কানাডার ডেমোগ্রাফিক পরিবর্তন একটা বিশেষ অবস্থায় পৌঁছে গেছে
পরিবর্তিত এই অবস্থায় ইমিগ্রেন্ট ছাড়া কানাডা অর্থনৈতিক অগ্রগতি অসম্ভব
জুলাই ৯, ২০১৬
প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : জব মার্কেটের উন্নতি ও বিকাশের জন্য কানাডা এখন সম্পূর্ণভাবে ইমিগ্রেন্ট নির্ভর হয়ে পড়েছে। স্ট্যাটিসটিকস কানাডার সর্বশেষ এম্পøয়মেন্ট ডাটা এই তথ্যই দিচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায় গত এক বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত জব মার্কেটে ইমিগ্রেন্টদের সংখ্যা কানাডায় জন্ম নেয়া নাগরিকদের সংখ্যার চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে জব মার্কেটে কানাডায় জন্ম নেয়া নাগরিকদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। খবর হাফিংটন পোস্ট এর।
পাশ্চাত্যের দেশসমূহে একটা প্রবাদবাক্য চালু আছে এই বলে যে, ‘ইমিগ্রেন্টরা আমাদের চাকরী চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে’। এ ক্ষেত্রে এরকমটা মনে করার কোন কারণ নেই। মূলত ব্যাপারটি ঘটছে এই কারণে যে কানাডায় জন্ম নেয়া বয়স্ক লোকেরা ক্রমশ কাজ থেকে অবসরে যাচ্ছেন এবং সেই স্থানগুলো দখল করছেন তরুন ইমিগ্রেন্টরা।
গত এক দশকে ইমিগ্রেন্ট কর্তৃক দখলকৃত চাকুরীর পরিসংখ্যান (প্রতি মে মাসে)। চলতি মে মাসে দেখা গেছে প্রায় ২৫% চাকুরী ইমিগ্রেন্টদের দখলে রয়েছে। এক দশক আগে এই হার ছিল প্রায় ২০%।
স্ট্যাটিসটিক্স কানাডার হিসাবে দেখা যায় গত বছর মে মাসের তুলনায় এ বছরের মে মাসে কানাডায় জন্ম নেয়া নাগরিকদের দখল থেকে ৯৩,৩০০টি জব কমে যায়। অন্যদিকে ইমিগ্রেন্টদের ক্ষেত্রে তা না কমে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধির সংখ্যা ২৬১,০০০।
হিসাবে আরো দেখা যায়, কানাডায় জন্ম নেয়া বয়স্ক নাগরিকের মধ্যে অবসরে যাওয়ার সংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে হারে নতুন কর্মজীবীর সংখ্যা তাদের উত্তরসূরীর মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে না। ফলে একটা শূণ্যতা সৃষ্টি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই পরিস্থিতি এমনটাই ইঙ্গিত করছে যে, কানাডার ডেমোগ্রাফিক বা জনতত্ত্বিক পরিবর্তন একটা বিশেষ অবস্থায় পৌঁছে গেছে। আর এই অবস্থার কারণে এখন ইমিগ্রেন্ট কর্মীবাহিনী ছাড়া কানাডার অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। কানাডায় তরুন এবং যুবক বয়সী ইমিগ্রেন্ট কর্মীর সংখ্যা এখন আগের তুলনায় বেশী।
২০০৭ থেকে ২০১৬। এই সময়ের মধ্যে কানাডায় জন্ম নেয়া কর্মীর সংখ্যা ও ইমিগ্রেন্ট কর্মী সংখ্যার মধ্যে একটি তুলনামূলক চিত্র। চিত্রে দেখা যাচ্ছে প্রতি বছরই ইমিগ্রেন্ট কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। ব্যতিক্রম ছিল শুধু ২০০৯ সালে যখন অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল। ২০১৫ সালেও পরিস্থিতি অনুকুলে ছিল না যখন তেলের বাজারে বিপর্যয় ঘটে।
তবে তেলের বাজারে বিপর্যয় ঘটার কারণে তেল উৎপাদনকারী আলবার্টাসহ অন্যান্য অঞ্চলের জব মার্কেটেও বিপর্যয় ঘটলেও দেখা গেছে ঐ সময়টাতে টরন্টো এবং ভেঙ্গুভারে জব মার্কেট ভাল ছিল। এই শহর দুটিতে কানাডার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ইমিগ্রেন্টদের সংখ্যা বেশী।
তবে উপরে উল্লেখিত তথ্য দেখে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে না যে, কানাডার জব মার্কেটে ইমিগ্রেন্টদের অবস্থা এখন রমরমা। কারণ, আমরা এখনো দেখতে পাচ্ছি গত মে মাসে ইমিগ্রেন্টদের মধ্যে বেকারত্বের হার ছিল ৭.৮%। কানাডায় জন্ম নেয়া কর্মীদের মধ্যে এই হার ছিল ৭.১%। আর কানাডায় যারা নতুন ইমিগ্রেন্ট, বিশেষ করে যারা ৫ বছরেরও কম সময় ধরে আছেন তাদের মধ্যে বেকারত্বের হার আরো বেশী। গত মে মাসে এই হার ছিল ১১.৬%।