গত বছর টরন্টোতে চার হাজারের বেশি গাড়ি চুরি হয়েছে

বিলাসবহুল গাড়ি বিদেশে পাচার করে দিয়েছে চোরেরা : সবচেয়ে বেশী চুরি হয়েছে হোন্ডা ও টয়োটা

জানুয়ারী ৭, ২০১৯

বৃহত্তর টরন্টো অঞ্চলে মোটরগাড়ি চুরির ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। প্রতীকি ছবি : সিবিসি

বৃহত্তর টরন্টো অঞ্চলে মোটরগাড়ি চুরির ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে, কিন্তু পুলিশ ও বিমা কোম্পানিগুলো বলছে, গাড়ির মালিকরাই চোরদের জন্য চুরি করাটা খুব সহজ করে দিয়েছেন।

সম্প্রতি প্রকাশিত আইবিসির (ইন্স্যুরেন্স ব্যুরো অব কানাডা) বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সারাদেশে মোটর গাড়ি চুরির পরিমাণ বেড়েছে ছয় শতাংশ। এতে সবচেয়ে বেশি চুরি হওয়া গাড়ির বিষয়েও তুলে ধরা হয়েছে। খবর সিবিসি নিউজের।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে টরন্টো পুলিশ বিভাগের সার্জেন্ট ডেনিয়েল সাবাডিকস বলেন, “গ্রেটার টরন্টোর কেন্দ্রীয় জেলার অংশ ৫৩ ডিভিশনে গত এক বছরে গাড়ি চুরির ঘটনা ৯২ শতাংশ বেড়েছে। আমাদের শহরে এটা এক মহামারির রূপ নিতে যাচ্ছে।”

“খোদ টরন্টো শহরেও গাড়ি চুরি বেড়েছে ২৯ শতাংশ। তার অর্থ হলো এই বছরে অতিরিক্ত প্রায় এক হাজার গাড়ি চুরি হয়েছে। সারা বছরের হিসাবে গাড়ি চুরির সংখ্যা গত বছরের ৩২০০ থেকে বেড়ে ৪২০০টিতে দাঁড়িয়েছে।”

বৃহত্তর টরন্টো অঞ্চলে মোটরগাড়ি চুরির ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। প্রতীকি ছবি : সিবিসি

সাবাডিকস বলেন, টরন্টোতে যেসব গাড়ি বেশি চুরি হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো জনপ্রিয় ব্রান্ড হোন্ডা এবং টয়োটা।

কেন্দ্রীয় ও উত্তর কেন্দ্রীয় জেলা Ñ নষড়ড়ৎ ংঃৎববঃ হড়ৎঃয থেকে নিয়ে ংঃববষবং ধাবহঁব এবং ফড়হ ৎরাবৎ বিংঃ থেকে নিয়ে নধঃযঁৎংঃ ংঃৎববঃ পর্যন্ত এলাকায় বিলাসবহুল গাড়ি চুরির ঘটনা বেড়েছে বলে জানায় পুলিশ।

সাবাডিকস বলেন, “যে চারটি ব্রান্ডের গাড়ি চুরির ফলে গাড়ি চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে সেগুলি হলো লেক্সাস, টয়োটা, মার্সিডিস এবং ল্যান্ড রোভার।

তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় জেলায় সারা বছরের হিসাবে দেঅ গেছে যে গত বছরের তুলনায় এবার গাড়ি চুরি বেড়েছে ২৪০ শতাংশ। নর্থ সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টÑ লরেন্স থেকে স্টিল্স পর্যন্ত এলাকায় বেড়েছে ৪৫ শতাংশ; আর সারা টরন্টোতে ওই চার ধরণের গাড়ি চুরি বেড়েছে ৯০ শতাংশ।”

পুলিশ জানায়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে চোরেরা কি ফব (শবু ভড়ন) নামে পরিচিত ইলেক্ট্রোনিক চাবির ক্লোন তৈরি করে এবং গাড়িতে উঠে নতুন প্রোগ্রাম করা ইলেক্ট্রোনিক চাবির সাহায্যে গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে যায়।

কিন্তু সাবাডিকস বলেন, গাড়ি চুরির সমস্যা কাটিয়ে ওঠার খুব সহজ উপায় রয়েছে যাতে ব্যয় হবে ৮০ থেকে ২০০ ডলার এবং এটি গাড়ি চোরদের জন্য প্রতিবন্ধক হিসাবে কাজ করবে। এই উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে:

– স্টিয়ারিং হুইল ক্লাব

– চাকায় গতিরোধক কীলক

– ওবিডি পোর্ট লক

– আফটারমার্কেট ইগনিশন অর ফিল্ড সেল কিল সুইচ

– ইন্টেলিজেন্ট রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ইম্মোবিলাইজার।

– আফটারমার্কেট অ্যালার্ম সিস্টেম।

এছাড়াও যাদের গ্যারেজ আছে তাদেরকে গাড়ি গ্যারেজে ঢুকিয়ে রাখারও পরামর্শ দেন সাবাডিকস।  তিনি বলেন, “গাড়ি গ্যারেজে পার্ক করুন। যদি আপনার গ্যারেজ থাকে তাহলে সেটা ব্যবহার করুন। কোনও কিছু চোখের আড়াল হলে মনেরও আড়ালে চলে যায়।”

চুরি করা যানবাহন বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে

আইবিসির বহিঃযোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক স্টিভ কি বলেন, টরন্টোতে চুরি হওয়া কিছু বিলাসবহুল গাড়ি বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আন্টারিওতে বেশ কিছু দামী এসইউভি চুরি হয়েছে এবং এগুলোর মধ্যে অনেকগুলি দেশের বাইরে  পাচার করা হয়েছে, সেগুলোর আর হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।”

তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, গাড়িগুলি সম্ভবত কন্টেনারে করে পাচার করা হয়েছে এবং বিদেশের বাজারে পাঠানো হচ্ছে।

মি. কি বলেন, মোটরগাড়ি চুরি হয়ে যাচ্ছে তারপরও প্রতিদিন অনেক লোক নিজের গাড়ি চালু রেখেই কফি শপে বা গ্যাস স্টেশনে নামছেন।