কানাডার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে পারছে না

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : অর্ধেকেরও বেশি কানাডীয় বলেছেন, তারা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে পারছেন না। এঙ্গুস রেইড ইন্সটিটিউটের এক নতুন সমীক্ষায় এমন তথ্য জানা গেছে। সমীক্ষায় আরও দেখা যায় যে, মূল্যস্ফীতি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় প্রতি ১০ জনে সাত জনই বলেছেন, তারা অর্থকড়ি ব্যাপারে চাপে আছেন। খবর সিটিভি নিউজের। রিপোর্ট করেছন ডেনিয়েল ওটিস।

এঙ্গুস রেইডের রিপোর্টে বলা হয়, দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকায় কানাডীয়দের পারিবারিক বাজেট সব দিক থেকেই সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। “খাবার, জ্বালানির দাম এবং নির্দিষ্ট করে, জরুরী প্রয়োজন ইত্যাদি পারিবারিক ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে।”

২০২২ সালের জানুয়ারিতে কানাডার বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ৫.১ শতাংশে পৌঁছেছে যা একই সময়ে বেতন বৃদ্ধির হার ২.৪ শতাংশকে অনেকটা ছাড়িয়ে গেছে। স্ট্যাস্টিকস কানাডার তথ্যমতে, গত ৩০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথম কানাডার মূল্যস্ফীতির হার পাঁচ শতাংশের বেশি হলো।

দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকায় কানাডীয়দের পারিবারিক বাজেট সব দিক থেকেই সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। ছবি : প্রবাসী কণ্ঠ

আবাসন, জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকায় মূল্যস্ফীতিও বাড়ছে। এঙ্গুস রেইডের সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। জরুরী ব্যয়ের প্রসঙ্গে ৫১ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, হঠাৎ কোনও কারণে ১০০০ ডলারের বাড়তি ব্যয়ের প্রয়োজন দেখা দিলে তারা সেটা বহন করতে পারবেন না। এর মধ্যে ১৪ শতংশ উত্তরদাতা রয়েছেন যারা বলেন, কোনওরকম জরুরী প্রয়োজন পূরণেরই সামর্থ তাদের নেই।

সোমবার প্রকাশিত ওই সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা যায়, ৭০ শতাংশ উত্তরদাতাই আর্থিক চাপে রয়েছেন। এই পরিসংখ্যান তাদের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি, যে ২৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, অর্থ তাদের জন্য মোটেও কোনও বিরক্তির কারণ নয়। নিজেদের অর্থ ধরে রাখার জন্য তিন-চতুর্থাংশ মানুষ সাম্প্রতিক সময়ে তাদের কেনাকাটার অভ্যাস পাল্টেছেন বলে জানান। তারা অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, বড় কেনাকাটা, গাড়ির ব্যবহার এবং ছুটি কাটানোর মত বিষয়গুলো বর্জন করেছেন। প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনেরও বেশি উত্তরদাতা বলেন, তাদের কোনও সঞ্চয় নেই।

যেসব পরিবারে বাচ্চাকাচ্চা আছে তারা বিশেষভাবে আর্থিক চাপ বোধ করেন। এরাই পরিবারের খরচ ও সঞ্চয়ের পরিমাণে কাটছাঁট করেন। প্রায় ৪০ শতাংশ বাবা-মা বলেন, শিশুর পরিচর্যার ব্যয় নিয়ে তারা চ্যালেঞ্চের মুখে পড়েছেন।

ঋণ-ও কানাডীয়দের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৩৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তাদের অনেক বেশি ঋণ আছে। এই সংখ্যাটি প্রায় অর্ধেক বেড়ে যায় সাসকাচুন, ম্যানিটোবা ও আলবার্টার উত্তরদাতাদের ক্ষেত্রে। কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর জনগণেরও বেকারত্ব নিয়ে উদ্বেগের পরিমাণ বেশি। সেখানে প্রতি পাঁচজনে অন্তত দুজন বলেন, তাদের পরিবারের যে কেউ চাকরি হারাতে পারেন এমন শঙ্কায় তারা উদ্বিগ্ন।