নথিহীন শ্রমিকদের পারমানেন্ট রেসিডেন্সি দেয়ার উপায় বের করছে কানাডা
প্রায় পাঁচ লাখ নথিহীন কর্মী কানাডায় বসবাস করে। তারা প্রায়শ নির্মাণকর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, সেবাদানকারী ও কৃষিশ্রমিক হিসাবে শোষণমূলক কাজে নিয়োজিত
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক ॥ ২ সেপ্টেম্বর : কানাডার নথিভুক্ত নয় এমন শ্রমিকরা পারমানেন্ট রেসিডেন্সি পাবার এক নতুন সুযোগ পেতে যাচ্ছেন। দেশের অদৃশ্য অর্থনীতি (underground economy) সামাল দেয়ার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার একটি কর্মসূচি প্রণয়ন করছে।
কানাডায় বসবাসরত প্রায় পাঁচ লাখের মত নথিবহির্ভূত বাসিন্দার জন্য এটি হতে পারে এক বড় বাঁক পরিবর্তনের সূচনা। এসব নথিবহির্ভূত কর্মীর অনেকেই নির্মাণ, পরিচ্ছন্নতা, সেবাদান, খাবার প্রক্রিয়াকরণ এবং কৃষির মত খাতে অনিশ্চিত এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে শোষণমূলক কাজে নিয়োজিত। খবর টরন্টো স্টার এর। প্রতিবেদক সারা মোজতেহেদজাদেহ এবং নিকোলাস কেউং।
সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও পীড়াদায়ক কাজের পরিবেশের কারণে এদের অনেকেই মানসিক ও শারীরীক স্বাস্থ্যহীনতাসহ নানা ধরণের নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
টরন্টোর অভিবাসন ও বন্দোবস্তকরণ বিষয়ক মেট্রোপলিটন সেন্টারের ২০১৭ সালের এক নথিতে বলা হয়, “কোনওরকম সামাজিক অবস্থান (status) ছাড়া বেঁচে থাকাটা মানবাধিকারের দিক থেকে জটিলতর।”
নতুন কর্মসূচি তৈরি করা হচ্ছে আগের একটি অপেক্ষাকৃত ছোট পরিসরের একই ধরণের উদ্যোগের ভিত্তিতে। সেই উদ্যোগের মাধ্যমে নির্মাণ শ্রমিকরা কানাডার পারমানেন্ট রেসিডেন্সি পেয়েছিল। নথিবহির্ভূত বাসিন্দাদের নিয়মিতকরণের উপায় খুঁজে বের করার জন্য গত ডিসেম্বরে অভিবাসন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
নতুন কর্মসূচির আওতায় কত সংখ্যক শ্রমিককে পারমানেন্ট রেসিডেন্সি দেয়া হতে পারে তা স্পষ্ট নয়।
নতুন কর্মসূচি প্রণয়নের বিষয় অবগত একটি সরকারি সূত্র বলেন, “আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত এই বিষয়টি চালু করার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অঙ্গীকারাবদ্ধ।” তার নাম প্রকাশ না করার ব্যাপারে টরন্টো স্টারের পক্ষ থেকে কথা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “কাজটি এখন চালু করার প্রক্রিয়ায় আছে এবং কানাডায় বসবাসরত নথিবহির্ভূত শ্রমিকদের নিয়মিত সামাজিক মর্যাদা দেওয়ার জন্য আমাদের যে বিদ্যমান কর্মসূচিগুলো রয়েছে তারই ভিত্তিতে এটি তৈরি করা হয়েছে।”
টরন্টো স্টার যেসব নথিপত্র পেয়েছে তাতে দেখা যায়, এই কর্মসূচি প্রণয়নের জন্য গবেষণা ও পরামর্শ ইত্যাদি সম্পন্ন করা হয়েছে গত গ্রীষ্মকালে।
মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স অ্যালায়েন্স ফর চেঞ্জ-এর নির্বাহী পরিচালক সাঈদ হুসান বলেন, “আমি বলবো, এটি এদেশের অভিবাসীদের জন্য গত অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ঐতিহাসিক ও নজীরবিহীন একটি সুযোগ।”
গবেষণা কাজে পরামর্শক হিসাবে শরীক ছিলেন এমন তিনজন বিশেষজ্ঞ টরন্টো স্টারকে বলেন, তারা মনে করেন, এই কর্মসূচিতে ব্যাপকভিত্তিক উদ্যোগের পরিবর্তে সম্ভবত নির্দিষ্ট খাতের শ্রমিকদের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
কিন্তু হুসান বলেন, অভিবাসীদের স্বার্থের প্রবক্তারা অটোয়ার প্রতি একটি সম্প্রসারিত কর্মসূচি গ্রহণের জন্য চাপ দিচ্ছে, যেটি “অভিবাসীদের প্রয়োজন এবং কানাডার অর্থনীতি ও সমাজের চাহিদা পূরণ করবে।”
প্রবক্তারা বলেন, নথিবিহীন বাসিন্দাদের বিরাট সংখ্যক বৈধভাবেই কানাডায় আসেন কিন্তু পরে স্টুডেন্ট ভিসা, অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট বা আশ্রয় প্রার্থনার মত বিভিন্ন বিষয়ে জটিলতায় মর্যাদা হারিয়েছেন।
তারা বলছেন, পারমানেন্ট অভিবাসীর মর্যাদা পেলে নথিবিহীন শ্রমিকরা মজুরি চুরি ও অনাচারে বিপর্যস্ত অদৃশ্য অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্য সামাজিক পরিষেবা লাভের সুযোগ পাবে এবং রেকর্ড পরিমাণ চাকরিখালির সমস্যা নিরসনে তা সহায়ক হবে।
হুসান বলেন, “একটি অপেক্ষাকৃত সুষ্ঠু সমাজ গড়ে তোলার এখনই সময়। এসব মানুষ এখানে বাস করে। তারা এখানেই কর্মরত।”
অভিবাসন মন্ত্রী সিন ফ্রেসার-এর তথ্য সচিব এইডান স্ট্রিকল্যান্ড এই কর্মসূচির আওতা সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাব দেননি। তবে তিনি বলেন, ধারাবাহিকভাবে বেশ কিছু “বলিষ্ঠ ও উদ্ভাবনী” কর্মসূচির মাধ্যমে মহামারিকালে ৯০ হাজার অস্থায়ী শ্রমিক ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে পারমানেন্ট রেসিডেন্সি দেয়ার সুযোগ সৃষ্টির পর এখন নথিহীন শ্রমিকদের সহায়তায় অটোয়া সরকার “অন্তর্ভুক্তিমূলক” পদক্ষেপ নেয়ার চিন্তা করছে।
অভিবাসী অধিকার নেটওয়ার্ক (MRN) অভিবাসন মন্ত্রীর কাছে যেসব সুপারিশ পেশ করেছে তার মধ্যে আছে, বহিষ্কার ও আটকের আইন স্থগিত করা এবং এমন একটি আবেদনপ্রক্রিয়া চালু করা যেটি অভিবাসন বিষয়ক পরামর্শকের সাহায্য ছাড়াই সহজে পূরণ করা যাবে।
হুসান যোগ করেন, “সাধারণভাবে আমরা একটি পরিপূর্ণ ও সমন্বিত নিয়মিতকরণ কর্মসূচি চাই।”
অভিবাসী অধিকার নেটওয়ার্ক তাদের প্রস্তাবে বলেছে, তাদের জরিপ অনুযায়ী, নথিহীন শ্রমিকদের ৪৪ শতাংশই ছিলেন শরণার্থী স্টেটাস পাবার জন্য আবেদনকারী। আর এক-চতুর্থাংশ ছিলেন অস্থায়ী বৈদেশিক কর্মী।
জেস নামের এক নারী
বলেন, গত বছর অভিবাসী কর্মী হিসাবে নোভা স্কশিয়ার একটি খামারে কাজ করতে যান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিবেশের দুরবস্থার কারণে পালিয়ে আসেন। ফলে তিনি নথিহীন হয়ে পড়েন। জেস তার নামের শুধু প্রথম অংশই ব্যবহারের শর্তে কথা বলেন।
পালিয়ে আসার পর জেস অস্থায়ী বৈদেশিক কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট একটি কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ফ্রি ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করেন। আবেদনপত্রে তিনি যে তথ্য দেন তাতে বলা হয়, খামারের নিয়োগকর্তা তার চিকিৎসা করাতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি মনে করেন, স্ট্রবেরি তোলার হাড়ভাঙ্গা খাটুনির কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আবেদনে লেখা হয়, ওখানে “থাকার ব্যবস্থা ছিল খুবই খারাপ। সেখানে একটি বাড়িতে ২০ জনকে থাকতে দেয়া হলেও গোসলখানা ছিল মাত্র একটি।”
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার তার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। যদিও একই খামার থেকে পালিয়ে আসা অন্য শ্রমিকদের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। এর ফলে জেস কানাডায় তার আইনগত অবস্থান হারিয়েছেন। টরন্টো স্টারকে তিনি বলেন, “সত্যি বলতে কি, এই ঘটনা আমাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।”
জ্যামাইকায় অবস্থানরত তার দুটি সন্তানের জন্য তাকে মরিয়া হয়ে কাজের সন্ধান করতে হয়েছে। কিন্তু মর্যাদা হারানো ছিল তার জন্য অসম্ভব যন্ত্রণাদায়ক।
তিনি বলেন, “এটি আমাকে মারাত্মকভাবে ভুগিয়েছে। আমি ঘুমাতে পারছিলাম না।”
ম্যাকমাস্টার বিশ^বিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞানের অধ্যাপক পিটার নায়েরস বলেন, অটোয়া সরকারের অস্থায়ী অভিবাসনের দিকে সরে আসা অভিবাসীদের নানা খাদে পড়ে যাওয়া এবং স্টেটাস হারানো আরও সহজ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, “চ্যালেঞ্জের দিক এই যে, অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হলে কিছু মানুষ তার নিজ দেশে ফির যায়, কিন্তু অনেকে নানা কারণে এখানেই থেকে যেতে বাধ্য হন।”
টরন্টো স্টার জানায়, স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার এক রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় অস্থায়ী বৈদেশিক কর্মীর সংখ্যা ২০০০ সালের ৬৬ হাজার থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে চার লাখ ২৯ হাজারে পৌঁছে। বৃদ্ধির পরিমাণই ছিল সাড়ে পাঁচ’ শ শতাংশ।
সমীক্ষায় এটাও দেখা যায় যে, কানাডায় অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিটধারীদের তালিকা থেকেই পারমানেন্ট রেসিডেন্ট করার হার দিন দিনই বাড়ছে।
নায়েরস বলেন, এমনকি খুব সুপরিকল্পিত অভিবাসন নীতিও “আন্তর্জাতিক বিশ্বে মানুষের অভিগমন থামাতে কার্যকর হচ্ছে না।”
“মানুষ এখনও নিজের জায়গা ছেড়ে যাচ্ছে কারণ তাদেরকে যুদ্ধ তাড়া করে, অর্থনৈতিক চাহিদা থাকে, ভালোবাসা এবং পরিবারের কারণেও তাদেরকে স্থানান্তরে যেতে হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দেশে স্টেটাস ও নথিহীন মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।”
কানাডিয়ান সেন্টার ফর পলিসি অল্টারনেটিভ-এর অটোয়া দফতরের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ শায়লা ব্লক বলেন, ওই ঘটনা পুরো শ্রমবাজারকে প্রভাবিত করে।
ব্লক উল্লেখ করেন যে, নথিপত্রহীন শ্রমিকদের চাকরিতে কম বেতন পাওয়া, জখম হওয়া এমনকি প্রাাণহানির আশঙ্কাও বেশি থাকে। আর নিজেদের পক্ষে দাবিদাওয়া জানানোর সক্ষমতাও থাকে কম।
“একই ধরণের কারণ অন্যান্য স্বল্প বেতনের কর্মীদেরও মজুরি ও কর্মপরিবেশকে প্রভাবিত করে, কারণ কম বেতনে এবং অপেক্ষাকৃত বেশি অনিরাপদ পরিবেশেও ওই কাজ নেবার মত লোকের অভাব নেই।”
নিয়মিতকরণের কর্মসূচি কানাডায় বেশ বিরল তবে একেবারে নতুন নয়। ১৯৭৩ সালে তখনকার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো স্টেটাস সমন্বয়ের একটি কর্মসূচি একবারের জন্যই গ্রহণ করেন এবং তাতে ১৫০টি দেশের প্রায় ৩৯ হাজার অভিবাসীকে পারমানেন্ট রেসিডেন্সি মঞ্জুর করেন।
২০০২ সালে এক হাজার আলজেরীয়কে কানাডায় থাকার সুযোগ দেওয়া হয় যদিও তারা নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হলে জীবনের ঝুঁকি সৃষ্টি হবে এমনটা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। উদ্বাস্তু হিসাবে স্বীকৃতির জন্য এ শর্ত পূরণ করতে হয়।
এরপর ২০২০ সালে অটোয়া কানাডিয়ান লেবার কংগ্রেসের (CLC) সঙ্গে সীমিত পর্যায়ে একটি কর্মসূচি চালু করে যার অধীনে ৫০০ নির্মাণ শ্রমিককে পারমানেন্ট রেসিডেন্সি দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে এরা ছিল গ্রেটার টরন্টো এলাকার শ্রমিক।
সিএলসির সভাপতি বি ব্রুস্কি বলেন, ওই কর্মসূচি খালি থাকা চাকরিতে লোক পাওয়ায় সহায়ক হয় এবং নথিপত্রহীন শ্রমিকদের ছায়া অর্থনীতি থেকে বের করে আনে।
তিনি বলেন, “আমি নিয়োগদাতাদের বিষয়টি ভাবি, এ ধরণের কর্মসূচি খেলার মাঠ সবার জন্য সমান করার দিক থেকেও উপকারী।”
ব্লক বলেন, ভবিষ্যতে নিয়মিতকরণের উদ্যোগ নেওয়া হলে তা যতটা সম্ভব সম্প্রসারিত হওয়া উচিৎ।
আয়ারল্যান্ডে বিচার বিভাগ সম্প্রতি একটি কর্মসূচি নিয়েছে যাতে নথিহীন কর্মীদের কাজ করা অধিকার এবং পাঁচ বছর অপেক্ষাকালের পর পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
এই কর্মসূচির অর্থ হলো, ৪৭ বছর বয়স্ক আইরিন জাগোবা ১৮ বছর পর প্রথমবারের মত নিজের বাচ্চাদের দেখতে ফিলিপাইনে ফিরতে পারবেন।
জাগোবা ২০০৮ সালে নিজের দেশ ছেড়ে আসেন এবং আয়ারল্যান্ডে বাচ্চাদের দেখাশোনার কাজ পান। সেই অর্থ তিনি ফিলিপাইনে পাঠাতে থাকেন যাতে তার নিজের পরিবারের শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত হয়।
টরন্টো স্টারকে তিনি বলেন, “খুব কঠিন একটি পরিস্থিতির মধ্যে আমি আমার বাচ্চাদের ছেড়ে আসতে বাধ্য হই। আমার ছেলের জন্মগত হৃদরোগ আছে।”
নিয়মিতকরণ কর্মসূচির প্রথম সুবিধাপ্রপ্তদের একজন জাগোবা। তিনি বলেন, “এই কর্মসূচি জীবন বদলে দেয়া।” আয়ারল্যান্ডে তার প্রথম দিককার চাকরিগুলি স্বল্প মজুরির এবং শঙ্কাপূর্ণ ছিল, কিন্তু এখন তিনি একজন রিয়েল এস্টেটের এজেন্ট, মার্কেটিং ম্যানেজার এবং অভিবাসীদের অধিকারের প্রবক্তা।
ওই উদ্যোগটি প্রতিবন্ধকতামুক্ত ছিলো বলে প্রশংসিত হয়: এতে কতজন আবেদন করতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি এবং ভাষা জানার শর্তও দেওয়া হয়নি।
আইরিশ বিচার বিভাগ স্টারকে জানায়, জানা মতে, ৫,১০০টির বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল এবং ১,১২৮ জন সুবিধা পেয়েছিল।
কানাডায় যেমনটা ঘটে, আয়ারল্যান্ডের অনেক নথিহীন অভিবাসী বৈধভাবে কানাডায় আসেন কিন্তু পরিণতি দৃশ্যমান না হওয়ায় তারা স্টেটাস হারান।
আলবার্তো বেলো (৩৮) শিক্ষা ভিসা নিয়ে মালাবি থেকে আয়ারল্যান্ডে যান। মাত্র তিন সপ্তাহ পরেই নিয়মনীতি ভঙ্গের দায়ে তার কলেজ বন্ধ করে দেয় সরকার। তিনি বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ তার জমা দেয়া টিউশন ফির অর্থ কখনই ফিরিয়ে দেয়নি। তবে তিনি সেখানে একটি চাকরি পান যার আয় নতুন এক কলেজে ভর্তির জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু তিনি যখন আবেদন করেন ততদিনে তার অস্থায়ী পারমিট দেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়।
এখন সেদেশে বসবাস ও কাজ করার বৈধ অধিকার পাওয়ায় বেলো দেশে ফিরে আগামী সেপ্টেম্বরে তার পছন্দের প্রেমিকাকে বিয়ে করবেন।
তিনি বলেন, “আমাকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বাস্তুচ্যুত সিরীয় এবং বর্তমানে আফগান ও ইউক্রেনীয়দের পুনর্বাসনের সরকারি নীতি অভিবাসী ইস্যুতে কানাডীয়দের চোখ খুলে দিয়েছে। এদিকে মহামারির ফলে সম্মুখ-সারির আবশ্যকীয় খাতে জনবলের অভাবের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে। ওইসব খাতে প্রায়শ নথিহীন কর্মীরা কাজ পেয়ে থাকে।
হুসান আরও যোগ করেন, নথিহীন বাসিন্দারা ভোগ্যপণ্য কেনার মাধ্যমে কর ভিত্তিতে অবদান রাখছেন। তাদেরকে নিয়মিত করার অর্থ হতে পারে আয়কর এবং একইসঙ্গে কর্মসংস্থান বীমা ও কানাডীয় পেনশন প্ল্যানে অবদান রাখার মধ্য দিয়ে আরও এক ’শ কোটি ডলারের সংস্থান হওয়া।
হুসান বলেন, “এতে করে ওইসব লোকেরা অধিকার পাবেন, অধিকারের দাবি জানাতে এবং রক্ষার দাবি জানাতে পারবেন। আমরা লোকেদেরকে অধিকারপ্রাপ্তদের পরিবারে নিয়ে আসছি।”