কানাডায় মসজিদে আগুন : প্রতি সপ্তাহে একজন করে মুসলমান হত্যার হুমকী!
ডিসেম্বর ৯, ২০১৫
প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : জঙ্গী সংগঠন আইএস এর ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ একদল হোমগ্রোন টেররিস্ট গত ১৩ নভেম্বের রাতে প্যারিসের বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটায়। এতে মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে শতাধিক প্যারিসবাসীর। নিরীহ নগরবাসীর উপর ঐ কাপুরুষচিত হামলার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠে। নিন্দা জানায় কানাডার সরকার ও সাধারণ মানুষও। নিন্দা প্রকাশ করে কানাডায় বসবাসরত মুসলিম সম্প্রদায়ও।
কিন্তু তার ঠিক পরের দিনই কানাডার অন্টারিও প্রভিন্সের পিটারবরো (টরন্টোর নিকটবর্তী) সিটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় আল সালাম মসজিদে। পিটারবরোতে ঐ একটিই মাত্র মসজিদ মুসলমানদের। আগুন কে বা কারা লাগিয়েছে তা পুলিশ এখনো বের করতে পারেনি। তবে এটি স্পষ্টতই হেট ক্রাইম একথা জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ। সিবিসি নিউজ জানায়, প্যারিসের ঘটনার সঙ্গে এর কোন সম্পৃক্ততা আছে কি না সে ব্যাপারে পুলিশ অবশ্য এখনো মুখ খুলেনি।
এদিকে কানাডিয়ান প্রেস এর এক খবরে বলা হয়, প্যারসের ঘটনার পর কানাডার মন্ট্রিয়লে এক মুখোশধারী যুবক প্রতি সপ্তাহে একজন করে মুসলমান বা আরবীয় অভিবাসীকে হত্যা করবে এই মর্মে ইউটিউবে এক ভিডিও বার্তা ছড়িয়ে দেয়। যুবকটি দাবী করে সে একা নয়, তাকে সহায়তা করার জন্য আরো লোক আছে।
পুলিশ অবশ্য তাকে গ্রেফতার করেছে। তবে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। আর ইউটিউব থেকে ঐ ভিডিও বার্তাটিও অপসারণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ঐ যুবকটি তার ভিডিও বার্তায় বলে সে কুইবেকে বসবাসকারী মুসলিম অভিবাসীদের ব্যাপারে হতাশ। সরকার যদি এই মুসলিম অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তবে সে নিজেই এগিয়ে আসবে।
এদিকে আল সালাম মসজিদে আগুন লাগানোর ঘটনায় স্থানীয় এমপি ও মেয়র এর তীব্র নিন্দা জানান।
আগুন লাগানোর মাত্র ৩০ মিনিট আগেও মসজিদে মুসল্লিদের সমাগম ছিল। তারা বের হয়ে যাওয়ার পরই কে বা কার এতে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রতিবেশী এক ব্যক্তি মসজিদ থেকে ধুয়ার কুন্ডলী বেরুতে দেখে ৯/১১ এ কল করে। আগুনে মসজিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কারো আহত বা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারন করা হয় ৮০ হাজার ডলার।
এদিকে মসজিদের হমলার ঘটনার পর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন অনেকেই। এই রিপোর্ট যখন লেখা হয় তখন পর্যন্ত বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ১ লাখ ১০,০০০ হাজার ডলার সহায়তা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায় বলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়। অন্যদিকে মসজিদের সংস্কার কাজ সমাপন না হওয়া পর্যন্ত পিটারবরোর একাধিক গীর্যা নামাজ আদায় করার জন্য তাদের ভবন ব্যবহারের প্রস্তাব দেয় স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়কে।
পিটারবরোর কাউয়ারথা মুসলিম রিলিজিয়াস এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট কেনজু আবদেলা বলেন, আমরা এই ঘটনায় মর্মাহত। পিটারবরোর সকল সম্প্রদায়ের অধিবাসীদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত আন্তরিক। গত বছর আমাদের মসজিদে একটি ওপেন হাউস এর কর্মসূচী পালন করা হয়েছিল যেখান পিটারবরোর মেয়র ডারেল বেনিটও উপস্থিত ছিলেন।
পিটারবরোর মেয়র ডারেল বেনিট বলেন, পিটারবরো খুবই নিরাপদ একটি কমিউনিটি এবং আমরা সকল ধর্ম বিশ্বাসের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।