মফস্বল শহরে অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্য বেশী
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক: বিস্ময়কর হলেও সত্য, অভিবাসী হিসাবে শনাক্ত ৬০ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা যে কমিউনিটিতে বসবাস করছেন সেখানে কোনও না কোনও ধরণের বৈষম্য অথবা বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন। বৃহত্তর লন্ডনের চারটি এলাকাসহ দক্ষিণ অন্টারিওর নয়টি এলাকায় পরিচালিত এক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। খবর নর্দার্ননিউজ.সিএ।
এই গ্রুপের সদস্যদের এদেশে বাঞ্ছিত বোধ করেন বা কমিউনিটিতে নিজেকে একাত্ম বলে বোধ করেন এমনটা বলার সম্ভাবনাও কম।
পাশ্চাত্যের একজন প্রফেসর এবং অভিবাসন ও জাতিগত সম্পর্ক বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ভিক্টোরিয়া এসেস বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির মন্থরতায় আক্রান্ত কমিউনিটিগুলির জন্য ওই বিপুল সংখ্যা একটি সমস্যা।
তিনি বলেন, “আমরা জানি কেন মানুষ একটি সমাজে বসবাস করে, এর কারণ হলো সে নিজে এবং তার পরিবার এই সমাজে বাস করে সুখী ও সন্তুষ্ট। কেউ বা কারো পরিবার যদি বৈষম্যের শিকার হয়, এমনকি যদি তার একটি ভালো চাকরিও থাকে, তাহলে সে অন্য কোথাও চলে যাবার সুযোগ খুঁজবে।”
নয়টি এলাকার প্রত্যেকটিতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ সমীক্ষায় অংশ নেন। এসব এলাকার মধ্যে লন্ডনের মিডলসেক্স, সারনিয়া-ল্যাম্বটন, সেন্ট টমাস-এলগিন এবং অক্সফোর্ড কাউন্টিও ছিলো।
গবেষকরা এলাকাগুলিকে এমনভাবেও ভাগ করে নেন যার মধ্যে মাঝারি আকারের নগর কেন্দ্র যেমন লন্ডন রয়েছে যা মিডলসেক্স কাউন্টি দিয়ে ঘেরা, আবার এক লাখের কম মানুষ বাস করেন এমন এলাকাও আছে। সবচেয়ে বেশি বৈষম্য বিদ্যমান অপেক্ষাকৃত ছোট গ্রামীণ এলাকার কমিউনিটিতে।
মডলসেক্স-এর মেয়র এলিসন ওয়ারউইক সমীক্ষার ফলাফলকে “চরম অস্বস্তিকর” বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক হলেও আমি এটা দেখেছি। এটা বাস্তব সত্য, আর উদ্বেগের বিষয় হলো, আমাদেরকে সব সময়ই এটা নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে।
“আমি কেবল এই ভাবি যে, কোনও সমাজকে যদি সফল হতে হয় তাহলে তাকে এসব চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং প্রত্যেকেই সমাজের অন্তর্ভুক্ত বলে অনুভব করতে পারে এটা নিশ্চিত করতে কাজ করে যেতে হবে।”
ওয়ারউইক বলেন, মিডলসেক্স-এর পৌরসভাগুলিতে সাম্প্রতিক সময়ে জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও Ñ সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী ২০১৬ থেকে ২০২১ এর মধ্যে ১০ শতাংশÑ অভিবাসীদের আকৃষ্ট করা দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের মুখ্য অংশ হয়ে আছে।
তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আমার মনে হয়, দক্ষ শ্রমিকই হোক অথবা কফিশপে কাজ করা কোনও ব্যক্তি, সমাজের কোনও স্তরেই যথেষ্ট কর্মী না পাওয়ার বিষয়টি ওখানকার প্রতিটি ব্যক্তিকেই স্পর্শ করেছে। কাজ চালিয়ে নেবার মত যথেষ্ট কর্মী সেখানে নেই।”
একইরকম অভিমতের প্রতিধ্বনি শোনা যায় এসেস-এর কণ্ঠেও। এসেস বলেন, অভিবাসীদের নিয়ে আসায় কেবল অর্ধেক কর্মীর সংস্থান হয়।
তিনি বলেন, “আমরা যাদেরকে এখানে নিয়ে আসি তারা যদি বৈষম্যের শিকার হয় তাহলে আমরা এখন আর তাদের ধরে রাখতে পারবো না।”
“আমরা জানি, অভিবাসীরা বেশ সঞ্চলনশীল। তারা এরইমধ্যে বড় ঝুঁকি নিয়ে কানাডায় এসেছে, সুতরাং তারা যদি সন্তুষ্ট না হতে পারে তাহলে তারা অন্য কোথাও চলে যেতে পারে।”