৩টি হাইওয়েতে গতিসীমা ঘণ্টায় ১১০কিলোমিটার নির্ধারণের বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখছে অন্টারিও সরকার

জুন ৬, ২০১৯

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ১০ মে, ২০১৯ : অন্টারিও তিনটি ৪০০-সিরিজের হাইওয়ের কিছু অংশে গাড়ির গতিসীমা ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটারে উন্নীত করবে। সারা প্রদেশে গাড়ির গতিসীমা বাড়ানোর একটি পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসাবে এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। খবর কানাডিয়ান প্রেস এর।

পরিবহন মন্ত্রী জেফ ইয়ুরেক বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি নাগাদ শুরু হতে পারে এমন আরও কিছু প্রকল্পের ব্যাপারেও সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি গত শুক্রবার গাড়ির গতিসীমা বাড়ানো সম্পর্কিত পাইলট প্রকল্প ঘোষণা করেন।

মন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকার বিশ্বাস করে যে, গাড়ির গতিসীমা বাড়ানো হলে তা অন্যান্য প্রদেশের সাপেক্ষে দ্রুতগতির সীমা নির্ধারণের সুযোগ তৈরি করবে এবং তা বর্তমানে জনগণ যেভাবে গাড়ি চালাচ্ছে তার সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা করবে।” তিনি বলেন, “এ বিষয়ে স্থায়ী সিদ্ধান্তে পৌঁছার জন্য তথ্য আহরণের প্রাথমিক পদক্ষেপ হলো ওই পাইলট প্রকল্প।”

অন্টারিওর ৪০০-সিরিজ হাইওয়েতে গাড়ির বর্তমান গতিসীমা ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার।

সড়কে গাড়ি চালানোর বিধিবিধান অপরিবর্তিত থাকবে

পাইলট প্রকল্পের আওতায় আসবে লন্ডন ও সারনিয়ার মধ্যে সংযোগকারী হাইওয়ে ৪০২, হ্যামিলটন থেকে সেন্ট ক্যাথারাইনস পর্যন্ত কুইন এলিজাবেথ ওয়ে এবং অটোয়া থেকে অন্টারিও-কুইবেক সীমান্ত পর্যন্ত হাইওয়ে ৪১৭।

এছাড়াও অন্টারিওর উত্তরাঞ্চলের একটি হাইওয়ে এই প্রকল্পের আওতায় আসবে যেটি এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। ইউরেক বলেন, সড়কে গাড়ি চালানো সম্পর্কিত এই প্রদেশের বিধিবিধান যেটি দেড়শো কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি গতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সেটি অপরিবর্তিত থাকবে।

তিনি বলেন, “এই প্রকল্প তার আওতাধীন এলাকায় বর্ধিত গতিসীমা মানুষের গড় গতি, ভ্রমণের পরিমাণ এবং অন্যান্য উপাদানের ক্ষেত্রে কী পরিবর্তন আনছে তা পর্যবেক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করবে।”

ইউরেক বলেন, ৪০০-সিরিজের মহাসড়কে খুব সহজেই ১২০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালানো সম্ভব। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি প্রকল্পের অন্যতম অগ্রাধিকারে থাকবে বলে তিনি জানান।

মন্ত্রী বলেন, গতিসীমা বাড়ানোর ফলে চালকরা নির্ধারিত গতিসীমা ছাড়িয়ে গাড়ি চালাতে উৎসাহিত হবে বলে তিনি মনে করেন না। তবে পুলিশ বিপজ্জনক চালকদের ওপর নজর রাখবে।

অন্টারিওর পুলিশ প্রধানদের সমিতি বলেছে, তারা সরকারের পরামর্শ সভায় যোগ দিতে আগ্রহী। তবে তারা বলেন, গতিসীমা বাড়ানো হলেও সবার আগে মনে রাখতে হবে যে সেটা চালকের সুবিধার কথা বিবেচনা করে নয় বরং এতে জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

এনডিপির পরিবহন বিষয়ক আলোচক জেনিফার ফ্রেঞ্চ বলেন, সরকার এমন সময় হাইওয়েতে গাড়ির গতিসীমা বাড়াচ্ছে যখন তারা অন্টারিওর প্রাদেশিক পুলিশের বাজেট চার কোটি ৬০ লাখ ডলার কমিয়ে দিচ্ছে।

এক বিবৃতিতে জেনিফার ফ্রেঞ্চ বলেন, “হাইওয়েতে গাড়ি চলাচল পর্যবেক্ষণ এবং সবাইকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেওয়া বিপজ্জনক চালকদের আটকানোর জন্য জনগণ ওপিপির অফিসারদের ওপর ভরসা করে। কিন্তু একদিকে ফোর্ড সরকার ওপিপির বাজেট কমিয়ে দিচ্ছে আরেকদিকে হাইওয়েতে গাড়ির গতিসীমা বাড়াচ্ছে, এটা মোটেই ভারসাম্যপূর্ণ উদ্যোগ নয়।”

অন্যান্য প্রদেশে গতিসীমা বেশি

গ্রিন পার্টির নেতা মাইক স্ক্রিইনার বলেন, তিনি হাইওয়েতে গাড়ির গতিসীমা বাড়ানোর বিষয়ে “তথ্য-প্রমাণভিত্তিক” পর্যালোচনা সমর্থন করেন। তিনি আরও বলেন, প্রিমিয়ার ড্যাগ ফোর্ড সবসময় এমন সব নীতি গ্রহণের পেছনে ছোটেন যেটা বড় সংবাদ শিরোনাম হতে পারবে কিন্তু তিনি জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয়গুলোর দিকে নজর দেন না।”

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “এ ধরণের পর্যালোচনা হতে হবে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে, ড্যাগ ফোর্ডের তাৎক্ষণিক বাহবা কুড়ানোর প্রয়োজনের নিরিখে নয়। এগুলো হচ্ছে উত্তর আমেরিকার সব সময় সর্বোচ্চ ব্যস্ত কয়েকটি হাইওয়ের অংশ আর সেজন্যেই এখানে গতিসীমা বাড়ানোর সম্ভাব্যতা বিষয়ে তদন্ত হওয়া জরুরী, বিশেষ করে আমরা যদি অন্যান্য প্রদেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে পারি।”

বর্তমানে অন্য ছয়টি প্রদেশের কিছু কিছু হাইওয়েতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা অন্তত ১১০ কিমি/ঘণ্টা। আলবার্টা ১৯৯৩ সালে অনেক হাইওয়েতে গতিসীমা ১১০ কিলোমিটারে উন্নীত করে, নোভা স্কশিয়ায় ১৯৯৭ সালে এবং নিউ ব্রান্সউইকে ২০০১ সালে ওই গতিসীমা চালু করা হয়।

আর ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার একাধিক লেনবিশিষ্ট কিছু নির্দিষ্ট হাইওয়েতে গতিসীমা ১২০ কিমি/ঘণ্টা নির্ধারিত আছে। এটাই হলো এদেশে অনুমোদিত গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা।