গত ৮ মাসে কানাডায় রিফিউজি ক্লেইম করেছেন প্রায় ১৩ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী

ইমিগ্রেশন মন্ত্রীর মতে রিফুউজি ক্লেইম করা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা খুবই উদ্বেগজনক

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক॥ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪ : গত আট মাসে প্রায় ১৩ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী কানাডায় রিফিউজি ক্লেইম করেছেন। ইমিগ্রেশন, রিফিউজি এ্যান্ড সিটিজেনশীপ কানাডার সূত্রে এই তথ্য জানা যায়। খবর উদয় রানা/গ্লোবাল নিউজের।

চলতি বছর পহেলা জানুয়ারী থেকে শুরু করে ৩১ আগস্টের মধ্যে কানাডায় মোট ১ লাখ ৮ হাজার ৩৫ জন ব্যক্তি রিফুউজি ক্লেইম করেছেন। এর মধ্যে ১২ হাজার ৯ শ ১৫ জন ক্লেমেন্ট ছিলেন স্টাডি পারমিটে এবং ১ হাজার ৩ শ ১০ জন স্টাডি পারমিট এক্সটেনশনে।

কানাডায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে রিফুউজি ক্লেইমের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৬০০ শতাংশ। ছবি : মাইকেল ইভান্স / সিবিসি

গ্লোবাল নিউজের খবরে বলা হয় ২০১৮ সালে কানাডায় ১ হাজার ৫ শ ১৫ জন শিক্ষার্থী রিফুউজি ক্লেইম করেছিলেন। তার সাথে তুলনা করলে বর্তমানে রিফুউজি ক্লেইমের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৬০০ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রিফুউজি ক্লেইম এর সবচেয়ে বেশী আবেদন জমা পড়েছে এ বছর আগস্ট মাসে। ১ হাজার ৭ শ ৮৫ জন শিক্ষার্থী রিফিউজি ক্লেইম করেছেন এই মাসে।

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য কানাডার একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে আমাদেরকে এটি নিশ্চিত করতে হবে যে এই সিষ্টেমের কোন অপব্যবহার যাতে না হয়। সম্প্রতি জাতি সংঘের সদর দফতরে সফর কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

জাস্টিন ট্রুডো আরো বলেন, আমাদেরকে সঠিকভাবে শনাক্ত করতে হবে কাদের সবচেয়ে বেশী সাহায্যের প্রয়োজন, কে একজন সত্যিকারের আশ্রয়প্রার্থী। সিস্টেম এবিউজ করে কেউ শর্টকাটে পার্মানেন্ট রিসিডেন্সী বা সিটিজেনশীপ পাওয়ার জন্য রিফিউজি ক্লেইম করলে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।

উল্লেখ্য যে, কানাডার ইমিগ্রেশন মন্ত্রী মার্ক মিলার কদিন আগে গ্লোবাল নিউজের সাংবাদিক মার্সিডিস স্টিফেনসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ক্রমবর্ধমান সংখ্যক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডায় প্রবেশের পর এ দেশে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য আশ্রয় দাবি করছে। এই প্রবণতাকে মন্ত্রী ‘উৎকণ্ঠাজন’ বলে অভিহিত করেছেন। মন্ত্রী আরো বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ স্টুডেন্ট ভিসার প্রোগ্রামটিকে ‘কানাডায় ব্যাকডোর এন্ট্রি’ হিসাবে ব্যবহার করছেন। প্রায়শই এটি করা হচ্ছে তাদের টিউশন ফি কমানোর জন্য। এই পরিস্থিতিতে কানাডার বিশ^বিদ্যালয় ও কালেজগুলোকে অবশ্যই তাদের স্ক্রিনিং এবং মনিটরিং প্র্যাকটিসকে উন্নত করতে হবে যাতে কেউ এই সিস্টেমের অপব্যবহার না করতে পারে।

তিনি জানান তার মন্ত্রনালয় এই সমস্যাটি নিয়ে স্টাডি করছে এবং স্টুডেন্ট ভিসা প্রোগ্রামটিতে আরো সংস্কারের বিষয়টি অন্বেষণ করা হচ্ছে।

ইমিগ্রেশন মন্ত্রী মার্ক মিলার আরো বলেন, রিফুউজি ক্লেইম করা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা খুবই উদ্বেগজনক। তাত্বিকভাবে, এই শিক্ষার্থীরা কানাডায় আসেন আর্থিক সক্ষমতা নিয়ে যাতে তারা তাদের টিউশন ফি ও থাকা খাওয়ার খরচ চালাতে পারেন। তাদের টিউশন ফি কানাডিয়ান শিক্ষার্থীদের তুলনায় চারগুণ বেশী। আর দেখা গেছে আন্তর্জাতিক এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা রিফুউজি ক্লেইম করেন তারা তাদের প্রথম শিক্ষা বর্ষেই এই কাজটি করেন। এবং প্রায়শই এমন সব কারণ দেখিয়ে রিফুউজি ক্লেইম করেন যার তেমন কোন বৈধতা থাকে না। ক্লেইম করার অন্যতম একটা কারণ, তাদের টিউশন ফি কমিয়ে কানাডিয়ান শিক্ষার্থীদের সমমানের করা।

ইমিগ্রেশন, রিফিউজি এ্যান্ড সিটিজেনশীপ কানাডা’র একজন মুখপাত্র গ্লোবাল নিউজকে বলেন, কানাডার আইন অনুসারে কেউ এখানে রিফিউজি ক্লেইম করলে তার কেইস হিয়ারিং এর সুযোগ রয়েছে। এটি তার অধিকার। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, কেউ ক্লেইম করলেই কানাডায় থাকার গ্যারান্টি পেয়ে যাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *