প্রবাসে পরহিতকর্ম -৯৩

ইউরোপের পথে পথে

(পূর্ব প্রকাশের পর)

রীনা গুলশান

‘একবার যখন দেহ থেকে বার হয়ে যাবো

আবার কি ফিরে আসবো না আমি পৃথিবীতে?

আবার যেন ফিরে আসি

কোন এক শীতের ভোর রাতে…’।

তখনও বের হয়নি কেউ। অন্য সকলের জন্য আমার অপেক্ষমান হৃদয়ে তখন জীবনানন্দ দাস কথা বলে উঠলো। এই মানুষটা কোন সময় আমার পিছু ছাড়ে না। আনন্দে, বেদনায়, জাগতিক অক্লান্ত শ্রান্তিতে, কখনোই না। ওঁর সমস্ত ভাবনা আমার সাথে এতটাই মিলে যায় যে, আমি নিজেই মাঝে মধ্যে বিস্মিত হয়ে যাই।

এতক্ষণে একে একে আসছে সবে। ঐ দুষ্টু বালক, বালিকা (ওরা তিনজন ছিল)। অবশেষে হাঁপাতে হাঁপাতে মুখ লাল করে এলো। গাইড এবং বিভিন্ন টুরিষ্টরা তাদের উপর প্রচুর আক্রমণাত্মক বাক্য এবং শব্দ প্রয়োগ করলো। তারা গ্রাহ্যই করলো না। উল্টো তারা বেশ জোরে সোরে বলা শুরু করলো যে ওখানে না উঠলে ‘জীবনটা ষোল আনাই বৃথা’। অতপর: হয়তবা অন্যদের উপরও তার কিছুটা প্রভাব পড়তে শুরু করলো। এতক্ষণ যারা ওদের উপর বিরক্তির শব্দ প্রয়োগ করছিল, তারাই এতক্ষণে ওদেরকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করতে শুরু করলো। হা! হতোস্মি! মানুষের হৃদয়!! দেবো ন জন্তি!!

এবার গাইড ঘোষণা করলো, আমরা এখন আধা ঘন্টার জন্য লাঞ্চ ব্রেকে যাবো এবং তারপরই আমরা লেক জুরিখ এ যাবো। সবাই তখন হৈ হৈ করে উঠলো।

একটা বেশ ফাঁকা মত জায়গা সেখানো কিছু ছড়ানো ছিটানো শপ এবং বেশ কয়েকটি চেইন রেস্টুরেন্ট ছিলো। কিছু অপরিচিত রেস্টুরেন্টও ছিল দেখলাম। সবাইকে বললো ৩০/৪৫ মিনিটের মধ্যে লাঞ্চ সেরে বাসে ফিরে না আসলে, তাদেরকে ফেলেই বাস চলে যাবে। আমরা দ্রুত বার্গার কিং এ গেলাম। সবাই বার্গার নিলো। আমি নিলাম গার্লিক ব্রেড, অনিয়ন রিং এবং চারজনই ‘কাপাচিনো’ কফি নিলাম। বাইরে চেয়ার টেবিলও রাখা ছিল। আমরা শীতের ভেতরেও বাইরেই বসলাম। কারণ দারুন রৌদ্রালোকিত ছিল দিনটি। সুইজারল্যান্ডে প্রচন্ড শীত। কিন্তু ঐ ছয়দিনের মধ্যে একদিনও ক্লাউডি আবহাওয়া পাইনি। দারুন ঝকমকে রদ্দুর!

অতপর লেক জুরিখ এ যাত্রা। এবারে দেখলাম, ঐ বাচ্চাগুলো ‘দি নাউ নাউ’ গানটি গাওয়া শুরু করেছে। এটি ব্রিটিশ ভারচুয়াল ব্যান্ড ‘Gorillaz’ দের গাওয়া গান। দেখি সকলে একটু আধটু ঠোঁট মেলাচ্ছে। কারণ হলো এই গানটি এই লেক জুরিখ-কে নিয়েই লেখা।

জুরিখ লেক। ছবি:লেখক

এই লেকটি জুরিখ এর ঠিক মাঝখানে। একটু সাউথ সাইডে। বলা চলে লেক জুরিখ সুইজারল্যান্ডের সৌন্দর্যের একটা বৃহৎ অংশ। এটার কথা প্রচুর শুনেছি। গান শুনে শুনে মনের আকাশে এটা দেখেছি। আবার হলিউড মুভিতেও দেখেছি। বলিউডের দুই একটা মুভিতেও একে দেখেছি।

আজ সেই স্বপ্নময় সৌন্দর্যকে চাক্ষুস করলাম। হে আল্লাহ তোমার কি মহান সৃষ্টি। লেক জুরিখ এর এরিয়া বেশ বিস্তির্ন। লম্বা ৪০ কিলোমিটার এবং চওড়া ৪০ কিলোমিটার। আমাদের লেক অন্টারিও’র দৈর্ঘ এর সাথে তুলনা করা যাবে না। তবে তুলনা কারা যাবে এর সৌন্দর্য এবং পরিচ্ছন্নতার।

লেক জুরিখ এর মূল সৌন্দর্যই হলো এর পানি। এত পরিচ্ছন্ন এবং এইরকম টলটলে পানি আমি খুব কম দেখেছি। যাকে বলে একেবারে ক্রীস্টাল ক্লিন। এই লেকটা দেখলে আপনার অবশ্যই মনে হবে, সম্পূর্ণ হাতে বানানো এবং পরিকল্পিত। মূলত এই অপরুপ লেকটি স্রষ্টার সৃষ্টি। তবে তাকে ঝকমকে করেছে অবশ্যই মানুষ। এর প্রতিটি কোনে যেন সৌন্দর্য্য উপচে পড়ছে। জুরিখ সিটির একদম মধ্যস্থলে এই লেক। এবং একমাত্র ‘একুরিয়াম’ এ আমরা যেটা দেখে থাকি, যেমন টলমলে পানির মধ্যে নানা রঙের বর্নিল সব মাছ। এখানেও এই লেকের মধ্যে ঠিক ঐ রকম বর্ণিল সব মাছ। আমি মাছ গুলো দেখে অভিভূত হয়ে গেলাম। আবার পানির নীচে যেমন মাছ গুলো খেলা করছে, পানির উপরে তেমন পরিচ্ছন্ন নানান সাইজের হাঁস দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

সব থেকে আশ্চার্য এবং আনন্দ দায়ক হলো চারপাশে ঘেরা পাহাড়। নানান সেডের পাহাড়। এবং পাহাড় থেকে জলধারা (ঝর্ণা) নামছে লেকের ভেতরে। এবং চারপাশে প্রচুর বৃক্ষরাশি। লেকের তীর ঘেষে অসাধারণ সব বাংলো। বাংলোর সামনেই তাদের নিজস্ব বোট। আগেই বলেছি মূলত এই দেশটি গরীবদের জন্য নয়। সব ধনীরাই এখানে থাকে। এবং সেই ধনাঢ্য মানুষের চাকচিক্য তাদের বোটগুলোতেও পড়েছে। এক একেটি বোট দেখার মত। আমি এখানে (কানাডাতেও) প্রচুর বোট দেখেছি। তবে সুইজারল্যান্ডে এক একটি বোট দেখে মাথা খারাপ হওয়ার যোগার। যদিও বোটগুলি সব প্রায় প্রাইভেট। তবে বোটগুলি একপাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা। ছড়ানো ছিটানো নয়। এখানকার প্রতিটি জিনিশের মধ্যে আপনি সৌন্দর্য খুঁজে পাবেন। লেকের চারপাশে মানুষ বসে আছে জোড়ায় জোড়ায়। কেউবা সাঁতার কাটছে। প্রথমেই এর পরিবেশটা দেখলে মনে হবে যেন একটি প্রাইভেট সুইমিং পুলে আছেন। কিন্তু তারপরই দেখবেন অনেকে আবার বোট চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লেকের চরপাশে কিছু পরে পরেই বসার সুন্দর ব্যবস্থা। এবং অপরূপ শোভিত সব  স্ট্যাচু। এবং ভাস্কর্যগুলো সব দেখা মত। তবে সিংহের ভাস্কর্যের অধিক্য অনেক বেশী। বসার সিটগুলো এত সুন্দর এত পরিচ্ছন্ন, আমি রীতিমত বিস্মিত হলাম।

সব থেকে মজার- লেকটার চারপাশ দিয়েই পায়ে হাটার পথটি। এর চারপাশেই বৃক্ষরা শোভিত। আপনি হাটবেন এবং হাটবেন, একটুও ক্লান্তি অনুভব করবেন না। চারপাশের অপরূপ স্নিগ্ধ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে কখন যেন অনেকটা দূর চলে যাবেন। বুঝতেও পারবেন না।

লেক জুরিখ এর আকৃতিটা একদম কলার মত। এবং এই লেকটি সম্পূর্ণ প্রাইভেট। এই জন্য এই লেকে পাবলিকের কোন বোট ব্যবহার করা যাবে না। এখানে প্রবেশ করতে গেলে টিকিট কাটতে হয়। সেই জন্যই এই লেক জুরিখ এতটা পরিচ্ছন্ন। এবং এই জন্যই এর পানি এতটা স্বচ্ছ। কারণ এর পানি প্রতিনিয়ত পিউরিফাইড করা হয়, অনেকটা সুইমিং পুলের মত।

যাইহোক, এডুইন এবারে আমাদের তাড়া লাগালো। ঐ ছেলে-মেয়েদের আগেই বলে রেখেছিল, যেন দূরে কোথাও চলে না যায়। এবারে আমাদের (আমার জন্য বিশেষ করে) একটা দরুন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে নিয়ে যাবে। Kunsthaus Zürich Museum. এটা মিউজিয়াম বলছে, কিন্তু এটা মূলত আর্ট কালেকশন মিউজিয়াম। এই আর্ট কালেকশন মিউজিয়ামটি মূলত ক্লাসিক এবং আধুনিক সমন্বয়ে করা।

এটা একটু ভিন্ন ধর্মী। প্যারিসের কোন আট মিউজিয়ামের সাথে তুলানা করলে চলবে না। কারণ এখানে সবই সুইস আর্টিস্টদের আর্ট সম্ভার। এটা খুব বেশী আগের না। লোকাল আর্ট এ্যাসেসিয়েশন এর তরফ থেকেই এটা করা হয়েছিল ১৯১০ সালের এপ্রিল মাসে। এই মিউজিয়াম ডিজাইন করেছেন অথবা আর্কিটেকচার – Karl Moser. 

বেইজ এবং লাইট চকোলেট সেডে মিউজিয়ামটি করা। এবং যথারীতি জাতীয় পশু সিংহের একটি ছবি গেটের একটু উপরেই তামার পাতের উপর করা এবং এটা দেয়ালের ভেতরেই। তারও উপরে সব পৌরানিক ভাস্কর্য।

ভেতরটা অসম্ভব সুন্দর করে সাজানো। যেহেতু খুব বেশী বছর আগের নয়। একদমই বলা চলে মডার্ন আর্কিটেকচারে করা। সব থেকে ভাল লাগলো মিউজিয়ামের ভেতরটা-খুব প্রসারিত। হালকা হলুদ সেডের দেয়াল। এবং ছবির ফ্রেমগুলি বেশীরভাগই চকলেট সেডের। খুবই গুছিয়ে করা এই আর্ট মিউজিয়াম। গোটা সুইজারল্যান্ড দেশটাই যেন নিপুন তুলিতে আঁকা। প্রতিটি পদক্ষেপেই এদের সুরুচির ছায়া দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল। গোটা মিউজিয়ামটাই আমি একটি চক্কর লাগালাম প্রথমে। একটু কষ্ট হলেও। তবে পেইন্টিং তো তারা অবশ্যই বিখ্যাত আধুনিক ও পুরাতন মিলিয়েই করেছে। কিন্তু মুগ্ধ করেছে এদের উপস্থাপন। সম্ভবত এর আর্কিটেকচার অথবা ইনডোর ডিজাইনারের প্রশংসা না করলে আমার কিছুই বলা হবে না। যেখানে বেইজ দেয়াল সেখানে গাঢ় চকলেট ফ্রেম অথবা পেইন্টিংটার ভেতরের অংশও খুব গাঢ় রঙের। কোন কোন দেয়াল নীল বা উজ্জল নীল বর্নের, সেখানে ফ্রেমগুলো হালকা চকোলেট এবং পেইন্টিং এর ভেতরের অংশও হালকা।

দোতালায় উঠতেই ডানদিকে দেয়ালে হাত ধরাধরি করে নৃত্যরতা রমনিদের পেইন্টিংটি দেখে আমি এতটাই মুগ্ধ হলাম যে দোতালায় আর উঠতে পারছিলাম না। মাহিন বললো – আন্টি জলদি চলেন, মাত্র ২ ঘন্টা সময়।

আসলে ব্যক্তিগত ট্যুর না করলে এই জ¦ালা। তাদেরও দোষ দেওয়া যায় না। ৯টা থেকে ৯টা পর্যন্ত এতসব দেখানো, কম কথা নয়। এই আর্ট মিউজিয়ামে ১৩ সেঞ্চুরী থেকে ১৬ সেঞ্চুরী অব্দির ছবিও যেমন

আছে আবার একদম বর্তমান মডার্ন এক্সক্লুসিভ কালেকশনও আছে। কিছু মডার্ন আর্ট দেখে আমার এত ভাল লাগলো যে, আমি নড়তে পারছিলাম না। এরা ১৩ সেঞ্চুরী থেকে বর্তমান অবধি নিয়েছে কারণ এতে করে দর্শকদের চোখ এর ভারসাম্য যেন না হারায়। খুবই সিলেক্টিভ পেইন্টিংস এরা যুক্ত করেছে এখানে। কিছু কিছু আর্ট এর মধ্যে যেন আমি ঋধষড়হ-কে দেখতে পেলাম। কিছু থ্রি-ডি আর্ট এবং ছায়ার পেইন্টিং এতটা দুর্দান্ত যে আমার তাক লেগে গেল। Kunsthaus Art Museum, এটা গোটা সুইজারল্যান্ডের সেরা মিউজিয়াম। অতএব এর কালেকশনগুলোও দেখার মত। সব থেকে মজার ব্যাপার, মিউজিয়ামটি সাজানো মধ্যে অন্য আরো একটি দূরদর্শীতার পরিচয় পেলাম। যেহেতু দেশটি প্রায় ৯০%ই সর্বদা টুরস্টি দিয়ে ভরা থাকে। তাই সব শ্রেণীর দর্শকদের কথা চিন্তা করেই এটা সাজানো হয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ অরিজিনাল পেইন্টিং এবং স্থাপত্য শিল্প ৪০০০ এর মত আছে। তবে প্রিন্ট পেইন্টিং প্রায় ৯৫ হাজারের মত আছে ১৩ সেঞ্চুরী থেকে বর্তমান পর্যন্ত। এছাড়া ১০০ পেইন্টিং থাকে যেগুলো পার্মানেন্ট। অর্থাৎ এগুলো কখনো সরানো হয় না। আধুনিক পেইন্টিং অনেক কিছুর মধ্যে বর্তমানের নতুন নতুন পেইন্টিংও যোগ করা হয়। যেহেতু এই আর্ট গ্যালারী সম্পূর্ণই জুরিখ আর্টিস্টদের সমন্বেয়ে গঠিত।

এবারে আবারও যার যার ফোন বেজে উঠার আগেই বাসে চলে গেল বাচ্চাগুলো। কারণ খুব রোরিং জায়গা ছিল এটা ওদের জন্য। এবং এবারে যাওয়া হবে তাদের প্রিয় জায়গাতে।

জুরিখের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শপিং মল বা শপিং সেন্টার- Bahnhofstrasse. ছবি : লেখক

এটা জুরিখের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শপিং মল বা শপিং সেন্টার। খুব বিশ্রি এবং খটমটে একটা নাম- Bahnhofstrasse. এদের বেশীর ভাগ জায়গার নামগুলোর মধ্যে জার্মানী ভাষা খুব প্রাধান্য পেয়েছে।  Bahnhofstrasse, এই শপিং মলটি জুরিখ এর একদম হার্ট অব দ্যা ডাউন টাউনে। এটি পৃথিবীর অন্যতম প্রধান এক্সপেন্সিভ শপিং মল। ইউরোপের মধ্যে প্রথম এবং পৃথিবীর মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এর এক্সপেন্সিভনেস এর দিক দিয়ে। তবে এটা শপিং মল বলা যাবে না। এটা বলা উচিত শপিং স্ট্রিট। অনেকটা নিউইয়র্কের ফিফথ এ্যাভেনিউর মত। দেখতে একদম ওরকমই। তবে অবশ্যই দামের দিক দিয়ে নয়। ফিফথ এ্যাভিনিউ থেকে আমি প্রচুর পারফিউম কিনেছি।

তবু আমি এটা অবশ্যই বললো যে, জীবনের অন্যতম কোন স্বপ্নের কাছাকাছি যদি যেতে চান তবে অবশ্যই এখানে সকলের একবার যাওয়া উচিৎ। এবং ভবিষ্যতের কথা বেশী যদি চিন্তা না করেন তো

বিসমিল্লাহ বলে কিছু কিনেই ফেলা উচিৎ। পৃথিবীর এমন কোন ব্রান্ড নেই যে এখানে নাই। আসলে বলতে হবে পৃথিবীর যত দামী ব্যান্ডের যা কিছু আছে, সব এখানে পেয়ে যাবেন পকেট নিঃস্ব করে। আমিতো এক একটা জিনিশ হাত দিয়ে ধরি, তারপর গম্ভীর মুখে রেখে দেই, এরকম ভাব যে ‘এটাতো আমার আছেই একটা’। মজা হলো যে, এই স্ট্রিট এ নামার আগে এডুইন আমাদের এই নামটির উচ্চারণটা বাচ্চাদের মত শিখালো। কার সাধ্য যে এটা নরমালি উচ্চারণ করে? ‘ভান-অফ-ট্রসে’ এই হলো এর উচ্চারণ।

সুইজারল্যান্ডের সব ভাল, কেবল মাত্র নামগুলো বাদে। একটার থেকে আরেকটা বিদঘুটে সব নাম।

রেলওয়ে স্টেশন স্ট্রি। এটা খানিকটা আমাদের টরন্টোর ডাউনটাউনের কুইন/স্পাডাইনা স্ট্রিট এর মত। তবে এটা অনেক বেশী সুন্দর। পরিচ্ছন্ন। বলা চলে ঝকঝকে। মাঝখানে ‘আইল’। সেখানে সারি সারি বৃক্ষরাজি। আইলের দু’পাশে রাস্তা। এবং রাস্তার উপর ট্রাম বা স্ট্রট কারের লাইন। সেখানে একটু পর পর স্ট্রীট কার যাতায়ত করছে। রাস্তার দু’পাশে সারি সারি সব ১৩/১৪ থেকে ১৫/১৬ শতকের বিল্ডিং। এটাই সুইজারল্যান্ডের ঐতিহ্য। তবে প্রতিটি ডিল্ডিং এর রঙ প্রায় একই সেড-‘বেইজ’ ধরণের।

আমি কিছুই কিনলাম না যথারীতি। রায়হান টুকটাক বাচ্ছা এবং ক্যাথেরীনের জন্য কিনলো। মাহিন তার ক্রেডিড কার্ড দিয়ে আরাম করে শপিং করলো। প্রায় ওর ৬ মাসের বেতনের সামান। তারপর আমাকে হেসে হেসে নিজেই বললো, জীবনে আছে কি? কার জন্য জমাবো?

রাত ৯টা দিকে রওনা দিলাম। যদিও ড্রাইভার ঝড়ের গতিতে চালাচ্ছে। তবুও মনের ভেতরে টেনশন চলছে ক্রাউন প্লাজার ডাইনিং এখানো খোলা আছে কি নেই? তবে সন্ধ্যার দিকে আমরা টুকটাক খেয়েছি। তবু….। (চলবে)

রীনা গুলশান। টরন্টো।

gulshanararina@gmail.com