্যকর হয়েছে। মজুরি বাড়ানোর এই জোয়ার আসে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবার কারণে। কানাডায় মূল্যস্ফীতির বার্ষিক হার সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। খবর : ব্রেট বুন্ডেল/দি কানাডিয়ান প্রেস।
ন্যূনতম মজুরির পরিমাণ এখন অন্টারিওতে ১৫.৫০ ডলার, সাসকাচুনে ১৩, ম্যানিটোবায় ১৩.৫০, নোভা স্কশিয়ায় ১৩.৬০, নিউ ব্রুন্সউইকে ১৩.৭৫ এবং নিউ ফাউন্ডল্যান্ড ও ল্যাব্রাডরে ১৩.৭০ ডলার।
কিছু প্রদেশ আগামী মাস ও বছরে মজুরি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অনেকগুলো প্রদেশই ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় ১৫ ডলারে উন্নীত করার কথা ভাবছে- যদি তারা এরই মধ্যে ওই সীমায় উন্নীত করে না থাকে। যেমন অন্টারিও, আলবার্টা, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া এবং তিনটি টেরিটোরি।
ম্যানিটোবা ২০২৩ সালের অক্টোবর নাগাদ, নোভা স্কশিয়া ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল এবং সাসকাচুন ২০২৪ সালের ১ অক্টোবরে মজুরির পরিমাণ ১৫ ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে। প্রদেশগুলোর সরকারি ওয়েবসাইট থেকে এই তথ্য জানা যায়।
দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া রয়েছে
শ্রমিক অধিকারবাদীরা বলছেন, এই অর্জনটি শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের পাওনা।
তবে তারা বলেন, সারাদেশে ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় ১৫ ডলারে উন্নীত করা হবে বলে যে আশা করা হচ্ছে শ্রমিকদের সক্ষমতার সঙ্কট সমাধানে তা এখন আর যথেষ্ট নয়।
কানাডিয়ান লেবার কংগ্রেস-এর প্রেসিডেন্ট বি ব্রুসকি বলেন, “আমরা ঘণ্টায় ১৫ ডলার ন্যূনমত মজুরি নির্ধারণের জন্য এত বছর ধরে দাবি জানিয়ে আসছি যে, এখন আর সেটা যথেষ্ট নয়।” তিনি বলেন, “মূল্যস্ফীতি এবং খাদ্য ও আবাসনের মূল্যের দিকটি বিবেচনায় নিলে এটা আসলে ঘণ্টায় ২০ ডলার বা তারও বেশি হওয়া উচিৎ।”
নোভা স্কশিয়ার শ্রমিক অধিকার গ্রুপ জাস্টিস-এর সংগঠক হেইলি ট্যাটরি মজুরি বাড়ানোর বিষয়টিকে “অত্যাবশ্যক” বলে উল্লেখ করলেও ওই বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেন যে, এটা “যথেষ্ট নয়।”
তিনি বলেন, “আমরা দেখছি, সারাদেশে মানুষ কষ্ট করছে। মজুরি একটু আধটু বাড়ানো তাদের জন্য সহায়ক হবে না।”
তিনি বলেন, তার সংগঠনকে কখনও ১৫ ডলারের লড়াই বলে উল্লেখ করা হতো। কিন্তু গত দেড় বছরে নেতৃবৃন্দ উপলব্ধি করেছেন যে, ১৫ ডলার এখন আর যথেষ্ট নয়।
এদিকে ব্যবসায়ীদের গ্রুপগুলো বলছে, মজুরি বাড়ানোর বিষয়টি সামনে এসেছে এক কঠিন সময়ে, যখন তারা মহামারিকালীন শাটডাউনের ধকল কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।
কানাডিয়ান ফেডারেশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিজনেস-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও ড্যান কেলি
বলেন, এখন পর্যন্ত “অর্ধেকেরও কম সংখ্যক ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক পর্যায়ের বিক্রিবাটা শুরু হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোর কোভিডের কারণে গড়ে এক লাখ ৬০ হাজার ডলার করে ধার হয়েছে এবং তাদের খরচ দ্রুত বাড়ছে। এই মুহূর্তে ব্যবসার ব্যয়ের যে কোনও বৃদ্ধি সামাল দেয়া সত্যি কঠিন।”
তিনি বলেন, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো পণ্য বা সেবার দাম বাড়িয়ে অথবা কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিয়ে বাড়তি মজুরির বিষয়টি সামাল দিতে পারে।
মি. কেলি বলেন, “আমরা জানি সরকারগুলি ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর জন্য চাপের মুখে আছে… তবে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ভার লাঘবে সহায়তার জন্য তাদের অন্য উপায় খুঁজে বের করা দরকার। আমরা সরকারগুলোর প্রতি (শ্রমিকদের বীমার) প্রিমিয়াম স্থগিত রাখার বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানাই।”