টরন্টোতে একটি গড়পরতা মানের কন্ডো কিনতে হলে এখন আপনার আয় হতে হবে লাখ ডলার
এক বছর আগেও যেটা ৭৭,০০০ ডলার আয়ে সম্ভব ছিলো
বৃহত্তর টরন্টো এলাকায় একটি গড়পরতা মানের কন্ডো কিনতে মর্টগেজ সুবিধা পাবার যোগ্যতা অর্জনের জন্য যে আয় দরকার তা গত এক বছর সময়ের মধ্যে প্রায় তিনগুণ বেড়ে গেছে। আর এটা ঘটেছে কন্ডোর দাম বেড়ে যাওয়া এবং মর্টগেজ এর কঠোরতর নতুন বিধিমালা এই উভয় কারণেই। নতুন এক রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
রিয়েল এস্টেট কনসালটেন্সি আরবানেশন-এর বুধবার প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বছরের প্রথম তিন মাসের হিসাবে দেখা যায়, একটি গড়পরতা দামের কন্ডো কেনার জন্য মর্টগেজ এর সুবিধা পেতে হলে ক্রেতার আয়ের পরিমাণ এক লাখ ডলার হতে হবে। খবর হাফিংটন পোস্ট।
অথচ মাত্র এক বছর আগেও ৭৭,০০০ ডলার আয়ের বিপরীতে মর্টগেজ এর সুবিধা পাওয়া সম্ভব ছিলো। আরবানেশন জানায়, দুবছর আগে মর্টগেজ এর সুবিধা পাওয়ার জন্য ক্রেতার আয় ৬৪,০০০ ডলার হওয়ার দরকার ছিলো।
আরবানেশনের রিপোর্টে আরও বলা হয়, মর্টগেজ এর সুবিধা সম্পর্কিত কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন বিধি-বিধান অনুযায়ী ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান যে সুদহারে ঋণ দেয় তার চেয়েও উচ্চ হারের সুদ পরিশোধের সামর্থ থাকতে হবে ক্রেতার। আর এই বিধি-বিধানের কারণেই ক্রেতার আয় বেশি হতে হবে।
তথ্যপ্রমাণে দেখা যাচ্ছে যে, কন্ডোর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে সম্ভাব্য বাড়ি ক্রেতাদের একটি বড় অংশ রিয়েল এস্টেট মার্কেট থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। চলতি সপ্তাহে রিয়েলটর রি/ম্যাক্স-এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সম্ভাব্য বাড়ি ক্রেতাদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন বাড়ি কেনার চিন্তাভাবনা সরাসরি বাতিল করে দিয়েছেন আর প্রতি ১০ জনের মধ্যে চারজন তাদের বাড়ি কেনার উচ্চাভিলাষ থেকে সরে এসে অপেক্ষাকৃত স্বল্পমূল্যের বাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আবাসন মার্কেটে এসব ঘটনার একটা প্রভাব পড়ছে। টরন্টো রিয়েল এস্টেট বোর্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্চ মাসে এই অঞ্চলে কন্ডোর বিক্রি এক বছর আগের তুলনায় ৩২.৭ শতাংশ কমে গেছেÑ যদিও কয়েক বছর ধরে দাম কিন্তু ৬.১ শতাংশ বেশিই রয়েছে।
তবে আরবানেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শন হিলডেব্রান্ড বলেন, বাড়ির ক্রেতারা সামনের বছর কিছুটা হলেও স্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি হবে বলে আশা করতে পারেন।
হিলডেব্রান্ড হাফপোস্টকে বলেন, “ঠিক এই মুহূর্তে প্রায় ৬০ হাজার কন্ডো নির্মাণাধীন রয়েছে এবং আরও ৪০ হাজার আগেই বিক্রি হয়ে গেছে যেগুলো নির্মাণ শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে। সুতরাং আমি আনন্দের সঙ্গে বলবো যে, বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে তার চেয়ে সরবরাহের পরিস্থিতি হবে বেশ ভালো। আর এতে করে আগামী কয়েক বছরে বাড়ির দামের ওপর নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেবে।”
কন্ডোর ভাড়াও বেড়েছে ১০.৭ শতাংশ হারে
আরবানেশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাড়ির দাম বাড়ার কারণে সম্ভাব্য ক্রেতাদের বাজার থেকে সরে যাবার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তারা ভাড়া বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন এবং এর ফলে বাড়িভাড়ার ওপর চাপ বাড়ছে।
রিপোর্টে বলা হয়, ৭৪০ বর্গফুটের একটি গড়পরতা মানের কন্ডোর মাসিক ভাড়া গত এক বছরে ১০.৭ শতাংশ বেড়ে ২,২০৬ ডলারে পৌঁছেছে। (আরবানেশনের রিপোর্টে নগরীর ভাড়া দেওয়ার জন্য নির্ধারিত অ্যাপার্টমেন্টের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি যেটা কন্ডো মার্কেটের চেয়ে সার্বিকভাবে কম ব্যয়বহুল।)
আরবানেশন বলেছে, ভাড়া বাড়িতে বসবাসকারীদের জন্যও স্বস্তির সময় আসতে যাচ্ছে যদিও সেটা আসবে একটু ধীরে। রিপোর্টে উল্ল্লেখ করা হয়েছে যে, ভাড়া দেওয়ার জন্য নির্মাণাধীন অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা ২০১৭ সালের শেষ তিন মাসে গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭,৯৩৭ টিতে দাঁড়িয়েছে যা এক বছর আগের একই সময়ের চেয়ে ৫,৮৩২ টি বেশি।