রেসিডেন্সী ও ল্যাঙ্গুয়েজ রুল শিথিল করার পর নাগরিকত্ব লাভের জন্য আবেদনের সংখ্যা পাঁচগুন বৃদ্ধি

ইমিগ্রেশন আইন শিথিল করার পর এক সপ্তাহে ১৭,৫০০ টি আবেদন পত্র জমা পড়েছে : আগে গড়ে প্রতি সপ্তাহে আবেদন পত্র জমা পড়তো ৩৬৫৩ টি

ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৮

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : গত শরৎ ঋতুতে কানাডার ইমিগ্রেশন আইন শিথিল করার পর নাগরিকত্ব লাভের জন্য আবেদনের সংখ্যা হঠাৎ করেই প্রায় পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সিবিসি নিউজের এক খবরে বলা হয় গত ১১ অক্টোবর নতুন নিয়ম চালু হওয়ার আগে নাগরিকত্ব লাভের আবেদন পত্রের সংখ্যা ছিল প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৩৬৫৩টি। কিন্তু ১১ সেপ্টেম্বরের পরের সপ্তাহে এই সংখ্যা হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়ে দাড়ায় ১৭,৫০০ টি। অবশ্য পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে এই সংখ্যা কত ছিল তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।

ইমিগ্রেশন, রিফিউজি এ্যান্ড সিটিজেনশীপ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ন্যান্সী ক্যারন বলেন, নাগরিকত্ব লাভের জন্য কানাডায় শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকার যে নিয়ম ছিল তা অনেকটা শিথিল করায় আবেদকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

উল্ল্লেখ্য যে, সাবেক কনজারভেটিভ সরকার আইন করে গিয়েছিল কানাডার নাগরিকত্ব লাভ করতে হলে ইমিগ্রেন্টদেরকে ৬ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৪ বছর কানাডায় বাস করতে হবে। তারও আগে নিয়ম ছিল ৪ বছরের মধ্যে তিন বছর কানাডায় থাকতে হবে। লিবারেল সরকার এখন বিল সি-৬ এ নিয়ম করেছে ৫ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৩ বছর কানাডায় বাস করতে হবে সিটিজেনশীপের জন্য আবেদন করার আগে। তাছাড়া পার্মান্টে রেসিডেন্সী পাওয়ার আগের সময়টাও কাউন্ট করা হবে যারা ঐ সময়টা কানাডায় অবস্থান করছিলেন। তবে সেই সময়ের অর্ধেকটা কাউন্ট করা হবে। অর্থাৎ কেউ এক বছর অবস্থান করে থাকলে ৬ মাস কাউন্ট করা হবে।

তাছাড়া এখন থেকে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারীদেরকে এই মর্মে ঘোষণা দিতে হবে না যে তারা কানাডায়ই বাস করবে। নাগরিকত্ব পাওয়ার পর তারা চাকুরী বা অন্য কোন ব্যক্তিগত কারণে কানাডার বাইরে বাস করতে পারবেন যদি তারা চান।

অন্যদিকে বর্তমান সরকার নাগরিকত্ব লাভের জন্য ল্যাংগুয়েজ এন্ড নলেজ টেস্ট এর বয়স ১৮ থেকে ৫৪ বছর  করেছে। কনজারভেটিভ পার্টি আইন করে গিয়েছিল যাদের বয়স ১৪ থেকে ৬৪, তাদেরকে ল্যাংগুয়েজ এন্ড নলেজ টেস্ট পাস করতে হবে নাগরিকত্ব পেতে হলে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতি বছর গড়ে দুই লাখ আবেদন জমা পড়ে আসছিল নাগরিকত্ব লাভের জন্য। নতুন আইনের কারণে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে নিঃসন্দেহে। ন্যান্সী ক্যারন বলেন, ইমিগ্রেশন মন্ত্রণায় এ জন্য আগাম প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে যাতে করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়। নাগরিকত্ব লাভের আবেদন পত্র যাতে এক বছরের কম সময়ে প্রসেস করা যায় সেই চেষ্টা করা হবে।

সাবেক সিনিয়র ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা, লেখক এবং Canadian Global Affairs Institute এর ফেলো এন্ড্রু গ্রিফিথ বলেন, এটি এখনো সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না নাগরিকত্ব লাভের আবেদন পত্রের এই সংখ্যা বৃদ্ধি সাময়িক না দীর্ঘ সময় ধরে তা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, আমরা চাই লোকজন নাগরিকত্ব লাভ করুক। কারণ কানাডার সঙ্গে একাত্মতা অনুভবের একটি অংশ এই প্রক্রিয়া। এবং এই একাত্মতা অনুভব থেকে লাভবান হবে কানাডার সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন।