২০২০ সালে কানাডার জনগণকে খাবারের পেছনে প্রায় ৫০০ ডলার অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে
জানুয়ারী ১০, ২০২০
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ : কানাডার পরিবারগুলোকে আগামী বছর খাবারের পেছনে গড়ে ৪৮৭ ডলার অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে। বার্ষিক এক রিপোর্টে একথা বলা হয়েছে। রিপোর্টে খাদ্যমূল্য বেড়ে যাবার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে মূল দায়ী হিসাবে চিহ্ণিত করা হয় বিশেষত যা উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। খবর দ্য কানাডিয়ান প্রেস এর।
অন্টারিওর গুয়েলফ ইউনিভার্সিটির মুখ্য গবেষক সিমন সোমোগি বলেন, অপ্রত্যাশিত তুষারঝড়, খরা ও অন্যান্য আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট ঘটনা আগেও খাদ্যশস্য ও অন্য খাবারের দামের ওপর বিরূপ প্রভাব রেখেছে।
কিন্তু কানাডার খাদ্যমূল্য সম্পর্কিত রিপোর্ট ২০২০ এর পেছনে সক্রিয় সোমোগি ও অন্যরা “জলবায়ু পরিবর্তনকেই” সামনে নিয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন, “আমরা সজ্ঞানেই এটা করেছি, আপনারা জানেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য খরা হচ্ছে, খুবই বাজে তুষারঝড়ের সৃষ্টি হচ্ছে যা দামের ওপর প্রভাব ফেলে।” এ প্রসঙ্গে তিনি গত ৮অক্টোবর প্রকাশিত জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) রিপোর্টের উল্লেখ করেন।
খরা, দাবানল, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, সুপেয় পানির অপ্রাপ্যতা এবং সমুদ্রতলের স্ফীতির মাধ্যমে পরিবর্তিত আবহাওয়ার ছাঁচ আমাদের খাদ্য ব্যবস্থার ওপর যে প্রভাব রাখছে রিপোর্টে তাকে ২০২০ সালের জন্য “ঘরের ভেতর হাতি”(এমন একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি যা এখনও আলোচনার পর্যায়ে রাখা হয়েছে) বলে অভিহিত করা হয়।
ইউনিভার্সিটি অব গুয়েলফ এবং হ্যালিফ্যাক্স-এর ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির গবেষকদের তৈরি রিপোর্টে বলা হয়, “ভবিষ্যতে কানাডার চাষীরা ফসলের ফলন নিয়ে অনিশ্চয়তা, গবাদি পশুর ওপর তাপপ্রবাহজনিত হুমকি, গোচারণভূমির প্রাপ্যতা এবং পোকা ও রোগসংক্রমণের মত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।”
জলবায়ু পরিবর্তন ও খাবারের দামের মধ্যকার এই সম্পর্কের ভিত্তিতেই আবাস দেওয়া হয়েছে যে, ২০২০ সালে কানাডার পরিবারগুলোকে গ্রোসারি শপ ও রেস্টুরেন্টে গড়ে ১২,৬৬৭ ডলার ব্যয় করতে হবে।
খাবারের জন্য যে অর্থ ব্যয় হবে তার মূল্যস্ফীতির প্রশ্ন
কানাডীয়রা অপেক্ষাকৃত অবিচলিত হারে মূল্যস্ফীতিরও মোকাবিলা করছে। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরে কনজুমারস প্রাইস ইনডেক্স একবছর আগের তুলনায় ১.৯ শতাংশ বেড়েছে- আগের দুই মাসের বৃদ্ধির পরিমাণও ছিলো একই। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এই ইনডেক্সের বৃদ্ধির হার ২.৫ শতাংশের নিচেই রয়েছে।
তাদের ডিনার প্লেটে পৃথিবী গ্রহটা
ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির প্রধান লেখক সিলভেইন শার্লেবোইস বলেন, খাদ্য সরবরাহের স্থিতিই জলবায়ু পরিবর্তনের একমাত্র শিকার নয়, এটি খাদ্যের চাহিদাকেও প্রভাবিত করেছে।
তিনি বলেন, “মানুষ যখন খাবারের বিষয়ে চিন্তা করে তখন তারা নিজের ডিনার প্লেটে পৃথিবী গ্রহটাকেই দেখতে পায় এবং তা আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে বেশি বাস্তব।”
শার্লিবোইস বলেন, অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রজন্ম অংশত তাদের খাবারের ওপর পরিবেশের প্রভাবের বিষয়টি মনে রেখেই কী খাবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তারা পুরোপুরি অথবা অংশত বসুধাভিত্তিক খাদ্যের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ফাস্ট-ফুডের চেইন শপ ও প্রস্তুতকারকরা এখন তরুণ প্রজন্মের জন্য গোশত বাদ দিয়ে কানাডাজুড়ে রেস্টুরেন্টগুলোতে সবজিজাতীয় বিকল্প খাবার মজুদ ও সবজিভিত্তিক বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।