ইউরোপ সফরে যাবেন? কানাডিয়ান নাগরিকদের জন্য আসছে নতুন আইন
পূরণ করতে হবে নির্ধারিত বিশেষ ফরম : দিতে হবে নির্ধারিত ফি
এপ্রিল 8, 2019
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কানাডার নাগরিকদের কেউ ইউরোপ ভ্রমণ করতে চাইলে শুধুমাত্র পাসপোর্ট আর টিকিট নিয়ে উড়োজাহাজে চড়ে বসলেই হবে না। যেমনটি করে আসছিলেন এতদিন ধরে।
কানাডিয়ান নাগরিকদের জন্য আসছে নতুন আইন। ঐ আইন বলবৎ হলে তাকে পূরণ করতে হবে বিশেষ এক ফরম। শুধু তাই নয়, দিতে হবে নির্ধারিত ফি-ও। খবর সিটিভি নিউজের।
অবশ্য শুধু কানাডিয়ানদের জন্যই যে এই আইন করা হচ্ছে তা নয়। পৃথিবীর প্রায় ৬০টিরও বেশী দেশের নাগরিকদের জন্যই করা হচ্ছে এই আইন যারা এতদিন ধরে বিনা ভিসায় ইউরোপের প্রায় সবকটি দেশই ভ্রমণ করতে পারতেন।
নতুন এই আইনটি European Travel Information and Authorisation System নামে পরিচিত হবে। সংক্ষেপে ETIAS. নতুন এই আইন করা হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য। বর্তমানে ব্যবসা বা বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় ৬০টিরও বেশী দেশের নাগরিকেরা তিন মাসের জন্য ইউরোপ যেতে পারেন বিনা ভিসায়। নতুন আইন বলবৎ হলে যে বা যারা ইউরোপের Schengen area- তে ভ্রমণ করতে যাবেন তাদেরকে সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে এবং বাধ্যতামূলক ফি প্রদান করতে হবে। Schengen area’র দেশগুলো হলো – বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, এস্টোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানী, গ্রীস, হাঙেরী, আইসল্যান্ড, ইটালী, লাটভিয়া, লিচেইনস্টাইন, লিথূনিয়া, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, দি নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, শ্লোভাকিয়া, শ্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন এবং সুইজারল্যান্ড। তবে যুক্তরাজ্য Schengen area’র বাইরে।
ইউরোপীয় কমিশন অবশ্য বলেছে ETIAS ভিসার মতো কোন বিষয় নয় এবং এটি সহজলভ্য করা হবে। আবেদনকারীকে কোন দূতাবাস বা কনস্যুলেট অফিসেও যেতে হবে না। কোন বায়োমেট্রিক ডাটা কালেক্ট করা হবে না এবং আবেদনকারীর খুব কম তথ্যই জোগাড় হবে ভিসা এপ্লিকেশন প্রক্রিয়ার সময়। ২০২১ সালের জানুয়ারী মাস থেকে কানাডার নাগরিকদের মধ্যে যারা ইউরোপের ঝপযবহমবহ ধৎবধ’র দেশগুলোতে যেতে চাইবেন তাদেরকে ETIAS এর জন্য আবেদন করতে হবে। ইউরোপ ভ্রমণের নতুন নিয়মে আরো যা যা থাকছে :
কাদেরকে আবেদন করতে হবে?
বর্তমানে যে সকল দেশের নাগরিকদেরকে ইউরোপ ভ্রমণে যেতে হলে ভিসা নিতে হয় না।
শিশুদের পক্ষে এই আবেদন করতে পারবেন তাদের পিতা-মাতা বা অভিভাবকগণ।
কি ভাবে আবেদন করতে হবে?
ভ্রমণে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। আর এই আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে যাত্রা শুরুর অন্তত তিনদিন আগে। ডাকযোগে প্রেরিত কোন আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না। আবেদনপত্র পূরণে ১০ মিনিটের বেশী সময় লাগবে না।
আবেদনপত্রে যে সকল তথ্য দিতে হবে তার মধ্যে আছে- নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা এবং পাসপোর্টের তথ্য। আবেদনকারীকে তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যও দিতে হবে এবং ভ্রমণ ইতিহাসও। সেই সাথে ক্রিমিনাল রেকর্ড থাকলে তাও জানাতে হবে।
ফি কত দিতে হবে?
বেশী নয়। প্রাপ্তবয়স্কদের বেলায় জনপ্রতি ১০.৫০ ডলার। অপ্রাপ্তবয়স্কদের (১৮ বছরের নিচে) কোন ফি লাগবে না।
যদি আবেদনপত্র অগ্রাহ্য হয়?
ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, শতকরা ৯৫ জনের ক্ষেত্রেই ফি প্রদানের পর মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই আবেদপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে গৃহীত হয়ে যাবে। তবে যাদের আবেদপত্র যাচাইবাছাই করার সময় পুলিশি সংস্থা ইন্টারপোল বা ইউরোপোল এর চোখে কোন সন্দেহ সৃষ্টি হয় তখন সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রসেস না করে ম্যানুয়ালী প্রসেস করা হবে। আর সে ক্ষেত্রে আবেদনপত্র প্রসেস হতে এক মাসও লেগে যেতে পারে। তবে যাদের আবেদপত্র অগ্রাহ্য করা হবে তাদের সুযোগ থাকবে অপীল করার।
আবেদপত্র গৃহীত হলে কতদিনের বৈধতা থাকবে ইউরোপে প্রবেশাধিকারের?
আবেদপত্র গৃহীত হলে ETIAS এর বৈধতা থাকবে তিন বছরের জন্য অথবা পাসপোর্টের মেয়াদ যতদিন থাকে। যে কোন ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ তিন মাস ভ্রমণ করতে পারবেন একজন ভ্রমণকারী।