বাংলাদেশীদের জন্য বিজনেস বা বিনিয়োগ ক্যাটাগরীতে কানাডা আসার এখন চমৎকার সুযোগ

মার্চ ১১, ২০১৭

কানাডার বাংলাদেশী কমিউনিটিতে একজন সুপরিচিত ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট ওয়াজির হোসেন (মুরাদ)। টরন্টোর বাংলাদেশী অধ্যুষিত ড্যানফোর্থ এলাকায় অবস্থিত আমাজন ইমিগ্রেশন এন্ড লিগ্যাল সার্ভিসেস এর কর্নধার তিনি।  সম্প্রতি তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল এখন কোন ক্যাটাগরীতে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় আসার সুযোগ বেশী। এ বিষয়ে তিনি যে উত্তর দিয়েছেন তা এখানে তুলে ধরা হলো।

প্রশ্ন : বাংলাদেশ থেকে এখন কোন কোন ক্যাটাগরীতে ইমিগ্রেন্ট হয় আসার সুযোগ সবচেয়ে বেশী এবং সহজ?

উত্তর : বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে কানাডা আসার সুযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে Investor, Entrepreneur, Skilled & Non-Skilled category, Temporary Work Visa ইত্যাদি।

প্রশ্ন : স্টুডেন্ট হিসাবে আসার সুযোগ কেমন বাংলাদেশীদের বেলায়?

উত্তর : বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রচুর স্টুডেন্ট কানাডার বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে পড়তে আসেন। স্টুডেন্টরা শান্তি ও সুশৃংখল পরিবেশে এখানে পড়তে পারেন। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজের অনুমতি রয়েছে। যারা সফলভাবে তাদের লেখাপড়া শেষ করেন এবং কাজের ব্যবস্থা করেন তারা পার্মানেন্ট রেসিডেন্সীর জন্য যোগ্য হন।

প্রশ্ন : সব স্টুডেন্টদের বেলায়ই কি IELTS লাগে?

উত্তর : না। আমরা IELTS ছাড়াও কলেজ ইউনিভার্সিটির একসেপ্টেন্স লেটার এর ব্যবস্থা করতে পারি। তবে সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু লিমিটেশন আছে।

প্রশ্ন : স্টুডেন্টদের বেলায় কতটা সময় লাগে ইমিগ্রেশন পেতে এবং কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়?

উত্তর : প্রত্যেকটি ক্যাটাগরীর জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে এবং একটির সঙ্গে অন্যটির মিল নেই। এটি নির্ভর করে একজন স্টুডেন্ট কোন ক্যাটাগরীতে আবেদন করেছেন তার উপর। আর তাদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণের কোন অর্থের প্রয়োজন নেই CIC-র ফি ব্যতিরেকে।

প্রশ্ন : বর্তমানে ফ্যামিলি স্পন্সরশীপ সম্পর্কে একটু বিস্তারিত যদি জানান। অর্থাৎ স্পন্সর এর এলিজিবিলিটি, টোটাল প্রসেসিং টাইম ইত্যাদি সম্পর্কে।

উত্তর : বর্তমানে ফ্যামিলি স্পন্সরশীপ আগের তুলনায় অনেক দ্রুততর করা হয়েছে। কানাডার বাইরে ও ভিতরে উভয় প্রক্রিয়াতেই সমান প্রসেসিং টাইম সাধারণভাবে এক বছর। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ কোন ইনকাম লিমিট নেই।

প্রশ্ন : স্পন্সরশীপের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বাবা-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানীকে কানাডায় আনা যায়। এর প্রক্রিয়াটা কি? বয়সের কোন বিধিনিষেধ আছে কি?

উত্তর : স্পন্সরশীপের এই প্রক্রিয়াটিতে স্থায়ীভাবে কানাডা আসার সুযোগ রয়েছে। এতে সময় লাগে প্রায় ৪ বছর। আবার অস্থায়ীভাবে ‘সুপার ভিসা’র মাধ্যমেও তাদেরকে কানাডায় আনা যায়। সে ক্ষেত্রে সময় লাগে প্রায় ১ মাস। তবে নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় থাকতে হয়। না, বয়সের কোন বিধিনিষেধ নেই এ ক্ষেত্রে।

প্রশ্ন : বাবা-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানী ছাড়া অন্য কোন আত্মীয়কে কি স্পন্সর করা সম্ভব?

উত্তর : উপরোক্ত সম্পর্ক ছাড়াও ডিপেন্ডেন্ট ভাই ও বোনকে স্পন্সর করা সম্ভব। কিন্তু তাদের বয়স অবশ্যই ১৯ এর নিচে হতে হবে এবং সে ক্ষেত্রে পরপর তিন বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় থাকা জরুরী।

প্রশ্ন : বিজনেস বা বিনিয়োগ ক্যাটগরীতে কানাডায় আসার সুযোগ কতখানি এখন বাংলাদেশীদের? একটু বিস্তারিত বলবেন কি?

উত্তর : বাংলাদেশীদের জন্য বিজনেস বা বিনিয়োগ ক্যাটাগরীতে কানাডা আসার এখন চমৎকার সুযোগ। বিভিন্ন প্রভিন্সিয়াল প্রোগ্রামগুলো খুবই সহজ এবং দ্রুত। কুইবেক ইনভেস্টর প্রগ্রাম এর জন্য আমরা কানাডার বিভিন্ন ফিনান্সিয়াল কোম্পানীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আছি। আমরা আমাদের ক্লায়েন্টদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ এর ব্যবস্থা করে থাকি। এছাড়া কিছু প্রভিন্সে কোন এ্যাডভান্স ডিপোজিটের প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র নমিনেশন পাবার পরেই ইনভেস্ট করতে হয়। সব মিলিয়ে কানাডায় ইনভেস্টর এবং এন্টারপ্রেনার প্রোগ্রামগুলো এখন খুবই সহজ এবং অতীতের তুলনায় শিথিল।

প্রশ্ন : বাংলাদেশ থেকে কানাডায় আসার জন্য অনেকেই ঢাকার বিভিন্ন ইমিগ্রেশন ল ফার্মের স্মরণাপন্ন হন। কিন্তু দেখা গেছে এদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতারণার শিকার হন। এ বিষয়ে আপনার পরামর্শ কি?

উত্তর : আমার পরামর্শ হচ্ছে কোন ইমিগ্রেশন ল ফার্মের স্মরণাপন্ন হবার আগে তাদের সম্পর্কে  সম্যক ধারণা নেওয়া প্রয়োজন। তাদের অতীত কার্যাবলী বিশ্লেষণ করে দেখা এবং যাচাই করে নেয়া তারা সত্যিই কোন কানাডিয়ান ল ইমিগ্রেশন ফার্ম কি না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে কোন ফার্ম যখন কোন নতুন অথবা পুরাতন প্রোগ্রামের কথা বলে এবং তা সেল করার চেষ্টা করে তখন তার সত্যতা যাচাই করা। যেমন কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন এর কোন সাইটে এই প্রোগ্রামের কথা বলা হয়েছে কিনা তা জিজ্ঞেস করা এবং প্রয়োজনে লিং এর কপি দেখতে চাওয়া বা সংগ্রহ করা। এখানে আমি একটু বিস্তারিত বলতে চাই Ñ আমাদের কাছে প্রায়ই লোকজন বিভিন্ন প্রোগ্রামের খবর নিতে আসেন এবং তারা এসব প্রোগ্রামের অস্তিত্ব জানতে চান। আবার এদের মধ্যে অনেকেই এসব প্রোগ্রামের জন্য অনেক টাকাও দিয়েছেন বলে জানান। আমাদের তখন সমবেদনা জানানো ছাড়া আর কোন কিছুই করার উপায় থাকে না। কারণ, আমরা ঐ সব প্রোগ্রামের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাইনা। আমাদের ফার্ম সব সময়ই এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করে। আমি মনে করি অনেক মানুষ এতে উপকৃত হন।