কানাডায় দক্ষ অভিবাসীরাও কাজ খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে

অটোয়া – নভেম্বর ৮, ২০১৪: রক্ষণশীল সরকার নতুন অভিবাসীদের জন্য বিদেশী শিক্ষাসনদের স্বীকৃতিদানের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিলেও দক্ষ নবাগতরা সরকারের নিয়োজিত গবেষকদের বলছেন, এমনকি তারা কোন কাজের জন্য যোগ্য বিবেচিত হওয়ার পরও কাজ খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের ‘বিপুল প্রতিবন্ধকতা’র মুখোমুখি হতে হচ্ছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে এনভায়রনিকস রিসার্চ-এর তৈরি করা এক রিপোর্টে সারাদেশে ১২টি ক্ষেত্রের নবাগতরা বলেছেন, অন্যান্য বিষয়গুলো কাজ খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট ও প্রকৌশলীসহ অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ভাষাগত বাধা এবং কোন কোন চাকরির পদের ক্ষেত্রে কানাডীয় অভিজ্ঞতার শর্ত হলো সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসাবে রয়ে গেছে।

রিপোর্টে বলা হয়, নবাগতরা বলছেন যে, তাদের সন্দেহ, কানাডীয় অভিজ্ঞতার শর্ত হলো চাকরিদাতাদের জন্য কানাডায় জন্মগ্রহণকারীদেরকে আনুকূল্য দেয়ার একটি সাংকেতিক পদ্ধতি।

অংশগ্রহণকারীরা কানাডীয় যোগাযোগ বা নেটওয়ার্কের অভাব করেন এবং ‘‘ভাষা ও সাংস্কৃতিক ব্যবধানের কারণে সাধারণ সামাজিক যোগাযোগে অসুবিধার’’ বিষয়টিও উল্লেখ করেন।

তারা এমনটা অনুভব করেন না যে, শিক্ষা সনদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির বিষয়টি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা ছিলো। বিদেশী শিক্ষা সনদের মূল্য নিয়েও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে যা নির্ভর করে তারা কে কোন দেশ থেকে এসেছে তার ওপর।

রিপোর্টে বলা হয়, ‘‘অনেক চীনা অংশগ্রহণকারী বিশ্বাস করেন, চীনে তারা যেসব প্রশিক্ষণ ও কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন কানাডায় সেগুলো সীমিত পর্যায়ে ব্যবহারযোগ্য কারণ তারা অনুভব করেন যে, চীনের সবকিছুই কানাডার চেয়ে এতটাই ভিন্নতর যে, এগুলো প্রযোজ্য হওয়ার কোন উপায়ই নেই।’’

‘‘উল্লেখযোগ্য যে, চীনে কেউ আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করলে তার কানাডায় আইন পেশায় কাজ করার কোনরকম প্রস্তুতিই থাকে না।’’

কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী জেসন কেনির একজন মুখপাত্র বলেন, দক্ষ অভিবাসীরা কেন চাকরি খুঁজে পেতে সমস্যার মুখে পড়ছে তা নির্ধারণ করার জন্যই সরকার এই সমীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

নিক কুলসবার্জেন বলেন, ‘‘এই শরতে এটি একটি বড় ধরণের অগ্রাধিকারের বিষয়।’’

এর আগে চলতি গ্রীষ্মে কেনি প্রদেশগুলোর সঙ্গে একটি চুক্তির কথা ঘোষণা করেন যাতে ১০টি নতুন পেশার জন্য বিদেশী শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি উন্নয়নের কথা বলা হয়। এই ১০টি পেশার মধ্যে ওয়েল্ডিং, কার্পেন্টার ও ইলেক্ট্রিশিয়ানের পেশা রয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, কানাডায় এরই মধ্যে রয়ে গেছে এমন মেধা আরও বেশি ভালোভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে অস্থায়ী বিদেশী কর্মীদের জন্য চাকরির শর্ত শিথিলতর করতে সাহায্য করার লক্ষ্যে ওই পদক্ষেপ নেয়া হয়।

দু’বছর আগে রক্ষণশীল সরকার বিদেশী শিক্ষা সনদ স্বীকৃতির জন্য অর্থ ধার দেয়ার নিয়ম চালু করেন। বিদেশে লেখাপড়া করেছেন এমন পেশাজীবীদেরকে কানাডায় অধিকতর প্রশিক্ষণ গ্রহণের ব্যয় বহনের জন্য তাদেরকে এক হাজার ডলারেরও বেশি অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়।

কিন্তু এনভায়রনিকস-এর সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা এই শিক্ষা সনদের বিষয় নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আরও উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। তারা অভিবাসনের আবেদন প্রক্রিয়াকরণে বিশেষ করে কানাডায় কাজ করার যোগ্যতার ওপর গুরুত্বারোপ করে এমন একটি শিক্ষা বিষয়ক উপাদান যোগ করার সুপারিশ করেন। রিপোর্টে বলা হয়, ‘‘অংশগ্রহণকারীদের দিক থেকে’ তাদের অভিবাসন প্রক্রিয়ায় যত বেশি বিস্তারিত দেয়া হবে আর যত দ্রুত দেয়া হবে ততই ভালো।’’ -দি কানাডিয়ান প্রেস