পুলিশে পদ্ধতিগত বর্ণবাদ নির্মূলে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বললো অন্টারিওর মানবাধিকার কমিশন

কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দেবার আগে পুলিশকে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের সুপারিশ

কানাডায় কৃষ্ণাঙ্গ, আদিবাসী ও অন্যান্য জাতিগত সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে প্রায়শ অতিরিক্ত অভিযোগ দেওয়া হয়। ছবি : পিক্সাবে

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ২৯ জুলাই, ২০২১ : অন্টারিওর মানবাধিকার কমিশন (OHRC) বলেছে, পুলিশ বিভাগে পদ্ধতিগত বর্ণবাদের অবসানে প্রাদেশিক সরকারকে একটি আইনী ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এ বিষয়ে কমিশন ১০টি পদক্ষেপের বিষয় প্রকাশ করেছে যা সরকারের করা উচিৎ বলে কমিশন মনে করে। এর মধ্যে রয়েছে, সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেবার আগে পুলিশ আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করছে কিনা তা দেখাশোনার মত একটি ব্যবস্থা চালু করা। রিপোর্ট করেছেন সিবিসি নিউজের ইয়াসমিন চানিয়া।
কমিশন উল্লেখ করে যে, কৃষ্ণাঙ্গ, আদিবাসী ও অন্যান্য জাতিগত সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে প্রায়শ অতিরিক্ত অভিযোগ দেওয়া হয়।
অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে আছে, বর্ণভিত্তিক একটি বৃহত্তর তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তদন্তে অধিকতর স্বচ্ছতা আনা এবং মানসিক স্বাস্থ্য, মাদকাসক্তি বা গৃহহীন ব্যক্তিদের সম্পর্কিত সাহায্য কামনায় অপেক্ষাকৃত স্বল্প সংখ্যক পুলিশ অফিসারের সাড়াদান নিশ্চিত করা।
চিফ কমিশনার ইনা চাধা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘অন্টারিওর সর্বত্রই পুলিশি ব্যবস্থায় পদ্ধতিগত অসাম্যের ব্যাপকতর বিরূপ প্রভাব রয়েছে।’
‘পদ্ধতিগত বর্ণবাদ নির্মূল করতে আমাদেরকে অবশ্যই সেই ব্যবস্থা সম্পর্কে পুনর্বিবেচনা করতে হবে যে ব্যবস্থা বর্ণবাদের টিকে থাকার সুযোগ দিয়েছে। আর আমাদের সরকারে সেরকম ব্যক্তিদের প্রয়োজন যাদের দূরদৃষ্টি, সমতার নীতিতে অঙ্গীকার এবং বিদ্যমান পদ্ধতি পাল্টে দেওয়ার কঠিন কাজ হাতে নেওয়ার মত দৃঢ় মনোবল রয়েছে।’
সিবিসি নিউজকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে Ministry of the Solicitor General বলেছে, তারা ‘মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ও সুপারিশমালা ‘সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করছে।’
কমিশন বলেছে, তারা যেসব সুপারিশ করেছে সেগুলি গত ত্রিশ বছর ধরে পুলিশি ব্যবস্থা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ এবং কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতিগত সম্প্রদায়ের লোকদের অভিজ্ঞতা এবং তাদের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে প্রণীত।
কমিশন বলছে, তারা গত কয়েক বছর ধরে টরন্টোতে বর্ণবাদের স্বরূপ এবং কৃষ্ণাঙ্গ জনগণের প্রতি বৈষম্য নিয়ে বিশেষভাবে গবেষণা করেছেন। তাতে তারা অন্য অনেক বিষয়ের সঙ্গে এটাও দেখেছেন যে, টরন্টো পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ কোনও ব্যক্তির নিহত হবার আশঙ্কা অন্য যে কোনও জাতিগত সম্প্রদায়ের লোক বা শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে অনেক বেশি।
২০১৭ সালে কমিশন টরন্টো পুলিশ সার্ভিসে সরকারি তদন্ত শুরু করে। এক বছর পর বিশেষ তদন্ত ইউনিটের সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রকাশিত কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে টরন্টোতে পুলিশের হাতে একজন কৃষ্ণাঙ্গের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা কোনও শ্বেতাঙ্গের চেয়ে ২০ গুণ বেশি ছিলো। কমিশন বলেছে, পুলিশি ব্যবস্থায় বর্ণবাদের অস্তিত্ব কেবল টরন্টোতেই সীমাবদ্ধ এটা বিশ্বাস করা হবে অতিশয় ‘সরল’ বিশ্বাস।