ক্যালগারি ইসলামিক সেন্টার এখন চরমপন্থার বিরুদ্ধে কথা বলছে
জুলাই ২৮, ২০১৪
স্ট্যুয়ার্ট বেল : যে দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি ক্যালগরির ইসলামিক সেন্টার পরিচালনা করে সেটিতে একসময় মুষ্ঠিমেয় কিছু সংখ্যক কানাডীয় নাগরিক নিয়মিত যাওয়া-আসা করতেন যারা পরে যুদ্ধ করতে সিরিয়ায় গিয়েছে। সেই দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি চরমপন্থী গ্রুপে যোগদানের ব্যাপারে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
ক্যালগরি ইসলামিক ইনফরমেশন সোসাইটি (আইআইএসসি) বিবৃতিতে বলেছে, তারা বিদেশের মাটিতে যুদ্ধ করতে যাওয়ার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করতে আরও কিছু করার জন্য কানাডার মুসলিম সংগঠনগুলোর প্রতি আহবান জানায়।
হাসিনে চেব্বানি বলেন, ‘‘যুবকদের প্রতি আমাদের বার্তা একেবারেই পরিষ্কার: কেউ যদি তোমাকে বলে যে, একটি বিমানে, রেলগাড়িতে বা কোন পাবলিক প্লেসে নিজেকে বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যা করলে তুমি বেহেশতে যাবে তাহলে সে তোমাকে বিভ্রান্ত করছে এবং এটি গোটা মুসলিম সমাজ এবং খোদ ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধেও অপরাধ।’’
শেখ চেব্বানি হলেন ডাউন টাউন ৮ম এবং ৮ম মাসাল্লাহতে একটি ছোট্ট নামাজ ঘরের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান আইআইএসসির ধর্মীয় বিষয়ক পরিচালক। ওই নামাজ ঘরটি একসময় কিছু তরুণ কানাডীয়র যাওয়া-আসার কেন্দ্র ছিলো এবং যারা নিজেদের একটি প্রার্থনা গ্রুপ তৈরি করে নেয় এবং নিজেদেরকে মুসলমান মানেই জেহাদকারী এমন আদর্শের অনুসারী মনে করতে থাকে।
তাদের মধ্যে একজন ছিলো ড্যানিয়ান ক্লেয়ারমন্ট যে একটি আত্মঘাতী হামলার চেষ্টার পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এবং জানুয়ারি মাসে সিরিয়ায় মারা যায়। এছাড়াও ছিলো পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত কানাডীয় সালমান আশরাফি যার বিরুদ্ধে ২০১২ সালের নভেম্বরে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৯জন ইরাকীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
তাদের সঙ্গে ক্যালগরির আরও একজন যুুবক ছিলো যাকে সিবিসি সোমালী-কানাডিয়ান ফারাহ মোহামেদ সিরডন হিসাবে চিহ্নিত করেছে যাকে গত এপ্রিলে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক ও আল-শ্যাম-এর একটি ভিডিওতে দেখা গেছে। ভিডিওতে সে বলেছে, ‘‘এটি হলো কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সব নির্যাতনকারীর জন্য একটি বার্তা: সর্বশক্তিমান আল্লাহর নির্দেশে আমরা আসছি এবং আমরা তোমাদের ধ্বংস করবো।’’
সিরিয়ার সংঘাত পাশ্চাত্যের চরমপন্থী যুবকদের চুম্বকের মতো আকর্ষণ করছে, তাদের অনেকেই আইসিসে যোগ দিয়েছে। আইসিস (ওঝওঝ) হচ্ছে একটি অতি চরমপন্থী সশস্ত্র গ্রুপ যারা সম্প্রতি ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর দখল করেছে এবং তাদের শত্রুদের গণহারে নিধন করতে শুরু করেছে।
সিরিয়ার চরমপন্থী গ্রুপগুলোর সদস্যরা সন্ত্রাসী হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে কানাডায় ফিরে আসতে পারে এমন আশঙ্কার মধ্যে আরসিএমপি (জঈগচ) তার ভাষায় ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ পর্যটক’দের চিহ্নিতকরণ, বাধা দেয়া এবং অনুসরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সিএসআইএস-এর তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন জেহাদী গ্রুপে অন্তত ১৩০ জন কানাডীয় নাগরিক সক্রিয় রয়েছে, যাদের মধ্যে ৩০ জন রয়েছে সিরিয়ায়। আইআইএসসির প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ বারাহিম বলেন, ‘‘আইআইএসসিতে আমরা বিশ্বাস করি যে, আমাদের যুবকদের, পরিবারগুলোর এবং সার্বিকভাবে আমাদের কমিউনিটির নিরাপত্তা হলো সকল গ্রুপ ও ব্যক্তিবিশেষের দায়িত্ব এবং ভবিষ্যতে এরকম কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যা কিছু করা সম্ভব আমরা তা করবো।’’ -ন্যাশনাল পোস্ট