২০৩০ সালের মধ্যে প্রত্যেক কানাডীয়র জন্য সাধ্যের মধ্যে আবাসন সুবিধাদানের লক্ষ্য স্থির
এপ্রিল 8, 2019
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, মার্চ ১, ২০১৯ : কেন্দ্রীয় সরকারের একটি গৃহায়ন সংস্থা ২০৩০ সালের মধ্যে প্রত্যেক কানাডীয়র জন্য সাধ্যের মধ্যে গৃহায়নের ব্যবস্থা করবে বলে আশাবাদী। এই লক্ষ্যে সংস্থাটি একটি পরিকল্পনা নিয়েছে যা বাস্তবে রূপদানের জন্য অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
দি কানাডা মর্টগেজ অ্যান্ড হাউজিং করপোরেশন গত শুক্রবার বলেছে, ওই লক্ষ্য পূরণের জন্য সরকার ও দেশের অর্থনৈতিক সহায়তার প্রয়োজন হবে যেহেতু এই লক্ষ্যের প্রকৃতি অনেকটাই আকাক্সক্ষা পর্যায়ের। খবর কানাডিয়ান প্রেস এর।
করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট ইভান সিডাল তার পরিকল্পনাপত্রের শুরুতে লিখেছেন, “আমাদের বিশ্বাস, কানাডার প্রত্যেকেই নিজের সাধ্যমত একটি বাড়ির মালিক হবার যোগ্য যা তাদের চাহিদা পূরণ করবে। আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে, এটা বাস্তবে রূপদানের ক্ষেত্রে আমরা এখন সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছি।” তিনি আরও লেখেন, “এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা একনিষ্ঠ এবং এটি আগামী বছরগুলোতে আমাদের কাজের দিক-নির্দেশক হিসাবে কাজ করবে।”
প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের উপায়সহ পরিকল্পনা
বাড়ির প্রয়োজন যাদের ‘সবচেয়ে বেশি’ এমন কানাডীয় পরিবারের সংখ্যা হিসাব করা হয়েছে ১৬ লাখ। তার মানে হলো, লোকেরা এমন সব বাড়িতে থাকে যা তাদের জন্য খুব বেশি ব্যয়বহুল অথবা যেগুলো তাদের থাকার উপযুক্ত নয়।
পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, এটি বাস্তবায়নের জন্য লিঙ্গ, জাতিগত পরিচয়, যৌনতার অভ্যাস এবং লৈঙ্গিক পরিচয়ের ভিত্তিতে বিদ্যমান বাঁধাগুলো দূর করতে হবে।
সংস্থাটি তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে এই পরিকল্পনার অংশীজনদের সঙ্গে মাসের পর মাস ধরে কথা বলেছে। কারণ এটি মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের ১০ বছর মেয়াদী এবং চার হাজার কোটি ডলারের গৃহায়ন কৌশলের বেশিরভাগ অর্থের যোগান দিতে যাচ্ছে। এর লক্ষ্য হলো অংশত নিন্ম ও মধ্যম আয়ের পরিবারের জন্য ২০২৮ সালের মধ্যে অন্তত এক লাখ ইউনিট নতুন আবাসন তৈরি করা।
গৃহায়নের পক্ষের এবং গৃহহীনতার বিরুদ্ধে সোচ্চার গোষ্ঠীগুলো পরিকল্পনাটিকে মুখ্যত উষ্ণভাবে স্বাগত জানালেও যারা চরম আবাসন সঙ্কটে রয়েছে তাদের চাহিদা পূরণ বা ২০৩০ সালের মধ্যে আবাসন সঙ্কট নিরসনের লক্ষ্যপূরণে ১০ বছর ধরে এক লাখ নতুন আবাসন তৈরি যথেষ্ট কিনা তা নিয়ে কিছু সংশয়ও রয়েছে।
গৃহহীনতা নিরসনে কানাডীয় অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট টিম রিচার বলেন, “আমার মনে হয়, খুবই সীমিত সম্পদ নিয়ে খুব বেশি সংখ্যক মানুষের জন্য খুব বেশি কিছু করার প্রয়াস চালানোর চিন্তাটাই এই পরিকল্পনার অন্যতম দুর্বলতা।”
তিনি আরও বলেন, “আমি সত্যিই বুঝতে পারি না, মধ্যম আয়ের কানাডীয়দের জন্য সাধ্যের মধ্যে আবাসনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা কীভাবে অর্থবহ হতে পারে। আমি মধ্যম আয়ের কানাডীয়দের সাধ্যের চ্যালেঞ্জটা বুঝি, কিন্তু সাধ্যমত আবাসনের দিক থেকে ভাবলে তারা যদি নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে চায় তাহলে তাদের বিনিয়োগের সর্বপ্রথম অগ্রাধিকার হওয়া দরকার ছিলো যারা চরম আবাসন সঙ্কটে রয়েছে তারা।”
ফেডারেল গৃহায়ন করপোরেশন আগামী এক বছরে আবাসন খাতে ঋণ এবং অর্থ সহায়তার আকারে মোটামুটি ২৪ লাখ ডলার বিতরণ এবং তিন হাজার ৮০০ ভাড়াবাড়িসহ মোট আট হাজার ৩০০ নতুন আবাসন ইউনিট তৈরি এবং আরও ১৫ হাজার আবাসন সুবিধা সংস্কারের পরিকল্পনা করছে।
আর সংস্থাটি তিনটি বৃহত্তর পরীক্ষামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে সাধ্যের মধ্যে গৃহায়নের মডেল কর্মসূচি বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা পরীক্ষা করে দেখতে আগামী তিন বছরে অন্তত ১০ কোটি ডলার বিলি করার প্রতিশ্র“তি দিচ্ছে। এই তিনটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি হতে পারে আঞ্চলিক বা জাতীয় পর্যায়ের। এগুলোর মাধ্যমে তারা যাচাই করে দেখবে যে তাদের চিন্তা-ভাবনা কতটা কাজে দিচ্ছে।
এই অর্থ কীভাবে সুফল দেবে তা সত্যিকার অর্থে স্পষ্ট নয়, তবে লিবারেল সরকার সারাদেশে গৃহহীনতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি মহতি উদ্যোগের অংশ হিসাবে সাধ্যের মধ্যে আবাসন ও তহবিল সরবরাহের একটি নতুন উপায় খুঁজে বের করার প্রয়াস চালানোর ঝোঁকপ্রবণতা প্রদর্শন করেছে।
লিবারেল, কনজারভেটিভ এবং ডেমোক্র্যাট সব দলই গৃহায়ন নীতির ওপর নানা পরীক্ষা চালিয়েছে যাতে এটি তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এবং সব দলেরই অভিন্ন মনোভাব হলো প্রথম বাড়ি বা কন্ডোমিনিয়াম কেনার বিষয়টি সহজতর করে আনা।
তাদের ধারণার মধ্যে রয়েছে আবাসন কেনার সামর্থ কখনই হবে না এমন ঝুঁকির মধ্যে থাকা নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য সুবিধা বা ঋণদান এবং বিদ্যমান গৃহায়ন কর্মসূচিগুলোতে অর্থের যোগান বাড়িয়ে দেওয়া।