অভিবাসন ব্যবস্থার আধুনিকায়নে কানাডা ৮৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১: কানাডা অভিবাসী ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতির আধুনিকায়নে ৭২.১ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের পরিকল্পনা করছে।

এছাড়া দেশটি বিদেশী শিক্ষার স্বীকৃতিদান কর্মসূচির মানোন্নয়ন এবং দক্ষ নবাগতদের দ্রুত চাকরি পেতে সহায়তা করতে আগামী দুই বছরে ১৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের পরিকল্পনাও হাতে নিতে যাচ্ছে। খবর নিউকানাডিয়ানমিডিয়া.কম। রিপোর্ট করেছেন ফেবিয়ান ডাউসন।

গত সোমবার প্রকাশিত অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড-এর শারদীয় অর্থনৈতিক বিবৃতিতে এই পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরা হয়। আগামী বছর অভিবাসনকে কানাডার মহামারি-উত্তর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ভিত্তি হিসাবে নেয়ার লক্ষ্যে ওই বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।

কানাডার সরকার যখন আগামী তিন বছরের জন্য তার অভিবাসনের কোটা নাটকীয়ভাবে বাড়াচ্ছে তারই ধারাবাহিকতায় এই পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। সরকারের অভিবাসী কোটা বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় এই তিন বছরে আরও ১০ লক্ষাধিক নবাগত দেশটিতে আসতে পারে।

নতুন অভিবাসনের স্তর নির্ধারণ করা হয়েছে কানাডার মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ হারে। যার মধ্যে ২০২১ সালে চার লাখ এক হাজার, ২০২২ সালে চার লাখ ১১ হাজার এবং ২০২৩ সালে চার লাখ ২১ হাজার পারমানেন্ট রেসিডেন্ট অন্তর্ভুক্ত।

এ খাতে সরকারের বিনিয়োগের রূপরেখা তুলে ধরতে গিয়ে ফ্রিল্যান্ড বলেন, “কানাডার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অভিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০১৬-২০১৯ সালের মধ্যে দেশের প্রকৃত গড় প্রবৃদ্ধির অর্ধেক অবদান রাখেন অভিবাসীরা।

তিনি বলেন, “অভিবাসন না থাকলে এক দশকের সামান্য বেশি সময়ের মধ্যে কানাডার জনসংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করবে এবং সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি প্রতি বছরে এক শতাংশ হারে মন্থর হতে থাকবে।”

বিদেশি শিক্ষা সনদের স্বীকৃতিদান

ফ্রিল্যান্ড বলেন, অভিবাসন স্তর বাড়ানোর পর্যায়ে অভিবাসী ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের আবেদন প্রক্রিয়াকরণের যে ব্যবস্থাÑ সেই গ্লোবাল কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আধুনিকায়ন দরকার, এটি বর্তমানে যে জটিল কাগুজে নথিভিত্তিক ব্যবস্থায় রয়েছে তা থেকে সরে এসে সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্লাটফরমে উত্তরণ ঘটাতে হবে।

তিনি বলেন, “এই আধুনিক প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি কানাডা বিশ্বমানের অভিবাসন ব্যবস্থায় অবদান রাখবে এর উন্নত গ্রাহক সেবা, পরিচালনার দক্ষতা এবং কর্মসূচির সুসংহতির মাধ্যমে। এর ফলে দক্ষ ও মেধাবি নতুন কানাডীয়দেরকে এদেশে আনার ব্যাপারে উচ্চতর স্তরের পরিষেবা ও অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা নিশ্চিত হবে।”

শারদীয় অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সম্পর্কিত বিবৃতিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট মন্দা থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তার জন্য সারা বিশ্ব থেকে মেধাবি কর্মীদের আকৃষ্ট করা সরকারের পরিকল্পনার একটি জরুরী অংশ।

একই সঙ্গে, কানাডার অনেক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলি যেমন, তথ্য প্রযুক্তি (আইটি)তে পেশাজীবীদের চাহিদা বাড়ছে, কিন্তু এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে যেখানে দক্ষ কর্মী আছে কিন্তু মানসম্মত চাকরি নেই এবং মানসম্মত চাকরি আছে কিন্তু দক্ষ কর্মী মিলছে না।

দক্ষ নবাগতদের যে নির্দিষ্ট প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয় বিদেশি শিক্ষাসনদের স্বীকৃতিদানের কর্মসূচি তার সুরাহা করতে সহায়ক, যেমন, শিক্ষাসনদের স্বীকৃতি পাবার সময় ও অর্থব্যয়ের পরিমাণ কমানো। সম্প্রতি সরাসরি কর্মসংস্থানে সহায়তাদানের মত বিষয়েও এই কর্মসূচির আওতা বাড়ানো হয়েছে।

চাহিদা আছে এমন খাত যেমন, স্বাস্থ্য, আইটি এবং দক্ষ বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে দক্ষ নবাগতদেরকে  শ্রমবাজারের সঙ্গে একাত্ম হতে সহায়তা দেবার যে ব্যবস্থা এখন বিদ্যমান তা আনুপাতিক হারে বাড়ানো এবং সম্প্রসারণের জন্য সরকার ২০২১-২০২২ সালে বিদেশি শিক্ষাসনদের স্বীকৃতিদান কর্মসূচিতে ১৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে। এই বিনিয়োগের ফলে ১৫ হাজারের মত দক্ষ নবাগত উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।